USA

কাল কি ঘটবে বাইডেন আর ট্রাম্পের ভাগ্যে?

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাইমারি প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় ভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল মঙ্গলবার ৫ মার্চ। এ দিন ১৫টি অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা ডেমোক্র্যাটিক এবং রিপাবলিকান দলের প্রার্থী বাছাইয়ে অংশ নেবেন। দিনটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ক্যালেন্ডারে ‘সুপার টিউসডে’ হিসেবে পরিচিত।

প্রাইমারিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরো বিজয় অর্জন করে নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে মুখোমুখি হবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।

প্রাইমারিতে দুই প্রধান দলের সমর্থকরা প্রার্থীদের পক্ষে ঘোষিত ডেলিগেট নির্বাচিত করেন। ডেলিগেটরা গ্রীষ্মে দুই দলের জাতীয় কনভেনশনে ভোট দিয়ে প্রার্থী মনোনীত করবেন।

বাইডেন ২০২০ সালে ট্রাম্পকে পরাজিত করেছিলেন। ফলে তিনি ডেমোক্র্যাটিক দলের ‘সুপার টিউসডে’ প্রাইমারিতে শুধুমাত্র প্রতীকী প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হচ্ছেন। কিন্তু তারপরও জাতীয় পর্যায়ের কিছু সাম্প্রতিক জনমত জরিপে বাইডেনকে ট্রাম্প থেকে কয়েক পয়েন্ট পিছিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে বাইডেন পিছিয়ে পড়েছেন। এসব রাজ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভাগ্য নির্ধারিত হতে পারে।

শনিবার ট্রাম্প মিশিগান, আইডাহো এবং মিসৌরি রাজ্যের রিপাবলিকান ভোটে আরো অনেক ডেলিগেট অর্জন করেন। তারা দলের জাতীয় কনভেনশনে প্রার্থী বাছাইয়ে ভোট দেবেন।

মঙ্গলবার ট্রাম্প তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী নিকি হেলির ওপর তার প্রাধান্য পাকাপোক্ত করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। হেলি এর আগে জাতিসঙ্ঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এবং সাউথ ক্যারোলিনা রাজ্যের গভর্নর ছিলেন।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৯১টি চার্জ

ট্রাম্প চারটি ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন, যেখানে তার বিরুদ্ধে মোট ৯১টি অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়েছে। তিনি প্রথম প্রেসিডেন্ট বা সাবেক প্রেসিডেন্ট যার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বিচার প্রক্রিয়ার প্রথমটি তিন সপ্তাহ পড়ে শুরু হওয়ার কথা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে একজন যৌনকর্মীকে তথ্য গোপন রাখার জন্য টাকা দেয়ার কথা তিনি লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু ট্রাম্প এখনো কোন রাজ্যের প্রাইমারিতে হেলির কাছে পরাজিত হননি। সাম্প্রতিক সময় ট্রাম্প হেলির চ্যালেঞ্জ প্রায় পুরোপুরি উপেক্ষা করে বাইডেনের দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন।
শনিবার ভার্জিনিয়া রাজ্যে এক সভায় ট্রাম্প মঙ্গলবারের প্রাইমারিতে এমন বিজয়ের ডাক দেন যেটা, তার ভাষায়, হবে ‘এত বড় ভূমিধ্বস যা কারচুপি করে পাল্টানো যাবে না,’ এবং যা বাইডেনকে একটা ‘বার্তা’ পৌঁছে দেবে।

”আপনারা জানেন, তাদের একটা কথা আছে। তারা বলে, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।’ কোনো এক বিজ্ঞাপন এজেন্সি এই লাইন লিখে দিয়েছে,” ট্রাম্প বলেন। ‘আমি কোনো হুমকি নই। আমি সেই ব্যক্তি যে গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি শেষ করছে।’

‘দেশটা রসাতলে গেছে’

অভিবাসীদের ঠেকাতে নিজেদের পরিকল্পনা দেয়ার জন্য ট্রাম্প এবং বাইডেন যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত পরিদর্শন করার কয়েক দিন পরেই ট্রাম্প বাইডেনকে লক্ষ্য করে তার আক্রমণ পুনরায় শুরু করেন। সেনেটে এক যৌথ গ্রুপের প্রস্তাবিত কঠিন অভিবাসী নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত আইন পাশ করার পক্ষে বাইডেনের আহবান ট্রাম্প এড়িয়ে যান।

তিনি বলেন, ‘স্বীকার করতেই হবে : দেশটা রসাতলে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘১৫ থেকে ১৬ মিলিয়ন লোক ঢুকে পড়েছে, এবং তারা এসেছে জেলখানা আর কারাগার থেকে। তারা এসেছে মানসিক হাসপাতাল আর পাগলাগারদ থেকে। তারা সন্ত্রাসী। তারা মাদক ব্যবসায়ী। আমাদের দেশটা আসলেই পাল্টে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের বন্ধ করতেই হবে। আপনাদের সাহায্য পেলে, আমরা সুপার টিউসডেতে বিশাল জয় পাব।’ তিনি বলেন, ‘আর এই নভেম্বরে, ভার্জিনিয়া ক্রুকেড জো বাইডেনকে বলবে, আপনার চাকরি শেষ। আপনি বরখাস্ত! এখান থেকে বের হয়ে যান! ওয়াইট হাউস থেকে বের হয়ে যান।’

ট্রাম্প নিয়ে হেলি উদ্বিগ্ন

নিকি হেলি শুরুতে দলের প্রাইমারি এবং ককাসে ট্রাম্পের কাছে হারের পর এবং মঙ্গলবার আরো হারের আশঙ্কা সত্ত্বেও রোববার এনবিসি নিউজ চ্যানেলের ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বলেন, প্রতিযোগিতা থেকে সরে যাবার কোনো ইচ্ছা তার নেই।

তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ আমরা প্রতিযোগিতামূলক থাকব, যতক্ষণ দেখাতে পারবো যে এখানে আমাদের একটা জায়গা আছে, ততক্ষণ আমি লড়াই চালিয়ে যাবো।’

রিপাবলিকান দল যাকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবে, তাকে সমর্থন দেয়ার অঙ্গীকার-নামায় হেলি একবার সই করেছিলেন। কিন্তু ট্রাম্প মনোনীত হলে তার ওই অঙ্গীকার রক্ষা করবেন কি না, সে ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট কিছু বলেননি।

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমি যে সিদ্ধান্ত নিতে চাই, সেটাই নিবো।’ তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় বলেছি, ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে আমার গুরুতর উদ্বেগ আছে। জো বাইডেন সম্পর্কে আমার আরো বেশি উদ্বেগ আছে।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button