Trending

যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রথমবারের মতো ৫০০ কোটি ডলার ছাড়াল

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ সালে চীনের পরিষেবা বাণিজ্য স্থিতিশীলভাবে উন্নত হয়েছে। যা একটি নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। জ্ঞানভিত্তিক পরিষেবা বাণিজ্য দ্রুতগতিতে উন্নত হচ্ছে। যা পরিষেবা বাণিজ্য উন্নয়নের নতুন চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ সালে, চীনে পরিষেবা আমদানি ও রপ্তানির মোট পরিমাণ ৬৫৭৫৪৩ কোটি ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। কাঠামোগত দিক থেকে দেখা যায়, এর মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক পরিষেবা বাণিজ্য দ্রুতগতিতে উন্নত হচ্ছে।

বর্তমানে চীনে ১১২টি বৈশিষ্ট্যময় পরিষেবা রপ্তানির ঘাঁটি রয়েছে। এতে সংস্কৃতি, ডিজিটাল সেবা, ভৌগোলিক তথ্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ও ভাষা সেবাসহ মোট ৭টি খাত অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ওয়াং তোং থাং বলেন, চীনের পরিষেবা বাণিজ্য ডিজিটাল উন্নয়ন এবং সবুজ ও নিম্ন-কার্বন উন্নয়নসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগের সম্মুখীন হয়েছে। পরিষেবা খাতের উন্মুক্তকরণ, উদ্ভাবন ও উন্নয়নও দেশের উচ্চ মানের উন্মক্তকরণের জন্য নতুন প্রাণশক্তি যোগাবে বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য যুক্তরাজ্য। সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে দেশটিতে বাংলাদেশ ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানি করেছে। একই সময়ে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশ আমদানি করেছে ৪৫ কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা।

২০২১–২২ অর্থবছরে দেশটিতে বাংলাদেশ ৪৮০ কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানি করেছিল।  

ঢাকা সফররত যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নাইজেল হাডলস্টোনের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ তথ্য জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। আর দ্বিতীয় হচ্ছে জার্মানি। তবে যুক্তরাজ্যে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি রপ্তানি হয়েছে এবারই প্রথম।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশকে পণ্য বৈচিত্র্যকরণে প্রযুক্তি ও বাণিজ্য সম্পর্কিত গবেষণায় সহযোগিতা করার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করার আরও সুযোগ রয়েছে।

টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক, তৃতীয় বৃহত্তম সবজি উৎপাদনকারী, চতুর্থ বৃহত্তম ধান উৎপাদক এবং পঞ্চম বৃহত্তম সুপেয় পানির মৎস্য উৎপাদনকারী দেশ। এ ছাড়া এ দেশে উচ্চ মানের ওষুধ, পাটজাত পণ্য, চামড়া জাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, সিরামিক পণ্য, আসবাবপত্র, খেলনা এবং ইলেকট্রনিক পণ্যসহ অনেক বৈচিত্র্যময় পণ্য উৎপাদন হচ্ছে।

দুই দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে গঠিত যৌথ কার্যদল এরই মধ্যে দুই দফা বৈঠক করেছে এবং শিগগিরই তৃতীয় বৈঠকে বসবে বলে জানান টিপু মুনশি। বাংলাদেশকে বিনিয়োগের উত্তম জায়গা হিসেবে উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে দেশভিত্তিক আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে পারে যুক্তরাজ্য।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হওয়ার পর আরও ছয় বছর বাংলাদেশের জন্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখুক যুক্তরাজ্য।’

যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী নাইজেল হাডলস্টোন বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি বেসরকারি উড়োজাহাজ চলাচল (এভিয়েশন), শিক্ষা এবং প্রতিরক্ষা বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে তা আরও বাড়বে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button