রাখাইনে তীব্র লড়াই, সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দখলে নিল আরাকান আর্মি
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির (এএ) যোদ্ধাদের তীব্র লড়াই চলছে। রোববার রাখাইনের মিনবিয়া শহরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ৩৮০ ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর দখলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে আরাকান আর্মি।
থাইল্যান্ড-ভিত্তিক মিয়ানমারের ইংরেজি দৈনিক ইরাবতির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ইরাবতি বলছে, রাখাইনের ম্রাউক ইউ, কিয়াকতাও ও রাথেডং এলাকায় জান্তা বাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির সদস্যদের লড়াই চলছে।
এক বিবৃতিতে আরাকান আর্মি বলেছে, ‘‘জান্তা সৈন্যরা আর আমাদের সাথে লড়াই করতে পারছেন না। তারা এখন আরও বেশি গোলাবর্ষণ এবং বিমান হামলা করছেন।’’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক ম্রাউক ইউ শহরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ৩৭৭ ও ৫৪০ ব্যাটালিয়ন এবং পুলিশের ৩১ ব্যাটালিয়ন থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। আরাকান আর্মি বলেছে, শনিবার জান্তা বাহিনীর গোলাবর্ষণে ম্রাউক ইউ শহরের চারজন বাসিন্দা নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, রামরি শহরে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জান্তা সৈন্যরা গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালিয়ে আসছেন। তবে শহরটিতে আরাকান আর্মির বিদ্রোহীদের সাথে সেনাবাহিনীর সম্মুখ লড়াইয়ের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে, শনিবার বুথিডং শহরেও উভয়পক্ষের মাঝে তুমুল সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষে জান্তা সৈন্যরা আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আরাকান আর্মি। এ ছাড়া রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তেতে অবস্থিত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ২৩২ ও ৩৪৪ ব্যাটালিয়ন সিত্তে ও মিনবিয়া শহরে গোলাবর্ষণ করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণে মিনবিয়া শহরের খোয়া সোন গ্রামের অন্তত তিন বাসিন্দা গুরুতর আহত হয়েছেন। এর আগে, গত ২৪ জানুয়ারি পাকতাও শহরের দখল নেয় আরাকান আর্মির যোদ্ধারা। এরপর থেকে পাকতাও শহরে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করছেন জান্তা সৈন্যরা।
আরাকান আর্মি বলেছে, শনিবার রাতেও পাকতাও শহরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওয়াই-১২ সামরিক পরিবহন বিমান থেকে বোমা হামলা চালানো হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে দক্ষিণ চিন রাজ্যের পালেতওয়া ও উত্তর রাখাইনে জান্তা বাহিনীর ১৬০টিরও বেশি ঘাঁটির দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি।
রাখাইনের আরাকান আর্মি ও আরও দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধ হয়ে ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামের একটি জোট গঠন করেছে। এই জোটের যোদ্ধারা গত অক্টোবর থেকে মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে অপারেশন-১০২৭ নামে এক অভিযান শুরু করে। তাদের হামলার তীব্রতায় টিকতে না পেরে জান্তা বাহিনীর সেনারা অনেক জায়গা থেকে পালিয়ে যান।