Bangladesh

সংসদে প্রকৃত বিরোধী দল না থাকায় জনপ্রত্যাশা পূরণে ঘাটতি, একচ্ছত্র ক্ষমতা চর্চার ব্যাপকতা সংসদে : টিআইবি

একাদশ জাতীয় সংসদে সরকারি দলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, প্রকৃত বিরোধী দল না থাকা এবং প্রধান বিরোধী দলের কার্যকর অংশগ্রহণের অভাবে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ঘাটতি রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

‘পার্লামেন্টওয়াচ : একাদশ জাতীয় সংসদ; ১ম থেকে ২২তম অধিবেশন (জানুয়ারি ২০১৯-এপ্রিল ২০২৩)’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তুলে ধরেছে সংস্থাটি।

রোববার (১ অক্টোবর) এ প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকারি দলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে সংসদীয় কার্যক্রমে একচ্ছত্র ক্ষমতার চর্চা পরিলক্ষিত হয়েছে।

জাতীয় সংসদের কাছে প্রত্যাশিত ভূমিকা নিশ্চিতে গবেষণা প্রতিবেদনে ১৩ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান। প্রতিবেদনটি উপস্থাপনা করেন টিআইবির রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট রাবেয়া আক্তার কনিকা ও মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান সাখিদার।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন জোটভুক্ত দল হিসেবে সংসদীয় কার্যক্রমে প্রধান বিরোধী দল দ্বৈত ভূমিকা পালন করেছে এবং সংসদকে কার্যকর করে তুলতে বিরোধী দলের শক্তিশালী ভূমিকা পালনে ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। সরকারি দলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিপরীতে প্রধান বিরোধীদলের অবস্থান ছিল প্রান্তিক এবং সরকারকে জবাবদিহি করার ক্ষেত্রেও তাদের ভূমিকা ছিল সার্বিকভাবে গৌণ। ক্ষেত্রবিশেষে প্রধান বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যে অন্যান্য বিরোধী দলের পর্যালোচনা ও সমালোচনা প্রাধান্য পেয়েছে, যা প্রধান বিরোধী দলের দ্বৈত ভূমিকা ও পরিচয়কে আরো প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে।

সংসদীয় কার্যক্রমে বিষয়ভিত্তিক, প্রাসঙ্গিক ও গঠনমূলক আলোচনার পরিবর্তে সরকার ও দলীয় অর্জন ও প্রশংসা এবং প্রতিপক্ষদলের প্রতি আক্রমণাত্মক সমালোচনার প্রাধান্য পেয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদে বিভিন্ন কার্যক্রমে ৭৪৪ ঘণ্টা ১৩ মিনিট সময় ব্যয় হয়েছে, যার মধ্যে জনপ্রতিনিধিত্ব ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা কার্যক্রম মোট সময়ের ২৬.৬% (১৯০ ঘণ্টা, ২৬ মিনিট), রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা মোট সময়ের ২৫.৭% (১৯১ ঘণ্টা, ২৩ মিনিট), বাজেট আলোচনায় ১৪২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট (১৯.২%), আইন প্রণয়ন কার্যক্রমে ১২৪ ঘণ্টা ১৮ মিনিট (১৬.৭%) এবং কিছু বিশেষ কার্যক্রমে ৯ ঘণ্টা ১৭ মিনিট (১.২%) সময় ব্যয় হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির ভাষণে প্রায় চার-পঞ্চমাংশ সময় সরকারের অর্জন বিষয়ক আলোচনাই প্রাধান্য পেয়েছে। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব আলোচনায় সরকারদলীয় সদস্যরা সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করেছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা এবং সরকারের বিভিন্ন অর্জনের প্রশংসায়।

একইভাবে, প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে ৪৮.৭% প্রশ্নকর্তা প্রশ্নের বাইরে অন্যান্য আলোচনা (প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা, দলের প্রশংসা, অন্য দলের সমালোচনা ইত্যাদি) করেন যা প্রশ্ন উত্থাপনে মোট ব্যয়িত সময়ের প্রায় ৮০%।

মন্ত্রীদের প্রশ্নোত্তর পর্বে ৫৬.৭% প্রশ্নকর্তা প্রশ্নের বাইরে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা, দলের প্রশংসা, অন্য দলের সমালোচনা করেন, যা প্রশ্ন উত্থাপনে মোট ব্যয়িত সময়ের প্রায় ৬৫%। অন্যদিকে উত্তর প্রদানের প্রায় ৩৯.৮ শতাংশ ব্যয় হয়েছে উত্তরবহির্ভূত আলোচনায়।

সাধারণ আলোচনায় এককভাবে বঙ্গবন্ধু সংশ্লিষ্ট আলোচনায়ই প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি সময় ব্যয়িত হয়েছে, যা শতাংশের হিসাবে ৪৫.১%।

বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করতে গিয়ে সদস্যরা আত্মপ্রশংসা ও অন্যদলের সমালোচনায় ব্যয় করে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সময়।

পাশাপাশি, জনপ্রতিনিধিত্বমূলক কার্যক্রমসমূহে তুলনামূলক কম গুরুত্ব প্রদান (কার্যক্রম স্থগিত রাখা, চলমান জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ অনালোচিত থাকা ইত্যাদি) করা হয়েছে এবং সার্বিকভাবে বিগত সংসদগুলোর চেয়ে (নবম ও দশম সংসদ) ব্যয়িত সময় ও অংশগ্রহণের হার হ্রাস পেয়েছে।

আইন প্রণয়ন বা বিল পাসের ক্ষেত্রে পূর্বের সংসদগুলোর চেয়ে গড় সময় বৃদ্ধি পেলেও সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও গঠনমূলক বিতর্কের ঘাটতি সুস্পষ্ট ছিল। আইন প্রণয়নে সরকারি দলের অধিকাংশ সদস্যের অংশগ্রহণ শুধুমাত্র বিলের পক্ষে ভোট দেয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। আইন প্রণয়ন কার্যক্রমে ব্যয়িত সময় প্রায় ১৬.৭ শতাংশ।

এখানে উল্লেখ্য, ২০১৯-২০-এ যুক্তরাজ্যে এই হার ছিল প্রায় ৪৯.৩ শতাংশ এবং ২০১৮-১৯-এ ভারতের ১৭তম লোকসভায় এই হার ছিল ৪৫.০ শতাংশ।

বাজেট কার্যক্রমে ব্যয়িত সময়ের ৮০.১ শতাংশ সময় ব্যয় হয় বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায়, ১৫.৮ শতাংশ সময় ব্যয় হয় মঞ্জুরি দাবির ওপর আলোচনায় এবং ৪.১ শতাংশ সময় ব্যয় হয় বাজেট উপস্থাপনে। বাজেট আলোচনায় ব্যয়িত সময়ের ৩৫.৭ শতাংশ সময় ব্যয় হয় বাজেট সংক্রান্ত আলোচনায় এবং বাকি সময় ব্যয় হয় অন্যান্য আলোচনা, দলের প্রশংসা এবং অন্য দলের সমালোচনায়।

গবেষণায় দেখা যায়, সংসদীয় কার্যক্রমে সদস্যদের অনুপস্থিতি, যথাযথ গুরুত্ব সহকারে অংশগ্রহণ না করা, প্রতিপক্ষের মতামত প্রকাশে বিঘ্ন ঘটনো ও মতামত গ্রহণ না করার প্রবণতার কারণে কার্যক্রমসমূহের কার্যকারিতা হ্রাস পেয়েছে। স্থায়ী কমিটিগুলোর নিয়মিত বৈঠকের ঘাটতি বিশেষত, দেশের জরুরি পরিস্থিতিতেও সংশ্লিষ্ট কমিটিসমূহের বৈঠক করার প্রতি গুরুত্বহীনতাও পরিলক্ষিত হয়েছে।

বিধি অনুযায়ী প্রত্যেক কমিটির প্রতিমাসে ন্যূনতম একটি করে সভা করার নিয়ম থাকলেও, কোনো কমিটিই সে নিয়ম পালন করেনি। ন্যূনতম নির্ধারিত সভা সংখ্যার ৬৬.১% সভাই অনুষ্ঠিত হয়নি। করোনাকালে (মার্চ ২০২০-আগস্ট ২০২১) একটিও সভা করেনি অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। করোনাকালে প্রথম ১৮ মাসের ১৩ মাসই কোন সভা করেনি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি।

এছাড়া, সংসদে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে গৃহীত পদক্ষেপ, অর্জিত লক্ষ্য, চ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে সুনির্দিষ্ট আলোচনার ঘাটতি ছিল। পাশাপাশি সংসদ সদস্যদের একে অপরের প্রতি এবং সার্বিকভাবে সুশীল সমাজের প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে বিধিবহির্ভূত আচরণ লক্ষ্য করা যায়।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কোনো কোনো নারী সদস্যদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক এবং আপত্তিকর শব্দের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। বিরোধী দলের তুলনায় সরকারি দলের সদস্যদের ক্ষেত্রে এই ব্যত্যয় অধিকমাত্রায় পরিলক্ষিত হয়েছে। সদস্যদের অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার বন্ধে সদস্যদের সতর্ক করা বা শব্দ এক্সপাঞ্জ করার ক্ষেত্রে স্পিকারকে নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে।

এছাড়া, সংসদে ও কমিটিতে সদস্যদের উপস্থিতি, সংসদীয় কার্যক্রমের বিবরণী, সংসদ সদস্যদের সম্পদের হালনাগাদ তথ্য, সংসদীয় কার্যক্রমের কার্যবিবরণী ইত্যাদি স্বপ্রণোদিতভাবে উন্মুক্ত করার উদ্যোগেরও ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, কোরাম সংকটে মোট ৫৪ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট ব্যয় হয়, যা সংসদ কার্যক্রমের মোট ব্যয়িত সময়ের ৬.৫%। কার্যদিবস প্রতি গড়ে ১৪ মিনিট ০৮ সেকেন্ড ব্যয় হয়। ৮৪% কার্যদিবসে নিধার্রিত সময় থেকে বিলম্বে অধিবেশন শুরু হয় এবং ১০০% কার্যদিবসে বিরতির পর নিধার্রিত সময় থেকে বিলম্বে অধিবেশন শুরু হয়।

সংসদ পরিচালনার প্রতি মিনিটের গড় অর্থমূল্য প্রায় ২ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৪ টাকা। এই হিসাবে কোরাম সংকটে ব্যয়িত সময়ের প্রাক্কলিত অর্থমূল্য প্রায় ৮৯ কোটি ২৮ লাখ ৮ হাজার ৭৭৯ টাকা।

টিআইবি জানিয়েছে, গবেষণায় গুণবাচক ও পরিমাণবাচক উভয় ধরনের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। সরাসরি সম্প্রচারিত সংসদ কার্যক্রমের রেকর্ড এবং মুখ্য তথ্যদাতাদের (সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা এবং গবেষক) সাক্ষাৎকার গ্রহণ, সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত অধিবেশনের সংক্ষিপ্ত কার্যবিবরণী ও কমিটি প্রতিবেদন, সরকারি গেজেট, প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন, বই ও প্রবন্ধ এবং সংবাদপত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। একইসাথে, জানুয়ারি ২০১৯-এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রথম থেকে ২২তম সংসদ অধিবেশনের প্রায় ৭৪৪ ঘণ্টা রেকর্ডিংয়ের অনুলিপি ও নথিপত্র থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশক ও বিষয়বস্তুভিত্তিক ডাটাবেজ প্রস্তুত করে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করা হয়েছে।

জাতীয় সংসদে প্রকৃত বিরোধী দলের অভাব, প্রধান বিরোধী দলের ‘আত্মপরিচয়ের সংকট’ এবং এর সাথে সরকারি দলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও একচ্ছত্র ভূমিকার কারণে জাতীয় সংসদ জনগনের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সংসদের মূল ভূমিকা- আইন প্রণয়ন, জনগণের প্রতিনিধিত্ব ও জনগণের পক্ষে সরকারের জবাদিহিতা নিশ্চিত করা। আনুষ্ঠানিকভাবে এ ভূমিকা পালনের সুযোগ থাকলেও, বাস্তবে ব্যাপক ঘাটতি উঠে এসেছে গবেষণায়।

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, একাদশ জাতীয় সংসদে একটি আইন পাস হতে আন্তর্জাতিক চর্চার অনেক কম সময় লেগেছে। আইন প্রণয়নে কম সময় দেয়ার অর্থ হচ্ছে চুলচেরা বিশ্লেষণে ঘাটতি রয়ে গেছে। বিশেষ করে আইন কতটুকু জনকল্যাণমুখী হলো, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন থেকে সাইবার নিরাপত্তা আইনের রূপান্তর যার প্রকট উদাহরণ। অন্যদিকে, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কার্যক্রমে ব্যাপক দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। সংসদ কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী প্রতি মাসে একটি বৈঠক করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও, সবগুলো কমিটিগুলো তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রশ্নোত্তরে ও বাজেট আলোচনার বিষয়বস্তুর বাইরে অপ্রাসঙ্গিকভাবে সরকারি সাফল্য ও প্রশংসা এবং প্রতিপক্ষের সমালোচনায় সংসদের সময় ব্যয় হয়েছে কিন্তু জবাবদিহিতার উপাদান অনুপস্থিত থেকেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা হলেও এ বিষয়ে জবাবদিহিতা বা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।’

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও সংসদের প্রত্যাশিত ভূমিকা নিশ্চিতের জন্য সংসদকে কার্যকর ও জনপ্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের বিষয়ে জোর দিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে জনমনে উদ্বেগ রয়েছে। কার্যকর সংসদ ও জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন, সরকার ও অন্যান্য অংশীজন যেমন- রাজনৈতিক দল, আইন-শৃখলা বাহিনী ও প্রশাসনসহ সবাইকে স্বার্থের দ্বন্দ্ব মুক্ত থেকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে।’

জাতীয় সংসদের প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন নিশ্চিতে ১৩ দফা সুপারিশ করেছে টিআইবি। এর মধ্যে রয়েছে- জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাস্তবিক অর্থে অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা ও বিরোধী দলের শক্তিশালী ভূমিকা পালন নিশ্চিত করা; সদস্যদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের জন্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করা; সরকারি দলের একচ্ছত্র সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার পরিবর্তে বিরোধী দলের কার্যকর অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করা; সংসদ সদস্যদের আচরণ ও কার্যক্রম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা অনুসারে ‘সংসদ সদস্য আচরণ আইন’ প্রণয়ন করা; সংসদে অধিকতর শৃঙ্খলা রক্ষাসহ অসংসদীয় ভাষার ব্যবহার বন্ধে স্পিকারকে জোরালো ভূমিকা নেয়া; অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা এবং অহেতুক প্রশংসা ও সমালোচনা না করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে কার্যকর অংশগ্রহণ ও ফলপ্রসূ আলোচনা নিশ্চিত করতে দলীয় প্রধান ও হুইপের জোরালো ভূমিকা পালন করা ইত্যাদি।

৩ দফা সুপারিশ

সংসদ আরও বেশি কার্যকর করতে গবেষণায় পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে টিআইবি ১৩ দফা সুপারিশ উত্থাপন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে– জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাস্তবিক অর্থে অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে; বিরোধী দলের শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে; সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের জন্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হবে; যেখানে নিজ দলের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট এবং বাজেট ছাড়া অন্য সব ক্ষেত্রে সদস্যদের নিজ বিবেচনা অনুযায়ী ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকবে ইত্যাদি।

টিআইবির প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, ভারতের লোকসভা এবং যুক্তরাজ্যের সংসদের সঙ্গে বাংলাদেশের সংসদের তুলনা করা ঠিক হবে না। কারণ, তাদের দেশ অনেক বড়। বিশ্বের রাজনীতি নিয়ে তাদের সংসদে আলোচনা হয়। আমরা আমাদের প্রয়োজন নিয়ে সংসদে আলোচনা করি।

সরকারি দলের সদস্যদের আইন প্রণয়নে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ কোনো বাধা নয়– এমন মন্তব্য করে চিফ হুইপ বলেন, মন্ত্রিসভার সদস্য ছাড়া সবার আলোচনায় স্বাধীনভাবে অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এমনকি সরকারি দলের এমপিরা বিলের ওপর সংশোধনী দিচ্ছেন, তা গ্রহণও হচ্ছে। বেসরকারি বিল উত্থাপনের সুযোগও রয়েছে।

কোরাম সংকটের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ে সংসদ শুরু হচ্ছে। কোরামের কারণে এক দিনের জন্যও দেরিতে অধিবেশন শুরু হয়নি। তবে নামাজের বিরতির পর শুরুর ক্ষেত্রে কখনও দেরি হতে পারে।
সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলোর মাসে ন্যূনতম একটি বৈঠক না হওয়ার বিষয়ে চিফ হুইপ বলেন, করোনাকালে বাপ মরলেও মানুষ মাটি দিতে ঘর থেকে বের হতে চায়নি। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও এক-তৃতীয়াংশ সদস্য নিয়ে পালাক্রমে করোনা পরীক্ষা করে অধিবেশন চালানো হয়েছে। দুই বছর তো মানুষ ঘর থেকে বের হতেই চায়নি। তাই আগের দুই সংসদের চেয়ে এবার কমিটির বৈঠক কম হলে তাতে দোষের কিছু দেখি না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
slotgacor
bacan4d rtp
bacan4d
totoslotgacor
slot gacor
TOTO GACOR
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
xx1toto
bacansport
bacan4d
toto slot
situs toto
slot gacor
Toto Slot
slot maxwin
slot demo