সেই আওয়ামী লীগ নেত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি
![](https://miprobashi.com/wp-content/uploads/2023/07/03-07-2023-P1-4.jpg)
সাংবাদিক নাদিম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকম ও ৭১ টিভির জামালপুর প্রতিনিধি গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যাকান্ডে বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহীনা বেগমকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, সাংবাদিক নাদিম হত্যাকান্ডের পেছনে ‘মাস্টারমাইন্ড’ কে তা জানতে সেই আওয়ামী লীগ নেত্রীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে। সেই সঙ্গে তারা নাদিম হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখারও অনুরোধ জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, সাংবাদিক নাদিম হত্যাকান্ড পরিকল্পিত। হত্যাকান্ডের সঙ্গে শুধু চেয়ারম্যানই নন, আরও অনেকে জড়িত। একই সঙ্গে হত্যাকান্ডের নির্দেশদাতাকেও খুঁজে বের করতে হবে। তিনি আরও বলেন, নাদিম হত্যার দুই মাস আগেও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহিনা বেগমের সন্ত্রাসী বাহিনী তার ওপর হামলা করেছিল। ওই সময় নাদিম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জীবনের নিরাপত্তাও চেয়েছেন। আমরা মনে করি, এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে শাহিনা বেগমও জড়িত। তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে খুনের আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। একই সঙ্গে এ খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
এই সাংবাদিক নেতা আরও বলেন, ২২ জুলাই সংগঠনের এজিএম রয়েছে। সেখানে সারা দেশ থেকে সাংবাদিক নেতারা আসবেন। ওই সভায় সাংবাদিক নাদিম হত্যার বিষয়টি আলোচনায় নিয়ে আসা হবে। সেখান থেকে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি মোরসালীন নোমানী বলেন, সাংবাদিক নাদিম হত্যাকান্ডের সব ডকুমেন্টস রয়েছে। মূল আসামি চেয়ারম্যান বাবুসহ অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।
জানা যায়, যুদ্ধাপরাধী বাবুল চিশতি এবং যুদ্ধাপরাধীর সন্তানসহ বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহীনা বেগমের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে চাঞ্চল্যকর সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন সাংবাদিক নাদিম। সে সময়েও তার ওপর হামলা করা হয়। সেই হামলার পেছনে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহিনা বেগম ছিলেন বলে সাংবাদিক নাদিমও নিশ্চিত করেছেন। তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তিনি বলেছেন, হামলার ঘটনায় তিনি পাঁচজনের নামে থানায় অভিযোগ করেছেন। সেখানে প্রধান আসামি হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহিনা বেগমের নাম উল্লেখ করা হয়। তিনি ক্ষমতাশালী হওয়ায় থানা অভিযোগ আমলে নেবে কি না সন্দিহান। অভিযোগ দিয়ে নিজেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করেন এই সাংবাদিক।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুন হামলার শিকার নাদিমের মৃত্যু হয় ১৫ জুন দুপুরে। গত ১৭ জুন তার স্ত্রী মনিরা বেগম চেয়ারম্যান বাবুকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার দ্বিতীয় আসামি বাবুর ছেলে ফাহিম ফয়সাল রিফাত। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বাবুসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।