হাউছিদের অবরোধে ২ মাসে ইসরাইলের ক্ষতি ৩ বিলিয়ন ডলার
লোহিত সাগরে ইয়েমেনভিত্তিক হাউছিদের অবরোধের ফলে ইসরাইলের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপকে সংযোগকারী এই গুরুত্বপূর্ণ নৌপথকে হাউছিরা ঘেরাও করে রাখার ফলে ইসরাইলি অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। গত দুই মাসেই তাদের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন বিলিয়ন ডলার।
এই অবরোধের প্রভাব সুয়েজ খালের ওপরও পড়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই শিপিং লাইনটি দিয়ে এখন জাহাজ চলাচল বাধার মুখে পড়েছে। উল্লেখ্য, এই খাল দিয়ে প্রতি বছর বিশ্বের ১২ ভাগ জাহাজ চলাচল করে।
হাউছিদের অবরোধের কারণে খুব কম জাহাজই লোহিত সাগরে প্রবেশ করতে পারছে। ফলে সুয়েজ খালের মাধ্যমে জাহাজ চলাচল ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
ইসরাইল এবং অন্য অনেক দেশের আমদানি ও রফতানি এই খালের ওপর ওপর নির্ভরশীল। ফলে তাদের বাণিজ্য বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছে।
এই অবরোধের প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতেও পড়েছে। এর ফলে এক দিকে জাহাজ চলাচলে ব্যয় ও বিপদ বেড়েছে, অন্য দিকে বিভিন্ন বন্দরে বিলম্ব এবং ট্রাফিক জ্যামের সৃষ্টি হচ্ছে।
হাউছিদের অবরোধের কারণে অনিশ্চয়তা এবং ঝুঁকি সৃষ্টি হওয়ায় জাহাজ ব্যবসায় শ্রম, জ্বালানি ও বীমা ব্যয় বাড়াতে হচ্ছে।
কোনো কোনো কোম্পানি আরো ব্যয়বহুল ও সময়ক্ষেপণমূলক রুট কোপ অব গুড হোপ দিয়ে জাহাজ চালাচ্ছে। এতে হাজার হাজার মাইল বেশি পথ পাড়ি দিতে হওয়ার পাশাপাশি সময়ও লাগছে কয়েক সপ্তাহ বেশি।
এতে করে জাহাজ চলাচল শিল্পের লাভ, প্রতিযোগিতা এবং সময়মতো পণ্য পৌঁছানো এবং মান রক্ষার কাজগুলোতে প্রভাব ফেলছে।
এই অবরোধে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে ইসরাইল। তাদের বড় একটি বাণিজ্য হতো লোহিত সাগর দিয়ে। এখান দিয়ে তাদের জাহাজগুলো ইলাত বন্দরে চলাচল করত। এটাই লোহিত সাগরে একমাত্র ইসরাইলি বন্দর। এখানে বাণিজ্য কমে গেছে ৮৫ ভাগ।
মূল্য বৃদ্ধি, সরবরাহ হ্রাস, চাকরি হারানো- ইত্যাদি মিলে এটি ইসরাইলের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।
তাছাড়া হাউছিরা ঘোষণা করেছে, ইসরাইল থেকে বা ইসরাইলগামী যেকোনো জাহাজে তারা হামলা চালাবে। এর ফলে পরিস্থিতি আরো জটিল ও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
হাউছিরা বলছে, গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধ না হলে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করবে না। তারা গাজায় আরো বেশি খাবার ও ওষুধ পাঠানোর দাবিও করছে।
তাদের দমন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থানে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু তাতে অবরোধ শিথিল হওয়ার কোনো নমুনা দেখা যায়নি।
অবরোধের ফলে চলমান হুমকি এবং জটিলতার কারণে এই রুট দিয়ে ভবিষ্যতের জাহাজ চলাচল প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে।