International

৪৫ বছরে ইরানের যত শিল্প উন্নয়ন

ইরানের উচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন অর্থনৈতিক খাতগুলির মধ্যে একটি শিল্প খাত। বিশেষ করে সিমেন্ট, ইস্পাত, পেট্রোকেমিক্যাল এবং জ্বালানি। পাহলভি যুগের শেষ দিকে ইরানের সিমেন্ট উৎপাদনের পরিমাণ ছিল বছরে ৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন (এমটি)। ১৯৮০-এর দশকে বছরে সিমেন্ট উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন।

আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে এই শিল্পের ব্যাপক বিকাশ শুরু হয় এবং ১৯৯৩ সালে দেশটিতে সংশ্লিষ্ট পণ্যের উৎপাদন ৭০ মিলিয়ন মেট্রিক টনের রেকর্ড গড়ে।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান মতে, সিমেন্ট এবং ক্লিংকারের ক্ষেত্রে ইরানে প্রায় ৭৬টি উৎপাদনকারী সংস্থা রয়েছে। এসব কোম্পানির উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে প্রায় ৮৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন। সিমেন্ট শিল্পের সব ধরনের কাঁচামাল অভ্যন্তরীণভাবে সরবরাহ করা হয়।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ২০১২ সালে চতুর্থ এবং ২০১৫ সালে সিমেন্ট শিল্পে বিশ্বে ষষ্ঠ তম স্থান অধিকার করে। বর্তমানে এক্ষেত্রে ইরান বিশ্বের অষ্টম স্থানে রয়েছে। এই অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে ইরানের চেয়ে কেবল তুরস্ক আরও ভালো অবস্থানে রয়েছে।

ইস্পাত শিল্পকে প্রতিটি দেশে অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মূল্যায়নের মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এমনকি মাথাপিছু ইস্পাত ব্যবহারকে একটি দেশ শিল্প সূচক কতটা ভালো করছে তার মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসেম্বলির তথ্যমতে, বিপ্লবের আগে ইরানের বার্ষিক অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন ছিল ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন। কিন্তু ২০২০ সালে এটির উৎপাদন ২৯ মিলিয়ন মেট্রিক টনে পৌঁছে।

ইরানের অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন গত ৪০ বছরে ১৭ গুণ বেড়েছে। বিপ্লবের আগে বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদনে ইরানের অংশ ছিল ০ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশে।

পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প এমন একটি শিল্প যা মহান শক্তির কেন্দ্রবিন্দুও। ২০১৯ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যথাক্রমে পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যের সর্বোচ্চ বিক্রয় হয়।

উদীয়মান এশিয়ান দেশগুলি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের পাশাপাশি পেট্রোকেমিক্যাল বিক্রয়ের ক্ষেত্রে শীর্ষ দশে স্থান পেয়েছে৷ বিপ্লবের আগে ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদন ছিল বছরে ১ দশমিক ৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন।

ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের পর পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নেওয়া হয়। আরোপিত যুদ্ধ ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে বর্তমানে ৭০টি পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্স কাজ করছে। বর্তমানে ইরান পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদন সক্ষমতার ২৭ শতাংশ উপভোগ করে।

ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প রপ্তানিমুখী এবং দেশের তেল বহির্ভূত রপ্তানিতে ২১ শতাংশ অবদান রয়েছে।

জ্বালানি খাত, বিশেষ করে তেল ও গ্যাস ইরানের অর্থনীতির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ। কারণ দেশের রাজস্বের সিংহভাগ আসে এই খাত থেকে। এই খাতে ভেনেজুয়েলা, সৌদি আরব ও কানাডার পর চতুর্থ স্থানে রয়েছে ইরান।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button