Science & Tech

৮ দিনের জন্য মহাকাশে গিয়েছিলেন, ৮০ দিন পরেও ফেরা হলো না

চলতি বছরে ৫ জুন নাসার তরফে আমেরিকার ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস স্টেশন থেকে মহাকাশযান বোয়িং সিএসটি-১০০ স্টারলাইনার ক্যাপস্যুলে চড়ে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর সঙ্গী বুচ উইলমোর। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আনন্দে হাততালি দিতে দিতে  স্পেস স্টেশনে ঢুকছেন তিনি। তার পর থেকে ৮০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও স্পেস স্টেশনে আটকে রয়েছেন   সুনীতা এবং  তাঁর সহ-অভিযাত্রী উইলমোর। তাঁদের মহাকাশযান বোয়িং স্টারলাইনারকে ঘিরেই ঘনিয়েছে বিতর্ক। পৃথিবীতে কবে ফিরবেন তাঁরা তা এখনও অনিশ্চিত। তাই খানিকটা উদ্বেগেই রয়েছে মহাকাশচারী মহল। উদ্বেগের কারণও রয়েছে যথেষ্ট। কারণ স্টারলাইনার ক্যাপস্যুলে সর্বাধিক ৯০ দিন পর্যন্ত মহাকাশচারীরা স্পেস স্টেশনে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছিল নাসা। তারপর শেষ হয়ে যায় ব্যাটারি।

বিজ্ঞাপন হিসাব মতো নাসার হাতে দিন সংখ্যা ক্রমশই ফুরিয়ে আসছে। যদিও নাসার তরফে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে নিরাপদেই আছেন সুনীতারা। আজ এজেন্সি পর্যায়ে একটি রিভিউ মিটিং হবে নাসায়। তারপরই জানা যাবে সুনীতাদের পৃথিবীতে ফেরা নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

 স্টারলাইনার স্পেসক্র্যাফ্টে হিলিয়াম লিক করছে বলে ইঞ্জিনিয়াররা জানান। স্টারলাইনারের এই সমস্যাগুলি সুনীতা-বুচের পৃথিবীতে ফেরার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত স্টারলাইনারের যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামতিতে কাজ করছে নাসা। এটিই ছিল বোয়িং-এর প্রথম মহাকাশচারী নিয়ে যাত্রা। তাছাড়া, সাধারণ মানুষ যাতে বেসরকারি উদ্যোগে বাণিজ্যিক ভাবে মহাকাশে বেড়াতে যেতে পারে, সেই পরিকল্পনারও প্রথম ধাপ এই বোয়িং। অভিযোগ,  স্টারলাইনার ওড়ার আগেও রকেটে হিলিয়াম লিকেজের সমস্যা ধরা পড়েছিল। তখনই কেন মহাকাশযানটিকে ত্রুটিমুক্ত করা হয়নি, কেন স্থগিত করা হয়নি এই উড়ান, সে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিশ্বজুড়ে। নাসা জানিয়েছে, স্টারলাইনার তথা সুনীতাদের কীভাবে ফেরানো যেতে পারে তার জন্য ইতিমধ্যে ১ লক্ষেরও বেশি মডেল-টেস্ট করেছে নাসা। তবে কোনও ভাবেই কোনও সুরাহা মিলছে না।

জানা গেছে, ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্স-এর সঙ্গে যৌথভাবে একটি মহাকাশযান তৈরি করছে নাসা। সেটাই মহাকাশে পাঠিয়ে সুনীতাদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।  নাসা এবং স্পেস এক্স-এর যৌথ এই মিশনটির নাম দেওয়া হয়েছে ক্র-৯। চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে ওই যানে দুজনকে মহাকাশে পাঠানো হবে। ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন থেকে সুনীতাদের নিয়ে সেটি আবার পৃথিবীর দিকে ফিরবে। এই মিশন ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হতে পারে। এই আবহে, মহাকাশে দীর্ঘদিন ধরে মহাকাশচারীরা আটকে থাকায় তাঁদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, নির্ধারিত সময়ের বেশি দিন মহাকাশে থাকার দরুন সুনীতা ও বুচের হাড়ের ক্ষয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। মহাকাশে মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতিকর বিকিরণের সংস্পর্শে আসেন মহাকাশচারীরা। ফলে দীর্ঘদিন পর পৃথিবীতে ফিরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। প্রায়শই জ্ঞান হারান, মাথা ঘোরে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি শূন্য জায়গায় দীর্ঘদিন থাকার ফলে হাড়গুলির কর্মক্ষমতাও হারায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পেশিও।  সবমিলিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে মহাকাশচারী মহলে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
toto gacor Toto Gacor bacan4d slot toto casino slot slot gacor bacantoto totogacorslot Toto gacor bacan4d login slotgacor bacan4d bacan4d toto Slot Gacor toto 4d bacan4d toto slot bacan4d slot gacor