Hot

৯০ টাকার স্যালাইন দোকানে হয়ে যায় ৪০০ টাকা

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত বাবাকে নিয়ে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় আসেন মেহেন্দিগঞ্জের পাতারহাটের আবুল হোসেন। বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করান সকাল পৌনে ৮টায়। 

আবুল হোসেন জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীকে ভর্তির পর নরমাল স্যালাইন দিতে হয়। কিন্তু হাসপাতাল থেকে তাঁকে বলা হয়, রোগী ভর্তির ২৪ ঘণ্টা পর স্যালাইন মিলবে। শেষে বিকেলে আবুল হোসেন একটি স্যালাইন কিনে আনলে সেটি তাঁর বাবাকে দেওয়া হয়।

শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে আবুল হোসেনের বাবার মতো ভর্তি অন্য ডেঙ্গু রোগীদেরও প্রয়োজন অনুযায়ী স্যালাইন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ হাসপাতালে স্যালাইনের সরবরাহ সংকট। কোনো কোনো ডেঙ্গু রোগীকে এক দিনে চারটি স্যালাইন দিতে হয়।

কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে একটি বা দুটি স্যালাইন। চাহিদার বাকিটা বাইরের ওষুধের দোকান (ফার্মেসি) থেকে রোগীর স্বজনদের কিনতে হচ্ছে। শুধু হাসপাতালে নয়, ফার্মেসিতেও স্যালাইনের সংকট রয়েছে বলে ফার্মেসির লোকজন জানিয়েছেন। আর এই সুযোগে ফার্মেসিগুলো একটি স্যালাইন তিন-চার গুণ বেশি দামে বিক্রি করছে।

গতকাল শনিবার হাসপাতালে ভর্তি একাধিক রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীকে স্যালাইন দিতে হয়। শেবাচিম হাসপাতালে সেটির সরবরাহ নেই বলে সেবিকারা বাইরের দোকান থেকে স্যালাইন কিনে আনতে বলেন। একটি স্যালাইনের দাম ৯০ টাকা, কিন্তু বাইরের ফার্মেসি থেকে তা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তাঁরা দিনে দুটি স্যালাইন ৭০০ টাকা দিয়ে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে গরিব রোগীরা পড়েছেন বিপাকে।

আবুল হোসেন বলেন, ‘সেবিকারা (নার্স) বলেছেন বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে আনতে হবে। বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার তিন দিনে তিন ব্যাগ স্যালাইন কিনে এনে দিয়েছি। আর হাসপাতাল থেকে শুক্রবার এক ব্যাগ এবং শনিবার (গতকাল) দুই ব্যাগ স্যালাইন দেওয়া হয়েছে বাবাকে।’

তিনি জানান, প্রতি ব্যাগ স্যালাইন ৩৫০ টাকায় কিনেছেন। আরেকজনের সঙ্গে কেনায় জোড়া ৭০০ টাকা পড়েছে। শুধু একটা কিনলে দাম আরো বেশি পড়ত।

রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে ওষুধসহ সব সেবা বিনা মূল্যে পাওয়ার কথা। কিন্তু শেবাচিম হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের স্যালাইন কিনে আনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। বরিশাল নগরের ওষুধের দোকানে স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রায় চার গুণ বেশি দামে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে রোগীর স্বজনরা।

শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘স্যালাইন নিয়ে সাময়িক একটা সমস্যা হয়েছিল। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে স্যালাইনের চাহিদা পাঠানো থাকলেও তা আসছে প্রয়োজনের তুলনায় কম। হাসপাতালে চাহিদার তুলনায় অর্ধেক স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে। তাই একটু সমস্যা হচ্ছে।’

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘বেসরকারিভাবে হয়তো স্যালাইনের সংকট হতে পারে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে সংকট থাকার কথা নয়। রোগী বাড়ার কারণে হয়তো একটু সমস্যা হতে পারে। আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি। সমস্যা দ্রুত কেটে যাবে।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button