Bangladesh

অভ্যন্তরীণ পর্যটক বাড়লেও সাড়া মিলছে না বিদেশীদের, ফলে অর্থনৈতিক বড় অর্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ।

দেশে অভ্যন্তরীণ পর্যটক বাড়লেও সাড়া মিলছে না বিদেশীদের। ফলে ঝুঁকি কাটছে না সম্ভাবনার এ শিল্পে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে পর্যটক আকৃষ্ট করার মতো সব থাকলেও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে বারবার পিছিয়ে পড়ছে এ খাত। ফলে অর্থনৈতিক বড় অর্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যটনের সবই বাংলাদেশে বিদ্যমান আছে। এর মধ্যে অন্যতম সমদ্র সৈকত কক্সবাজার, পৃথিবীর একক বৃহত্তম জীববৈচিত্র্য ভরপুর ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন, একই সৈকত থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার স্থান কুয়াকাটা, ভোলার চরফ্যাশনে জ্যাকব টাওয়ার, কুকরী মুকরী ও তাড়–য়া সৈকত। ‘দুটি পাতা-একটি কুঁঁড়ি’র সিলেট, স্বচ্ছ জলরাশির লালাখাল, পাথর জলের নয়নাভিরাম জাফলং ও বিছনাকান্দি, পাংথুমাই ঝরনা, রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, হাকালুকি, কানাই ঘাটের লোভাছড়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল, সমৃদ্ধ অতীতের সাক্ষী উত্তরাঞ্চলের প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের মতো নানা দর্শনীয় স্থান। তারপরও বিদেশী পর্যটক আকৃষ্টের ব্যর্থতার কারণ জানেন না সংশ্লিষ্টরা।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী দেশে গত বছর পর্যটকের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়। তবে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে আসা পর্যটকের সংখ্যা এ সময়ে তেমন একটা বৃদ্ধি পায়নি। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, দেশে ২০১৮ সালে বিদেশী নাগরিক এসেছেন ৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৩০ জন। ২০১৯ সালে বিগত ১০ বছরে সর্বোচ্চ বিদেশী নাগরিক দেশে এসেছেন ৬ লাখ ২১ হাজার ১৩১ জন। করোনা মহামারির সময় ২০২০ সাল নাগাদ বিদেশী এসেছেন ১ লাখ ৮১ হাজার ৫১৮ জন। সর্বশেষ ২০২১ সালে বিদেশী নাগরিক এসেছেন শুধু ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৮৬ জন।

অপরদিকে বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, বাংলাদেশে ২০১৮ সালে দুই লাখ ৬৭ হাজার এবং ২০১৯ সালে তিন লাখ ২৩ হাজার বিদেশী পর্যটক বাংলাদেশে আসেন। এতে বাংলাদেশের আয় ছিল যথাক্রমে ৩৫৭ ও ৩৯১ মিলিয়ন ডলার। করোনাকালে সারা বিশ্বেই পর্যটকের সংখ্যা কমে গেলে ২০২০ সালে প্রায় এক লাখ ৮২ হাজার এবং ২০২১ সালে এক লাখ ৩৫ হাজার বিদেশী পর্যটক বাংলাদেশে আসেন। যাতে আয় হয় ২১৭ ও ২৭৩ মিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে পর্যটন সংশ্লিদের তথ্যমতে, দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে প্রতি বছর ভ্রমণ করছেন প্রায় দেড় কোটি পর্যটক। এর মধ্যে বিদেশী পর্যটক মাত্র তিন থেকে পাঁচ শতাংশ। দেশের জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান শুধু ৪.৪ শতাংশ। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশগুলো ১০ শতাংশের ওপরে অবদান রাখছে।

এ বিষয়ে পর্যটন বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, বিরাজমান পরিস্থিতিতে যথাযথ অবকাঠামো নির্মাণ ও সঠিক পরিকল্পার মাধ্যমে পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে বিদেশী পর্যটকদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা, দেশের সব দর্শনীয় স্থানে ঢাকা থেকে যাতায়াত সহজ করা, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এ রকম কিছু পদক্ষেপ নিলে কিছুটা হলেও তা পর্যটক অকর্ষণে সহায়ক হবে।

এদিকে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (বিক্রয় উন্নয়ন ও জনসংযোগ) মো: জিয়াউল হক হাওলাদার বলেন, বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। সে সাথে পর্যটনের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে। আমাদের দেশে-বিদেশী পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা কিভাবে আরো বাড়ানো যায় তারও পরিকল্পনা চলছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button