Bangladesh

আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বড় পরিবর্তন

তালিকায় ব্যবসায়ী, সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তারা। বাদ যাননি মাত্রই রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া সাবেক সচিবরাও।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে এবার আওয়ামী লীগ যাঁদের বাছাই করেছে, সেই তালিকায় নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সমাগম ঘটেছে। এর মধ্যে রুপালি পর্দার তারকা যেমন রয়েছেন, তেমনি আছেন দেশসেরা ক্রিকেটারও। আছেন বড় ব্যবসায়ী, সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তারা। বাদ যাননি মাত্রই রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া সাবেক সচিবরাও।

এ ছাড়া চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী ও সংগীতশিল্পীও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তালিকায় রয়েছেন। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে আসা নেতারা যেমন আছেন, তেমনি সদ্যই ছাত্ররাজনীতির গণ্ডি পেরোনো তরুণেরাও জায়গা করে নিলেন। তবে সব ছাপিয়ে যে বিষয়টি সাড়া ফেলেছে, সেটি হলো মন্ত্রিসভার তিনজন সদস্যসহ বর্তমান সংসদের ৭১ জন সংসদ সদস্যকেই আগামী নির্বাচনের জন্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি। ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় এত বড় পরিবর্তন আর হয়নি। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ৬৫ জন।

প্রার্থীদের নাম ঘোষণার সময় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এবং কার্যালয়ের বাইরে অপেক্ষমাণ কর্মী-সমর্থকেরা উল্লাস প্রকাশ করেন। বিশেষ করে পছন্দের প্রার্থীর নাম বলার সঙ্গে সঙ্গে হর্ষধ্বনি দেন কর্মী ও সমর্থকেরা।

গতকাল রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগামী নির্বাচনের জন্য মনোনীত প্রার্থীদের একে একে নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ৭ জানুয়ারি।

প্রার্থীদের নাম ঘোষণার সময় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এবং কার্যালয়ের বাইরে অপেক্ষমাণ কর্মী-সমর্থকেরা উল্লাস প্রকাশ করেন। বিশেষ করে পছন্দের প্রার্থীর নাম বলার সঙ্গে সঙ্গে হর্ষধ্বনি দেন কর্মী ও সমর্থকেরা।

যে দুটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি তার একটি কুষ্টিয়া-২ আসন। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ১৪ দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের আসনেও কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলীয় সূত্র বলছে, এই দুটি আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রাখছে। কারণ, জোটগতভাবে ভোটে অংশ নেওয়ার বিষয়ে এখনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে দলে।

দলীয় সূত্র জানায়, আজ সোমবার বিকেল থেকে মনোনয়নপ্রাপ্তদের দলীয় প্রধানের সই করা মনোনয়ন ফরম বিতরণের কাজ শুরু হতে পারে, যা নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে।

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ২৪০টি আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছিল। বাকি আসনগুলো ১৪-দলীয় জোটের শরিক, জাতীয় পার্টি এবং সমমনাদের ছেড়ে দেওয়ার পর চূড়ান্ত করা হয়। এবার দুটি আসন বাদে সব কটিই ঘোষণা করা হলো। ফলে আগামী নির্বাচনে জোট-মহাজোট থাকবে কি না, সেই প্রশ্ন ওঠে। কারণ, ১৪–দলীয় জোটের এবং জাতীয় পার্টির নেতাদের আসনে আওয়ামী লীগ যাঁদের নাম ঘোষণা করেছে, তাঁদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতাও রয়েছেন।

বর্তমান সংসদ সদস্যকে বাদ দিতে হয়েছে তারকা, ক্রিকেটার ও সাবেক আমলাদের জায়গা করে দিতে। আর কিছু বাদ পড়েছেন দলীয় কোন্দলের কারণে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে এবার বেশি আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ২০১৮ সালের সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে ৪৮ জন বাদ পড়েছিলেন। বিএনপিবিহীন ২০১৪ সালের নির্বাচনে বাদ পড়েছিলেন ৬৩ জন।

দলীয় সূত্র বলছে, এবার কয়েকজন বাদ পড়েছেন বয়সের কারণে। আর কিছু আসনে বর্তমান সংসদ সদস্যকে বাদ দিতে হয়েছে তারকা, ক্রিকেটার ও সাবেক আমলাদের জায়গা করে দিতে। আর কিছু বাদ পড়েছেন দলীয় কোন্দলের কারণে। অনেক আসনে কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের জায়গা দিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে দুর্নীতি, অনিয়ম, দখল, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ যেসব মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে ছিল, তাঁদের মধ্যে বাদ পড়ার সংখ্যা খুবই কম।

বাবার প্রস্থান, ছেলের আগমন

বয়স ও অসুস্থতার কারণে নির্বাচনী প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়েছেন কয়েকজন। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মনোনয়ন তাঁদের পরিবারেই আছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক নম্বর সদস্য মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রাম-১ আসনের ছয় মাসের সংসদ সদস্য। এবার আগেই নির্বাচন না করার কথা জানান। ছেলে মাহবুব উর রহমানকে যাতে মনোনয়নের জন্য বিবেচনা করা হয়, সেই অনুরোধ দলীয় প্রধানের কাছে রেখেছিলেন। তাঁর অনুরোধ রেখেছে দল।

আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমানও এবার আগে থেকেই ভোট না করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। রংপুর-৫ আসনে তিনি পাঁচবারের সংসদ সদস্য। এই আসনে ছেলে রাশেক রহমানকে মনোনয়ন দিতে তিনিও অনুরোধ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত রাশেক মনোনয়ন পেয়েছেন।

ঢাকা-৭ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য হাজি সেলিম দীর্ঘদিন অসুস্থ। তাঁর নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতাও আছে। এবার তিনি ও তাঁর দুই ছেলের জন্য মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে বড় ছেলে সোলায়মান সেলিম মনোনয়ন যাতে পান, সেটি চেয়েছিল পরিবার। সোলায়মান মনোনয়ন পেয়েছেন।

বয়স ও অসুস্থতার কারণে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম বাদ পড়েছেন। এই আসনে পেয়েছেন তাঁর ছেলে মাজহারুল ইসলাম।

বয়স ও অসুস্থতার কারণে এবার বাদ পড়েছেন ঢাকা-১১ আসনের পাঁচবারের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ। এ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াকিল উদ্দিনকে। অবশ্য ওয়াকিল গুলশান-বনানী এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসনে প্রার্থী হতে দীর্ঘদিন চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস আগে এই আসনে সংসদ সদস্য হয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

বয়স ও নিষ্ক্রিয়তার কারণে বাদ পড়েছেন চাঁদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তাঁর জায়গায় প্রথমবার সুযোগ পেয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ।

ঢাকায় বড় পরিবর্তন

এবার রাজধানী ঢাকার ১৫টি আসনের মধ্যে এবার বাদ পড়েছেন ৭ জন। আগে জোটের কারণে ছেড়ে দেওয়া তিনটি আসনে আওয়ামী লীগের তিনজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে সাত আসনে প্রার্থী বদল করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটিতে নতুন প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা-৪ ও ঢাকা-৬ আসন দুটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার এই দুটি আসনে যথাক্রমে সানজিদা খানম ও সাঈদ খোকন মনোনয়ন পেয়েছেন। ঢাকা-৮ আসনে তিনবারের সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। এবার এই আসনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিনকে (নাছিম) মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

দলীয় সূত্র বলছে, জোটের কারণে ছেড়ে দেওয়া তিনটি আসনই ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে। বিরোধী দলের আন্দোলন এবং নিজেদের সাংগঠনিক তৎপরতা পরিচালিত হয় গুলিস্তান-মতিঝিল ঘিরে। এখানে নিজ দলের সংসদ সদস্য না থাকার কারণে সংগঠন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এ জন্যই জোটকে না দিয়ে দলীয় প্রার্থী রাখার জোর দাবি ছিল নেতাদের।

এ ছাড়া ঢাকায় ঢাকা-৫ আসনে কাজী মনিরুল ইসলামের স্থলে মনোনয়ন পেয়েছেন হারুনুর রশিদ। তিনি যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ঢাকা-৭ আসনে হাজি সেলিমের স্থানে ছেলে সোলায়মান সেলিম মনোনয়ন পেয়েছেন। ঢাকা-১৩ সাদেক খানকে বাদ দিয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানককে প্রার্থী করা হয়েছে।

নানক ২০০৮ সালে এই আসনের সংসদ সদস্য হয়ে প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু গত নির্বাচনে তিনি বাদ পড়েন। ঢাকা-১৪ আসনে উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার পর আড়াই বছরের মতো সময় পেয়েছেন আগা খান। প্রভাব কম বিবেচনায় তাঁর জায়গায় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ঢাকা-১১ আসনে এ কে এম রহমতুল্লার জায়গায় এসেছেন ওয়াকিল উদ্দিন।

সাবেক আমলারা

জামালপুর-৫ আসনে কয়েকবার সংসদ সদস্য হয়ে মন্ত্রীও হয়েছিলেন রেজাউল করিম। হঠাৎ গত নির্বাচনে তাঁকে বাদ দিয়ে প্রকৌশলী মোজফফর হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয় এবং তিনি জয়ী হন। এই আসনে এবার মনোনয়ন পেলেন সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ। তিনি শেখ হাসিনার অধীনে সরকারের এসডিজি বাস্তবায়নবিষয়ক কমিটিতে মুখ্য সমন্বয়কেরও দায়িত্ব পালন করেন। কয়েক মাস ধরে তিনি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কৌশল প্রণয়নসংক্রান্ত দলের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন।

আবুল কালামের বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহে। কিন্তু ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ছয়বারের সংসদ সদস্য। তাই আজাদকে জামালপুর সদরে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

সুনামগঞ্জ-২ আসনে আটবার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তাঁর মৃত্যুর পর স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তও দুবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। এবার চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদকে জায়গা করে দিতে বাদ পড়তে হয় জয়া সেনগুপ্তকে। চৌধুরী মাহমুদ পুলিশের বর্তমান মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের ভাই। সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়েছেন।

বাংলাদেশ কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক সুনামগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনিও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কৌশল প্রণয়ন কমিটির সঙ্গে যুক্ত। গত দুটি নির্বাচনে এই আসন আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছিল।

দুবারের সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খানকে বাদ দিয়ে ঝিনাইদহ-৩ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সালাহ উদ্দিন মিয়াজীকে। তিনি ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক সচিব ছিলেন। তাঁর বাবা ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।

কিশোরগঞ্জ-২ আসনে দুবারের সংসদ সদস্য পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদ বাদ পড়েছেন। তাঁর জায়গায় মনোনয়ন পেয়েছেন পুলিশের উপমহাপরিদর্শক হিসেবে অবসরে যাওয়া আবদুল কাহার আকন্দ। এটিকে বড় পরিবর্তন বলছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্তের পাশাপাশি একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও বিডিআর বিদ্রোহ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন আকন্দ।

কেন্দ্রীয় নেতার সংখ্যা বেড়েছে

এবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৩৮ জন নেতা মনোনয়ন পেয়েছেন। দলীয় সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে এত কেন্দ্রীয় নেতা দলীয় মনোনয়ন পাননি। কেন্দ্রীয় কমিটির সাতজন প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন। তাঁরা হলেন শাম্মী আহমেদ, ফরিদুন্নাহার, সেলিম মাহমুদ, আবদুস সবুর, আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন ও শফিউল আলম চৌধুরী।

মোশাররফ পরিবার বাদ, কিছু পরিবার যোগ

ফরিদপুর-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাদ পড়েছেন। এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক।

মোশাররফ দীর্ঘদিন দেশের বাইরে আছেন। এক বছর ধরে সংসদের কার্যক্রমেও ছিলেন না। গত ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলের উপদেষ্টা পরিষদের পদও হারান তিনি।

চিকিৎসকের পেশা ছেড়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হাবিবে মিল্লাত হঠাৎ করে ২০১৪ সালে সিরাজগঞ্জ-২ আসনে মনোনয়ন পান । তিনি খন্দকার মোশররফ হোসেনের জামাতা। এবার হাবিবে মিল্লাতকেও মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এই আসনে নৌকার প্রার্থী জান্নাত আরা (হেনরী)। তিনি ছিলেন স্কুলশিক্ষিকা। ২০০৮ সালে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করে বিএনপির প্রার্থী রুমানা মাহমুদের কাছে হেরে যান। এরপর তাঁকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক করা হয়।

আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা তোফায়েল আহমেদের জামাতা মো. তৌহিদুজ্জামান এবার যশোর-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন। প্রয়াত মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফের ছেলে গালিবুর রহমান এবার বাবার আসনে (ঈশ্বরদী) মনোনয়ন পেয়েছেন। তাঁদের পরিবারের ছয়জন মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

কোথাও স্বামী, কোথাও স্ত্রী

নোয়াখালী-৬ আসনের সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদৌসকে বাদ দিয়ে তাঁর স্বামী মোহাম্মদ আলীকে এবার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে টেকনাফে আবদুর রহমানের স্ত্রী শাহীন আক্তারকে দ্বিতীয়বারের মতো মনোনয়ন দেওয়া হলো।

আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা ও সংসদ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, সংখ্যাগত দিক থেকে এবার পরিবর্তন অনেক বড়। অনেক নতুন মুখও এসেছে। তবে এটাকে ‘কোয়ালিটেটিভ চেঞ্জ’ (গুণগত পরিবর্তন) পরিবর্তন বলা যাবে না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d