Bangladesh

আন্দোলনে তৎপর হচ্ছে জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক দলগুলো, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে ১৪ দলের শরিকদের ‘না’

বিএনপির সঙ্গে এত দিন যুগপৎ আন্দোলনে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল না এমন কয়েকটি ধর্মভিত্তিক ইসলামী দল সরকারবিরোধী আন্দোলনে তৎপর হচ্ছে। তারা আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে দলীয় কর্মসূচি দিয়েছে। এই দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২৮ অক্টোবর রাজধানীর শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। ইসলামী আন্দোলন আগামী ২৭ অক্টোবর জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে।

পাশাপাশি দলটি ৩ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে। খেলাফত মজলিস ২৭ অক্টোবর রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

ধর্মভিত্তিক দলগুলোর এসব কর্মসূচি নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে। ধারণা করা হচ্ছে, এই কর্মসূচি নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির এক ধরনের বোঝাপড়া আছে।

একসময় বিএনপির সঙ্গে জোটে থাকা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামও এবার মাঠে নামবে বলে জানিয়েছেন দলের যুগ্ম মহাসচিব বেলায়েত হোসেন ফিরোজী।

জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন ছাড়া বাকি ইসলামী দলগুলোর ওপর কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের একটা প্রভাব আছে। সম্প্রতি হেফাজতের সঙ্গেও বিএনপির একটি যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলন কোন দিকে গড়ায় তা মাথায় রেখে হেফাজতে ইসলাম তাদের সিদ্ধান্ত নেবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।

সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে আরো সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে ইসলামী দলগুলো। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, এসব দল শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে শক্তভাবে মাঠে থাকে কি না তা নিয়ে সংশয় আছে। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সরকারের চাপে পড়তে চান না দলগুলোর বেশির ভাগ নেতা। ফলে সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনে বিএনপি সফলতা দেখাতে না পারলে ইসলামী দলগুলো পিঠটান দিতে পারে।

শাপলা চত্বরে জামায়াত

বিএনপির সঙ্গে মিল রেখে ২৮ অক্টোবর রাজধানীর শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সংসদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে এই মহাসমাবেশ হবে বলে গতকাল সোমবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটি জানিয়েছে।

বিএনপি ও জামায়াতের একাধিক সূত্র জানায়, গত শনিবার বিএনপি ও জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। এই বৈঠকের পর গত রবিবার অনুষ্ঠিত জামায়াতের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নেয় দলটি।

ফলে ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপি, বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগ এবং শাপলা চত্বরে জামায়েতের সমাবেশ ঘিরে রাজধানীতে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জামায়াত প্রতিবছর ২৮ অক্টোবর ‘লগি-বৈঠার’ কর্মীদের হাতে তাদের কয়েকজন কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনার স্মরণে বিক্ষোভ সমাবেশ করত। এবারই প্রথম এই দিনে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে মহাসমাবেশ করার উদ্যোগ নিয়েছে। ২০০৬ সালে পল্টন ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় আওয়ামী লীগের কর্মীদের সঙ্গে জামায়াতের কর্মীদের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ তখন বিএনপি-জামায়াত সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছিল।

জানতে চাইলে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনে তাঁরা সব সময় মাঠে ছিলেন। সামনে আরো শক্তভাবে মাঠে থাকবেন। তিনি জানান, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ঘিরে সরকারের আচরণের ওপর নির্ভর করছে তাঁদের পরবর্তী কমসূচি কী হবে।

বিএনপি ও জামায়াতের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, জামায়াতের সঙ্গ নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা মহলের সমালোচনা এবং দলের কিছু নেতার আপত্তিতে দীর্ঘদিনের ২০ দলীয় জোট গত ৯ ডিসেম্বরে কৌশলে ভেঙে দেয় বিএনপি। এরপর যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচিতে জামায়াত রাজপথে ছিল। এরপর যুগপৎ আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণায় যোগাযোগ না করা এবং তাদের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া না দেখানোয় ক্ষুব্ধ জামায়াত নিজ দলের কর্মসূচি করলেও যুগপৎ আন্দোলন থেকে বিরত থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, দুই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিরোধী শক্তির অনৈক্যে পরোক্ষভাবে লাভবান হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। ফলে উভয় দলের নীতিনির্ধারণী মহল নিজেদের মধ্যে ইতিবাচক যোগযোগের মাধ্যমে আগামী ২৮ অক্টোবর যুগপৎ ধারায় ঢাকার রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ইসলামী আন্দোলন

বিএনপির সঙ্গে একই দিন না হলেও ২৮ অক্টোবরের আগে ও পরে কর্মসূচি রেখেছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ভোট প্রত্যাখ্যানের পর বিএনপির সঙ্গে দলটির যোগাযোগ বেড়েছে। সম্প্রতি ইসলামী আন্দোলনের সহযোগী সংগঠন যুব ও ছাত্র আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ছাত্র ও যুব সমাবেশে অংশ নিয়েছেন যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এবং ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।

জানতে চাইলে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছি। বিএনপির সঙ্গে জোটে না থাকলেও তাদের সঙ্গে দাবি ও মতের মিল আছে। যারাই সুষ্ঠু নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে থাকবে, তাদের কর্মসূচির বিষয়ে আমাদের সমর্থন থাকবে।’

সরকারবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে বিএনপির সঙ্গে একসঙ্গে মাঠে দেখা যাবে কি না জানতে চাইলে তাঁর কৌশলী জবাব, ‘শীত থেকে রক্ষা পেতে মানুষকে একই ধরনের পোশাক পরতে হয়।’

হেফাজত ও অন্যান্য

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মীর ইদরিস বলেন, বিভিন্ন ইসলামী রাজনৈতিক দলের অনেকে হেফাজতের কমিটিতে আছেন। এসব রাজনৈতিক দল কোন জোটে যাবে তা তাদের নিজ সিদ্ধান্তের বিষয়। হেফাজতকে যাতে কেউ ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে তাঁরা সতর্ক আছেন।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের বলেন, নির্দলীয় সরকারসহ আট দফা দাবিতে তাঁরা মাঠে আছেন। ২৭ অক্টোবর রাজধানীতে গণমিছিলের পর তাঁদের আরো কর্মসূচি আসবে।

পাল্টাপাল্টি কোনো কর্মসূচিতে আগ্রহী নয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকরা। জোটভুক্ত অন্তত সাতটি দলের শীর্ষ নেতারা কালের কণ্ঠকে বলেছেন, কোনো কর্মসূচি ঘিরে নাশকতা বা সহিংসতার আশঙ্কা থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ। ফলে আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ কর্মসূচির দিন একাই রাজপথে থাকছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির এই জমায়েত রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে।

কারণ এই মহাসমাবেশ থেকে বিএনপি সরকার পতনের কর্মসূচির দিকে যাবে বলে আলোচনা আছে। আর আওয়ামী লীগ এ সমাবেশ থেকে নাশকতার আশঙ্কা করছে। তা মোকাবেলায় বড় প্রস্তুতি নিয়ে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে একই দিন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ ডেকেছে দলটি।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ওপর যখন বিএনপির এমন কর্মসূচির চাপ, তখন অনেকটা নীরব ১৪ দল। আওয়ামী লীগের পাশে দেখা মিলছে না মিত্র দলগুলোর। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘২৮ অক্টোবর নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। কিছু বিরোধী দল কর্মসূচি দিয়েছে। তারা তাদের মতো পালন করবে। অন্য কোনো সমস্যা থাকলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সেটা দেখবে। কোনো দলের কর্মসূচির পাল্টা কর্মসূচি দেওয়ার কথা ১৪ দল ভাবছে না।’

১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতারা জানান, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীতে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার বাস্তবতায় ১৪ দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়ায় বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে তারা অনেকটা একলা চলো নীতি নেয়। এ কারণে বিভিন্ন সময় জোটের অভ্যন্তরে টানাপড়েন দেখা দেয়।

জাতীয় পার্টি-জেপির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি এককভাবে তাদের কর্মসূচি দিয়েছে। আওয়ামী লীগও এককভাবে সেটা মোকাবেলা করছে। কোনো দলের পাল্টা কর্মসূচি আমরা দিই না। আমরা আশা করছি, দুই দলের সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হবে। কর্মসূচি পালন সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু কর্মসূচির নামে সহিংসতা কাম্য নয়।’

জোটের শরিক দলগুলোর গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা জানান, মাস দুয়েক আগে আগামী নির্বাচন এবং পরবর্তী সময়ে সরকার গঠনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের মনোভাব জানতে চেয়েছিলেন ১৪ দলের একাধিক শরিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। কিন্তু সে বিষয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট জবাব পাননি তাঁরা।

বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছি। এ বিষয়ে ১৪ দলের ঘোষিত কর্মসূচি রয়েছে। কিন্তু ২৮ অক্টোবর কোনো কর্মসূচির বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়নি।’

১৪ দলের শরিক একটি বাম দলের শীর্ষ এক নেতা বলেন, ১৪ দল গঠনের সময় কথা ছিল একসঙ্গে নির্বাচন, একসঙ্গে সরকার গঠন। কিন্তু আওয়ামী লীগ একলা চলো নীতিতে চলছে। তারা একসঙ্গে নির্বাচন করলেও এককভাবে সরকার গঠন করছে। ফলে তারা যখন চাপে পড়ছে তখন শরিক দলগুলোকে আন্তরিকভাবে পাশে পাচ্ছে না।

১৪ দলের একাধিক সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার চাপ রয়েছে। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েও ১৪ দলের শরিকরা বুঝেশুনে এগোচ্ছে। যদিও গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সংসদে কড়া কথা বলেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তাঁরা বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র নয়, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ চায়। তাঁরা পরাশক্তির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অবস্থান নিলেও আগামী সরকারে শরিকদের অবস্থান কী হবে সে বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি আওয়ামী লীগ।

জানতে চাইলে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, ‘সব দেখছি, শুনছি। এর বাইরে কিছু বলার নেই।’

Show More

10 Comments

  1. Hey excellent blog! Does running a blog similar to this require a great deal of
    work? I’ve no expertise in coding however I had been hoping to start my own blog soon.
    Anyhow, if you have any suggestions or techniques for new blog owners please share.
    I know this is off topic but I simply wanted to ask. Cheers!

  2. Heya just wanted to give you a quick heads up and let you know
    a few of the images aren’t loading properly. I’m not sure why but
    I think its a linking issue. I’ve tried it in two different internet browsers
    and both show the same results.

  3. Hello there! Would you mind if I share your blog with my facebook group?
    There’s a lot of people that I think would really enjoy
    your content. Please let me know. Thank you

  4. Hello! I could have sworn I’ve been to this site before but after browsing through some of
    the post I realized it’s new to me. Anyhow, I’m definitely delighted I found it and I’ll be bookmarking and checking back often!

  5. What i don’t understood is actually how you are now not really a lot more well-favored than you might be now.

    You’re so intelligent. You realize therefore significantly in terms of this matter, made me personally consider it from so
    many varied angles. Its like men and women are not fascinated until it is something
    to accomplish with Girl gaga! Your individual stuffs excellent.
    Always handle it up!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
bacan4d
bacan4d