ইইউ পার্লামেন্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে আলোচনা এবং বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফ্রান্সের বৃহত্তম শহর স্ট্রাসবার্গে বুধবার এ বিতর্ক অুনষ্ঠিত হয়। সেখানে বাংলাদেশের পাশাপাশি গুয়েতেমালা এবং আজারবাইজানের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও গণতন্ত্র নিয়েও আলোচনা হয়।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এক কূটনীতিক জানিয়েছেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রাতিষ্ঠানিক কার্যালয় স্ট্রাসবার্গে অনুষ্ঠেয় প্লেনারি সেশনে ‘রেজ্যুলেশন অব হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ শিরোনামে ৩ দেশের মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ‘হিউম্যান রাইটস সিচুয়েশন ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট ও কমিশনের রুল ১৪৪-এর আলোকে ওই আলোচনা এবং বিতর্ক হয়। সেখানে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন, আইনের শাসনের ঘাটতি, এলিট ফোর্স র্যাব ও ডিবি পরিচয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং সাধারণের হয়রানি, গুম-খুনের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।
উল্লেখ্য, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিয়ে প্রায়শই আলোচনা, বিতর্ক তথা প্রস্তাব আসে। এসব রেজ্যুলেশন নন-বাইডিং হলেও তা রেফারেন্স হিসেবে থেকে যায়, যা সংশ্লিষ্ট দেশের রাজনীতিতে বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক চাপে বাড়তি মাত্রা যুক্ত করে। ২০১৪ সালের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের পর থেকে নিয়মিত বিরতিতে (দফায় দফায়) ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
চলমান রাজনৈতিক সংকটের দ্রুত অবসান এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিতে শর্তহীন সংলাপের আয়োজন করতে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে ইউরোপের ২৭ রাষ্ট্রের জোট ইইউ’র রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং তাদের আইন প্রণেতারা। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সংসদ ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে উত্থাপিত রেজ্যুলেশনে আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচন যাতে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ ও সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে হয় সেই আহ্বান এবং সুপারিশ করা হয়েছে। প্রস্তাবটি পাস হলে বাংলাদেশের সংকট সমাধানের পথ সুগম হবে বলে আশা করছে রেজ্যুলেশন উত্থাপনের সহায়ক হিসেবে কাজ করা বাংলাদেশিরা।
উল্রেখ্য, গত জুনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৬ সদস্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলকে একটি চিঠি লিখেন। এতে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ, চলমান সংকটের টেকসই ও গণতান্ত্রিক সমাধানের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আলোচনার কথা বলা হয়।