Bangladesh

এক দফার আন্দোলন

বিএনপির পদযাত্রায় হামলা-সংঘর্ষ

  • লক্ষ্মীপুরে কৃষক দলের এক কর্মী নিহত।
  • খাগড়াছড়িতে সংঘর্ষে আহত শতাধিক; ভাঙচুর, আগুন, বিজিবি মোতায়েন।
  • মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনে পদযাত্রায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ।
  • বগুড়ায় গুলির শব্দে আতঙ্কিত ৩৩ ছাত্রীকে দিতে হয় চিকিৎসা।

পদযাত্রায় অংশ নেওয়া বিএনপির নেতা–কর্মীদের ধাওয়া করছে পুলিশ। গতকাল কিশোরগঞ্জ শহরের রথখলার ঈশা খাঁ সড়কে

বিএনপির পদযাত্রায় লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। সেখানে নিহত হয়েছেন কৃষক দলের এক কর্মী। আরও ছয়টি জেলায় বিএনপির পদযাত্রায় বাধা, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের সদস্য, সাংবাদিকসহ চার শতাধিক ব্যক্তি। রাজধানীতেও দলটির পদযাত্রায় ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়েছে।

কোনো কোনো জেলায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। কোথাও কোথাও সংঘর্ষ হয়েছে ত্রিমুখী—পুলিশ, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে। এসব জায়গায় পুলিশ ফাঁকা গুলি করেছে এবং রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে। এ ছাড়া কোনো কোনো জেলায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষের সময় ১০টি মোটরসাইকেলসহ অন্তত ১২টি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

বিএনপি এবং আরও ৩৬টি দল ঢাকায় সমাবেশ করে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা দেয় ১২ জুলাই। এরপর বিএনপিসহ আন্দোলনকারী দলগুলো তাদের এক দফা দাবিতে গতকাল ঢাকাসহ সারা দেশে পদযাত্রার কর্মসূচি পালন করে। গতকাল তাদের এই পদযাত্রায় বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের বাধা, হামলা, সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়ায়।

গত ছয় মাসে বিএনপি অন্যান্য দলের সঙ্গে যে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করেছে, তাতে পুলিশ এবং সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের অবস্থান অনেকটা সহনশীল ছিল, বড় কোনো হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। এমনকি ১২ জুলাই যেদিন বিএনপি ঢাকার নয়াপল্টনে সমাবেশ করে এক দফার আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে, সেদিন একই সময় দেড় কিলোমিটার দূরত্বে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। দুটি সমাবেশই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।

সে সময় বাংলাদেশের নির্বাচন ও মানবাধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ঢাকা সফর করছিলেন। এ ছাড়া নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠানোর পরিবেশ যাচাইয়ের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধিদলও তখন ঢাকা সফরে আসে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল এখনো ঢাকায় অবস্থান করছে।

বগুড়ায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের খবরে ঘটনাস্থলে আসেন যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাঁদের বাধা দেন পুলিশ সদস্যরা। গতকাল দুপুরে বগুড়ার ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড়ে

বগুড়ায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের খবরে ঘটনাস্থলে আসেন যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাঁদের বাধা দেন পুলিশ সদস্যরা

কিন্তু গতকাল বিএনপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ও ক্ষমতাসীনদের কঠোর অবস্থান ছিল চোখে পড়ার মতো।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করছেন, আওয়ামী লীগ এত দিন বিএনপির কর্মসূচির পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে তাদের একটা অবস্থান রেখেছিল। কিন্তু এখন ক্ষমতাসীন দল বিরোধী দলের কর্মসূচি দমনে কঠোর হতে পারে, গতকালের পরিস্থিতিতে এ ধরনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

কৃষক দলের কর্মী নিহত

লক্ষ্মীপুরে পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের সময় কৃষক দলের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। পুলিশসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৬৫ জন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমা হল ও রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের সামনে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

পুলিশ, বিএনপি ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বিকেল চারটার দিকে শহরের গোডাউন রোড এলাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে এ্যানীর বাসভবন থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়। সাড়ে চারটার দিকে রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের কাছে পদযাত্রাটি পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে পদযাত্রা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাইলে দুই পক্ষের তর্কাতর্কি শুরু হয়। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেই। এ সময় জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমা হল এলাকা, রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতাল, মটকা মসজিদ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

স্থানীয় বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান অভিযোগ করেছেন, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও বিএনপির পদযাত্রায় হামলায় অংশ নেয়। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কৃষক দলের কর্মী সজীব হোসেনকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশের ছররা গুলিতে তাঁদের ৩০ থেকে ৪০ নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে তিনি দাবি করেন।

সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মৃত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। শরীরে বেশ কিছু কোপানোর জখম আছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক বলেন, ‘বিএনপির মিছিল থেকে আমাদের কর্মসূচিতে হামলা করে। বিএনপির দলীয় কোন্দলের কারণে তাঁদের একজন কর্মী নিহত হয়েছেন। ছাত্রলীগ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।’

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করেন। এতে তিনিসহ ২০ থেকে ২৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। বিপরীতে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এতে একজন নিহত হয়েছেন বলে শুনেছেন।

কিশোরগঞ্জে সংঘর্ষ, ভাঙচুর

কিশোরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ সময় দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ শটগানের গুলি ছোড়ে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপির পদযাত্রা আখড়া বাজার মোড় অতিক্রম করে ঈশা খাঁ সড়কের রথখোলা দিকে যেতে থাকলে নূর মসজিদ পাশে পুলিশ পদযাত্রার নেতা-কর্মীদের বাধা দেয়। পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঐতিহাসিক রথখোলা মাঠে ঢোকার নির্দেশ দেয়। এই বাধা দেওয়ার ঘটনা থেকে সেখানে সংঘর্ষ হয়।

খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ

খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের শাপলা চত্বর ও আশপাশ এলাকায় এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সংঘর্ষ চলে। এ সময় গাড়ি চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ থাকে। পরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বিএনপির পদযাত্রায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা ইটপাটকেল ছোড়ে। পরে আওয়ামী লীগ উন্নয়ন শোভাযাত্রা নিয়ে শহরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়। এতে দুই পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হয়। ধীরে ধীরে সংঘর্ষ প্রায় পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়ে। থেমে থেমে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলতে থাকে। অনেকটা রণক্ষেত্রে পরিণত হয় খাগড়াছড়ি শহর। বিএনপি কর্মীদের লাঠিসোঁটা ও দেশীয় নানা অস্ত্র নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়।

আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদেরও লাঠিসোঁটা ও দেশীয় নানা অস্ত্র শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়। সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার একপর্যায়ে বিএনপির কর্মীরা খাগড়াছড়ি পৌরসভা কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। তারা পৌরসভার দরজা-জানালার কাচ ভাঙচুর করে ও আসবাবপত্র তছনছ করে। তারা ভাঙচুর করে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১০টি মোটরসাইকেল। এ ছাড়া চারটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

খাগড়াছড়িতে শহরজুড়ে সংঘর্ষ হলেও পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিল। যদিও শেষ দিকে কয়েকটি স্থানে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে দেখা যায়। অবশ্য বিজিবি সদস্যরা মাঠে নামলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

ঘটনার জন্য স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ একে অপরকে দায়ী করেছে।

বগুড়ায় দফায় দফায় সংঘর্ষ

বগুড়ায় বিএনপির পদযাত্রা ও বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও শটগানের গুলি ছুড়েছে।

বগুড়া শহরের বনানী থেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদারের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা পদযাত্রা নিয়ে শহরের সাতমাথার দিকে এগোতে থাকেন । তখন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুর রশিদের নেতৃত্বে পুলিশ বাধা দেয়। এ নিয়ে দুই পক্ষে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়।

বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার অভিযোগ করেন, পুলিশ বিনা উসকানিতে বিএনপির মিছিলে হামলা ও গুলি করেছে। পরে তারা দলীয় কার্যালয়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও গুলি ছুড়েছে। পুলিশের গুলি ও হামলায় ২০ থেকে ২৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুর রশিদ বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে ইয়াকুবিয়া মোড় থেকে সাতমাথা অতিক্রম করতে চেয়েছিল। বাধা দিলে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও হামলা করা হয়। পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। দলীয় কার্যালয়ে হামলার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

এদিকে সংঘর্ষের সময় পুলিশের ছোড়া গুলি শব্দ ও কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ৩৩ জনকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ‘অবজারভেশন ওয়ার্ডে’ভর্তি করা হয়। প্রায় চার ঘণ্টা পর ছাত্রীদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

ত্রিমুখী সংঘর্ষ ফেনীতে

ফেনীতে বিএনপির পদযাত্রা শেষে আওয়ামী লীগের ‘শান্তি’শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ, সাংবাদিক, পথচারীসহ অন্তত শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে ফেনী শহরের প্রধান সড়ক ট্রাংক রোড ও প্রেসক্লাবের আশপাশের সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। হামলাকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে ফেনী প্রেসক্লাবসহ আশপাশের কয়েকটি ভবনের দরজা-জানালার কাচ ভেঙে যায়। এ সময় সড়কে থাকা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর হয়।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির পদযাত্রা শেষে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শহরে ‘শান্তি শোভাযাত্রা’বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি ফেনী পৌরসভা চত্বর থেকে শুরু হয়ে ট্রাংক রোডের জিরো পয়েন্ট হয়ে তাকিয়া রোডের মাথায় যায়। সেখান থেকে আবার শহীদ মিনারে ফেরার পথে প্রেসক্লাবের পাশে খাজা আহাম্মদ সড়কের মাথায় পৌঁছালে কে বা কারা শোভাযাত্রায় একটি ককটেল নিক্ষেপ করে। এতে শহরে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ফেনীতে শান্তিপূর্ণভাবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচি শেষে ইসলামপুর রোডের মাথা ও প্রেসক্লাবের সামনে পৃথক উসকানিমূলক ঘটনায় সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষে ফেনী মডেল থানার ওসিসহ পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।

জয়পুরহাটে সংঘর্ষে আহত ৩০

জয়পুরহাটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পথচারীসহ উভয় দলের অন্তত ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে শহরের রেলগেট এলাকায় বিএনপির কার্যালয়ের পেছনে এ ঘটনা ঘটে।

সেখানে গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহেদ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, দুটি দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের সময় পুলিশ ৫টি ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

পিরোজপুরের সংঘর্ষে আহত ২১

পিরোজপুরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে পুলিশসহ ২১ আহত হয়েছেন। সেখানে বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশ বাধা দিলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

বিএনপির পদযাত্রার সময় রাজধানীর বাঙলা কলেজে আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা দেশীয় অস্ত্র হাতে অবস্থান নেন। গতকাল দুপুরে

বিএনপির পদযাত্রার সময় রাজধানীর বাঙলা কলেজে আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা দেশীয় অস্ত্র হাতে অবস্থান নেন।

রাজধানীতে পদযাত্রায় ইটপাটকেল

ঢাকায় মিরপুরে সরকারি বাঙলা কলেজের সামনে দিয়ে বিএনপির পদযাত্রা যাওয়ার সময় ওই কলেজের ভেতর থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীর ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।

তখন পদযাত্রা থেকে বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং তাদের অনেকে বাঙলা কলেজের গেটে ভাঙচুর করেন। এ সময় তারা সেখানে থাকা একটি মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেন। পদযাত্রায় ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনায় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে বিএনপি।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বেলা পৌনে একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি বাঙলা কলেজের সামনে একটু সমস্যা হয়েছিল। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

চট্টগ্রামে গণতন্ত্র মঞ্চের পদযাত্রায় হামলা

চট্টগ্রাম নগরে গণতন্ত্র মঞ্চের পদযাত্রায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। ‘জয় বাংলা’স্লোগান দিয়ে মিছিলে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ করেন মঞ্চের নেতারা। এতে অন্তত ১০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের বিআরটিসি মার্কেট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলের অদূরে বটতলী স্টেশনে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ছিল।

হামলায় আহতদের মধ্যে জাহেদুল আলম ও শেখ মঈনুল আজাদকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে হামলার বিষয়ে কোনো অভিযান পাননি বলে জানান চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি অঞ্চল) অতনু চক্রবর্তী। তিনি বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চের কর্মসূচির ব্যাপারে আগে থেকে তাঁদের কেউ অবহিত করেননি। তারপরেও হামলার বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন।

হামলার জন্য আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয়কারী হাসান মারুফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘জয় বাংলা’স্লোগান দিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
bacan4d
bacan4d