এক মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৩৫ শতাংশ
এককভাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। সেই রপ্তানি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দেশটিতে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ কমেই চলেছে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি কমেছে ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু সেপ্টেম্বরেই কমেছে প্রায় ৩৫ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের (ইউএস) ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এ প্রতিবেদনে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্য রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৯১ কোটি ১০ লাখ ডলার। অর্থাৎ গত বছর সেপ্টেম্বরের তুলনায় এ বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাবদ আয় কমেছে ৩ কোটি ১৬ লাখ ডলার বা ৩৪ দশমিক ৭১ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, চলতি বছর জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে ৫ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। বছরের ব্যবধানে দেশটিতে পোশাক রপ্তানি কমেছে ১ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার বা ১৭৬ কোটি ডলার। চলতি বছর প্রথম ৯ মাসের মধ্যে জানুয়ারি ও জুলাই ছাড়া সাত মাসই যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি আগের বছরের সংশ্লিষ্ট মাসগুলোর তুলনায় কমেছে।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, রপ্তানি আয়ের প্রধান অঞ্চল ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশেই পোশাক রপ্তানি কমছে। এর প্রভাবে গত অক্টোবরে বাংলাদেশের সামগ্রিক রপ্তানি আয় কমেছে প্রায় ১৪ শতাংশ। প্রায় একই হারে কমেছে প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের রপ্তানিও। অক্টোবরের শেষদিকে এসে শ্রম মজুরি বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয়েছিল এবং কিছু কারখানায় ভাঙচুর করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশের প্রায় ছয় শতাধিক কারখানা বন্ধ রাখতে হয়েছিল। এতে অনেক প্রতিষ্ঠান সময়মতো রপ্তানি করতে পারেনি। শ্রম অসন্তোষের পরিস্থিতিতে অনেক বিদেশি ক্রেতাও তাদের পোশাক ক্রয়াদেশ দিতে দেরি করেছিল। ফলে অক্টোবরের পর নভেম্বরও রপ্তানি কমার শঙ্কা রয়েছে।
রপ্তানিকারকরা বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা এবং উচ্চ-মূল্যস্ফীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। আর এ কারণে কমেছে তৈরি পোশাকের চাহিদা। তাদের মতে, এমন পরিস্থিতি আরও তিন থেকে চার মাস বিরাজ করতে পারে। তারপর হয়তো ধীরে ধীরে রপ্তানি বাড়তে পারে।