International

এবার প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দেবে চীন!

চীন তার নৌবাহিনীকে আধুনিক ও শক্তিশালী করতে চায়। পরমাণু-চালিত জাহাজ নির্মাণের মাধ্যমে বিমানবাহী নৌবহরের সম্প্রসারণ করছে দেশটি। কেবল নিজেদের উপস্থিতি বাড়ানো নয়, মার্কিন সামরিক উপস্থিতিকে টেক্কা দেয়াও দেশটির লক্ষ্য।

তাইওয়ান প্রণালীতে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে। প্রয়োজনে শক্তিপ্রয়োগ করে হলেও স্ব-শাসিত তাইওয়ানের সঙ্গে একত্রীকরণ চায় চীন। তাইওয়ানকে বেইজিং চীনের প্রদেশ হিসেবে দেখে।

চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস- এনপিসিতে সরকারের কাজের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। ‘চীনের পুনরেকত্রীকরণ ইস্যুকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নেওয়ার’ বিষয়ে বেইজিংয়ের দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

এটি সরকারের ‘সামগ্রিক কৌশল’ এর অংশ বলেও জোর দিয়েছেন তিনি।

এই বক্তব্য অবশ্য নতুন নয়, তবে এর আগের বছরগুলোতে ‘চীনের পুনরেকত্রীকরণ’ বললে তার আগে ‘শান্তিপূর্ণ’ শব্দটিও ব্যবহার করা হতো। এই ঘোষণায় এই শব্দটি ছিল অনুপস্থিত।

বেইজিং মনে করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাইওয়ানকে দেয়া নিরাপত্তা গ্যারান্টিই এই অঞ্চলে নিরাপত্তা হুমকির উৎস। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে বর্তমানে পাঁচটি মার্কিন বিমানবাহী রণতরী প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে।

চীনা রাজনীতিবিদরা প্রায়ই তাদের বক্তব্যে ‘দুই উপকূলে শান্তি এবং নিরাপত্তা’ উল্লেখ করছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন এই শব্দবন্ধের মাধ্যমে এখন শুধু তাইওয়ান প্রণালী নয়, বরং সমগ্র প্রশান্ত মহাসাগরকেই বোঝানো হচ্ছে।

প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই জলসীমায় নিয়ন্ত্রণ নিতে বেইজিং তার অপেক্ষাকৃত দুর্বল নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করে তোলার চেষ্টা করছে।

দক্ষিণ চীন সাগরের দক্ষিণতম বিন্দুটি চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

দুটি বিমানবাহী জাহাজ কর্মক্ষম, আরও দুটি নির্মাণাধীন

বর্তমানে চীনা নৌবাহিনীতে দুটি বিমানবাহী রণতরী রয়েছে – লিয়াওনিং এবং শানডং।

ম্যাকাও এর এক ব্যবসায়ীর মধ্যস্থতায় চীন ইউক্রেন থেকে ১৯৯৮ সালে প্রায় দুই কোটি ডলার দাম দিয়ে সোভিয়েত-নির্মিত লিয়াওনিং কিনেছিল। প্রথমে ভাসমান হোটেল ও ক্যাসিনো নির্মাণের দাবি করেছিলেন ওই ব্যবসায়ী।

অবশ্য ২০১২ সালে লিয়াওনিংকে সংস্কার করে একটি কার্যকরী বিমানবাহী জাহাজে রূপান্তরিত করার পর চীনা নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ঠিক লিয়াওনিংয়ের মত করেই শানডং তৈরি করা হয়েছে চীনেই। ২০১৯ সালে এটি কাজ শুরু করেছে এবং তখন থেকে এটি মূলত দক্ষিণ চীন সাগরে ভ্রমণ করছে।

এই দুটি জাহাজের কোনোটিই পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন নয়। জ্বালানি তেলের মাধ্যমে চলে এই জাহাজগুলো। এই ক্যারিয়ারগুলোতে জেট বিমান ওড়ার জন্য স্কি-জাম্প স্টাইলের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হয় এবং তাদের ক্যাটাপল্ট সিস্টেম অর্থাৎ জাহাজ ছুঁড়ে দেয়ার ব্যবস্থা নেই।

তৃতীয় ক্যারিয়ার ফুজিয়ান ২০২২ সালে চালু হয়েছিল। এখন এটি সাংহাইয়ের একটি শিপইয়ার্ডে নোঙর করা রয়েছে। জাহাজটির সাজসরঞ্জাম এবং মুরিং ট্রায়াল চলছে।

অন্য দুটি ক্যারিয়ারের মতো ফুজিয়ানও জ্বালানি তেলের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়। এটি ২০২৫ সালে কাজ শুরু করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চীন চতুর্থ এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার বানাচ্ছে বলে জল্পনা চলছিল। চীনা নৌবাহিনীর একজন অ্যাডমিরাল এবং রাজনৈতিক কমিসার ইউয়ান হুয়াঝি এই বছরের এনপিসি সমাবেশে এটি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘চতুর্থ এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ারের কোনো প্রযুক্তিগত অসুবিধা সম্পর্কে আমি অবগত নই।’

চীনের এই নতুন বিমানবাহী জাহাজ পারমাণবিক শক্তি চালিত হবে কিনা জানতে চাইলে, ইউয়ান সরাসরি জবাব না দিয়ে বলেছিলেন, এ বিষয়ে ‘শিগগিরই ঘোষণা আসবে।’

আরো দুটি পরমাণু শক্তি চালিত বিমানবাহী রণতরী?

এনপিসি অধিবেশন শুরুর আগে, হংকং এবং তাইওয়ানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আরও দুটি পারমাণবিক শক্তি চালিত বিমানবাহী রণতরী নির্মাণের কাজ চলছে চীনে। বিভিন্ন সংবাদে বলা হয়, এই জাহাজগুলো দুটি থোরিয়াম গলিত লবণের চুল্লি দ্বারা পরিচালিত হবে।

তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেতে চীনা ভাষার সংবাদপত্র চায়না টাইমস এর সম্পাদক ওয়াং ফেং বলেন, ‘চীন একটি আধুনিক নৌবাহিনীর সহায়তায় তার পানিসীমা রক্ষা করার জন্য দৃঢ় উচ্চাকাঙ্ক্ষা স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে চায়।’

তিনি মনে করেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে একাধিক সংঘাতের কার্যকর প্রতিরোধের কৌশল গড়ে তুলতে চায় চীন।

চীনা অ্যাডমিরাল ইউয়ান অবশ্য সরকারি বক্তব্যেই আপতত অটল।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিজেদের তুলনা করার জন্য বিমানবাহী রণতরী তৈরি করছি না এবং অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্যও না। আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য এগুলো ব্যবহার করতে চাই।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor