International

কিরগিজস্তানে হামলা: ১৪০ শিক্ষার্থীকে দেশে ফিরিয়ে নিল পাকিস্তান

কিরগিজস্তানে মিসরের কয়েকজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির সংঘর্ষের জেরে বিদেশিদের ওপর হামলা শুরু হয়েছে। এতে কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। সেখানে নিরাপত্তাহীনতা আর অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে বাংলাদেশের অন্তত ৮০০ মেডিকেল শিক্ষার্থীর। কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে মিসরের কয়েকজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির সংঘর্ষের জেরে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার পর ১৪০ শিক্ষার্থীকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৩ মে বিশকেক শহরে স্থানীয় দু–তিনজন বাসিন্দার সঙ্গে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মিসরীয় কয়েকজনের সংঘর্ষ হয়। এরপর ১৬ মে রাত থেকে বিশকেক শহরে থাকা বিদেশিদের ওপর হামলা শুরু করেন স্থানীয় লোকজন। সেখানে থাকা বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। শহরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদেশিদের মারধর ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এমনকি মেডিকেল কলেজগুলোর হোস্টেলে তাঁরা ঢুকে পড়েছেন। দেশটিতে পড়তে যাওয়া নারীদের ওপরও নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। শহরজুড়ে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

এ ঘটনার পর বিশকেকে অবস্থান করা পাকিস্তানি নাগরিকদের ঘর থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল শনিবার পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কিরগিজস্তান থেকে পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি বিশেষ ফ্লাইট দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরের একটি বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। সহিংসতার পর পাকিস্তানি নাগরিক যাঁরা দেশে ফিরতে চান, তাঁদের জন্য এমন আরও ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে বলে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এ ঘটনার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের সুস্থতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা তদারকি করতে অবিলম্বে তিনি জ্যেষ্ঠ এক মন্ত্রীকে বিশকেকে পাঠাচ্ছেন।

এদিকে কিরগিজস্তানে মিসরের কয়েকজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির সংঘর্ষের জেরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। সেখানে নিরাপত্তাহীনতা আর অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে বাংলাদেশের অন্তত ৮০০ মেডিকেল শিক্ষার্থীর। মধ্য এশিয়ার দেশটিতে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস নেই। তবে উজবেকিস্তানে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাস কিরগিজস্তানের দায়িত্ব পালন করে থাকে। দেশটিতে থাকা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দূতাবাস সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে। এ ছাড়া দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে।

জানতে চাইলে উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, কিরগিজস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ছাড়া কোনো বাংলাদেশির আহত বা নিহত হওয়ার কোনো তথ্য এখনো নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বাসা থেকে বের না হতে বলা হয়েছে। তবে আবারও সহিংসতা হয় কি না, সে আতঙ্ক রয়েছে।’ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করা হচ্ছে—জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরাও সরাসরি ফোন করছেন। সার্বক্ষণিকভাবে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একটি নম্বর চালু রয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button