Bangladesh

গায়েবি রায় দিচ্ছে আদালত: আইনজীবী ফোরামের সংবাদ সম্মেলন ঢাকায় দুই মাসে বিএনপি’র ২৭১ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড

এতোদিন পুলিশ গায়েবি মামলা করতো। এখন আদালতও গায়েবি রায় দিচ্ছে। মৃত এবং গুম ব্যক্তিদেরও দেয়া হচ্ছে কারাদণ্ড। এ মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)র আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

গতকাল সুপ্রিম কোর্ট বারের দক্ষিণ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, রূহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি আব্দুল জব্বার ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী মো: কামরুল ইসলাম সজল, ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের সমন্বয়ক সৈয়দ মামুন মাহবুব, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহ-সভাপতি জগলুল হায়দার আফ্রিকসহ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আরো বলেন, কোনো আদালত মৃত ও গুম হওয়া ব্যক্তির নামে রায় দিয়েছে, বিশ্বে এমন কোনো নজির নেই। পুলিশ এতোদিন গায়েবি মামলা করতো। এখন দুঃখজনকভাবে নিম্ন আদালতের কিছু কিছ কোর্ট গায়েবি রায় দিচ্ছে।

ইংরেজিতে একটি কথা আছে, জাস্টিস হারিড ইজ জাস্টিস বারিড। এ কথাটা যদিও অনেক আগে বিখ্যাত একজন বলেছিলেন। কিন্তু এখন বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অক্ষরে অক্ষরে প্রযোজ্য। যখন একজন ল’ইয়ার তার ক্লায়েন্টকে ডিফেন্ড করবেন, সেজন্য সময়, সুযোগ এবং লিগ্যাল প্রসিডিউর মেন্টেইন করা উচিৎ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিচারিক আদালত সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে। অর্থাৎ ওনারা তড়িঘড়ি করে মনে হচ্ছে কারো নির্দেশে এ রায়গুলো দিচ্ছেন। আইনি সহায়তা অব্যাহত আছে। কিন্তু বিচারের বানী আজ নিভৃতে কাঁদছে। আমাদের আইনজীবীরা পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছেন না। একতরফা রায়গুলো হচ্ছে রাজনৈতিক বিবেচনায়।

বিএনপি’র আইন বিষয়ক সম্পাদক বলেন, গত ২ মাসে ঢাকার আদালতে ২১টি রাজনৈতিক মামলায় বিএনপির ২৭১ জন নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। গত ১ বছরে ২৯টি মামলায় ৩০৪ জন নেতাকর্মীকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। চার বছর আগে মারা যাওয়া বিএনপি নেতা আবু তাহের দাইয়া এবং ১০ বছর আগে গুম হওয়া সাজেদুল ইসলাম সুমন, ৮ বছর আগে গুম হওয়া আমিনুল ইসলাম জাকিরকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আইনজীবী হিসেবে সাজা প্রদানকৃত প্রতিটি মামলা পর্যালোচনায় আমরা দেখতে পেয়েছি, সাজাপ্রাপ্ত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে কোনোরূপ অপরাধের সংশ্লিষ্টতা নেই। কোনো ফৌজদারি অপরাধ প্রমাণ করতে হয় সাক্ষ্য-প্রমাণ দ্বারা। অধিকাংশ মামলায় সাক্ষী হিসেবে শুধু পুলিশ সদস্যকে হাজির করিয়ে সাজা প্রদান করা হয়েছে। কোনো নিরপেক্ষ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি ফৌজদারি কার্যবিধিতে বর্ণিত বিচারিক স্তরসমূহও অনুসরণ করা হয়নি। ফলে যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই তড়িঘড়ি করে বিএনপির নেতাদের সাজা দেয়া হয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button