গৌরনদীতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলায় আহত ১০
বরিশাল বিভাগীয় রোডমার্চে যোগ দিতে যাওয়ার পথে বরিশালের গৌরনদীতে যুবদল ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের বহনকারী গাড়ি বহরের ওপর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র নেতা-কর্মীদের অতর্কিত হামলার ঘটনায় বরিশাল (উত্তর) জেলা যুবদল নেতা সেন্টু খান ও ভিপি বাদলসহ কমপক্ষে ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। গুরুতর আহত জেলা যুবদল নেতা সেন্টু খান একটি প্রাইভেট হাসপাতালে এবং ভিপি বাদল ও বিএনপি নেতা মহিম হাওলাদারকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত যুবদল নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, বরিশাল (উত্তর) জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইয়েদুল আলম খান সেন্টু’র নেতৃত্বে রোডমার্চে যোগ দিতে রওনা হওয়া একটি গাড়ী বহর শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-বরিশাল হাইওয়ের গৌরনদী বাসস্টান্ডে পৌঁছলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাদের গাড়ি বহরের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়।
এ সময় সন্ত্রাসীরা চাইনিজ কুড়াল, রামদা, দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও লাঠিশোটা নিয়ে যুবদল নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় যুবদল নেতা সাইয়েদুল আলম খান সেন্টু, কেএম আনোয়ার হোসেন বাদল (ভিপি বাদল), বিএনপি নেতা মহিম হাওলাদার, যুবদল কর্মী আজিজুল সরদার, স্বপন হাওলাদার, কামাল বেপারী, সাঈদ ফকির, মনির খলিফা, মামুন হাওলাদার, মিঠু খলিফা আহত হয়।
যুবদল নেতা সেন্টু খান ও ভিপি বাদল অভিযোগ করেন, হামলাকারী সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের। তাদের চাইনিজ কুড়াল সহ অন্যান্য ধারাল অস্ত্রের আঘাতে সবাই কমবেশি আহত হয়েছে। এমনকি গৌরনদী উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মহিম হাওলাদারকে এলাপাতাড়ি পিটিয়ে একটি পা ভেঙ্গে দিয়েছে সন্ত্রাশীর।
তবে এ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা। গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচ, এম জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির কর্মসূচিতে যোগদানকারীদের বাধা দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত’ আমাদের দলের ছিল না। হামলার কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে কোনো ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহাবুব আলম ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান দীপ যুবলীগের কোনো নেতাকর্মীর এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা নেই বলে সাংবাদিকদের বলেছেন। তাদের মতে, যুবদলের আভ্যন্তরীণ কোনো দ্বন্দ্বের কারণে নিজেদের মধ্যে মারামারির এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
এদিকে দলের রোডমার্চ কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার পথে যুবদল ও বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলাকালে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের নির্লিপ্ততাকে দায়ী করে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও গৌরনদীর সাবেক এমপি এম. জহির উদ্দিন স্বপন।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন, মতপ্রকাশ, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনায় বাধা প্রদানের অপরাধে মার্কিন প্রশাসন যেদিন সরকারি দলের নেতৃত্ব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, বিচার বিভাগসহ দায়িত্বশীলদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ঠিক তার ১২ ঘণ্টার মাথায় গৌরনদীতে সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের এ তা-বলীলা প্রমাণ করে কি ভয়ঙ্কর বিভীষিকাময় রাজনৈতিক পরিবেশ বিরাজমান।
বিবৃতিতে তিনি স্থানীয় প্রশাসনের বিরামহীন নির্লিপ্ততায় গৌরনদী-আগৈলঝাড়া উপজেলার সমগ্র অঞ্চল আজ সাধারণ মানুষ ও বিরোধী মতের মানুষদের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলেও দাবি করেন। জহির উদ্দিন স্বপন, দেশের গণমাধ্যমে কর্মীদের প্রতি গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় গত একযুগে লাগাতার সন্ত্রাসের সচিত্র প্রতিবেদন তৈরি করে সমগ্র জাতিসহ গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন।