Bangladesh

ডামি প্রার্থীরা গলার কাঁটা: ভোটের আগে জয়ের ‘গ্যারান্টি’ পাচ্ছেন না পরজীবী নেতারা

২০১৪ সালের মতো ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি’ হওয়া ঠেকাতে ডামি প্রার্থীরা বিপাকে ফেলেছে ক্ষমতাসীন দলকে। একদিকে ছোট দলের বড় বড় অনুগত নেতারা ‘আসন ভাগাভাগি’র নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে জাতীয় সংসদে ‘নাচের পুতুল’ খ্যাত জাতীয় পার্টির ‘ভাগে পাওয়া আসনের’ প্রার্থীরা ভোটের আগে বিজয় নিশ্চিত হতে পারছেন না। এমনকি অনেক আসনের নৌকার প্রার্থীর জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মূর্তমান আতঙ্ক হয়ে উঠেছেন
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিতর্কের ‘ক্ষত’ শুকায়নি। দেশ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ‘বিনাভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি’ চরম দুর্নামের জন্ম দেয়। এবারও বিএনপিসহ অর্ধশতাধিক দলের বর্জনের মধ্যে আয়োজিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাতে কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে না পারেন সে লক্ষ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে ডামি প্রার্থী রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। এতে করে নৌকার প্রার্থী হতে পারেননি এমন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী কয়েকশ’ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন। এখন আওয়ামী লীগের এই ডামি (স্বতন্ত্র) প্রার্থীরাই গলার কাঁটা হয়ে গেছেন। ১৪ দলীয় জোটের শরীক দলের পরজীবী বড় নেতা এবং গৃহপালিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতা যাদের আসন সমঝোতার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তাদের ‘ভোটের আগেই বিজয়ের নিশ্চয়তা’ দিতে পারছেন না। কারণ নৌকার প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিতে আওয়ামী লীগের সমস্যা না হলেও দলের ওই প্রভাবশালী ডামি প্রার্থীদের চাপ দিতে পারছে না। ওই সব প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে যেতে অস্বীকার করছেন। এদের অনেকেই আদালতের মাধ্যমে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। আর দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ওই সব ডামি প্রার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারছে না। ফলে রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নজিবুল বশর মাইজভা-ারীর মতো পরনির্ভরশীল নেতাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে সংকটে পড়তে হচ্ছে। যদিও রাশেদ খান মেনন ‘যেখানে নাচাবে সেখানে নাচব’ নীতি গ্রহণ করে তিন বারের এমপি হওয়া ঢাকার আসন ছেড়ে দিয়ে বরিশালে নির্বাচন করবে জানিয়েছেন। তবে অন্যরা আগের আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন। হাসানুল হক ইনুকে কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থী চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। এ ছাড়াও কল্যাণ পার্টি, তৃর্ণমূল বিএনপির পল্টি দেয়া নেতাদের আসনে ‘বিজয়ের নিশ্চয়তা’ দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আর গণবিচ্ছিন্ন জাতীয় পার্টির সুবিধাবাদী নেতারা চরম আতঙ্কে পড়ে গেছেন। এ জন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তিন দফা বৈঠকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব জানিয়েছে সমঝোতার আসনে নৌকা প্রার্থীর পাশাপাশি ডামি (স্বতন্ত্র) প্রার্থী তুলে নিতে হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই ডামি প্রার্থীদের তুলে নিতে পারছেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নৌকার প্রার্থীদের ব্যপারে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিতে পারলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে উঠিয়ে নেয়ার দায়িত্ব নিতে পারবে না।

বিএনপির ‘নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অবরোধ-হরতালের’ মধ্যেই কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তিনি তার আগের কে এম নুরুল হুদা ও কাজী রকিবউদ্দিনের পথ ধরেছেন। এ অবস্থায় আর্ন্তাজিত সম্প্রদায়কে ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন’ দেখাতে এবার ২০১৪ সালের মতো কেউ যাতে ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে না পারে’ সে লক্ষ্যে দলের নেতাদের ডামি প্রার্থী রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। এমনও বলা হয়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ নির্বাচিত হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। এর মধ্যে গত ২৬ নভেম্বর আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮টি আসনে ‘নৌকার’ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে। এর আগে একই দিনে দলীয় ৩৩৬২ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর সঙ্গে বৈঠক করে বিভিন্ন আসনে ‘ডামি’ প্রার্থী দেওয়ার নির্দেশনা দেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে শেখ হাসিনা অনেক আসনে ‘ডামি’ প্রার্থীদের দাঁড়ানোর বিষয়ে নির্দেশনা দেন। যাকে ‘সবুজ সংকেত’ মেনে নিয়ে নির্বাচনী মাঠ গরম করতে শুরু করেন আওয়ামী লীগের ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থীরা। ওই সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, যেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ নির্বাচিত হতে না পারে। সে ক্ষেত্রে একাধিক ডামি প্রার্থী রাখতে মত দেন দলীয় প্রধান। এতে করে সারাদেশের আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে ডামি প্রার্থী হওয়ার হিড়িক পড়ে যায়।

ইসির তথ্য অনুযায়ী এবার ৩০০ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছিল ২৭১৬টি। এর মধ্যে বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা বাতিল করেছেন ৭৩১টি (২৬ দশমিক ৯২ শতাংশ)। আর বৈধ হয়েছে ১৯৮৫টি মনোনয়নপত্র (দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রের ৭৩ দশমিক ০৮ শতাংশ)। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৫৬১টি আপিল আবেদন জমা পড়েছিল। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানি করে আপিল আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন। তবে আপিলে গতকাল পর্যন্ত ২৫৭ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

র্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, এবার রেকর্ড সংখ্যক ৭৪৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। এর বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা। যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন ৪২৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এরপরও ৩২৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত বর্তমান সংসদ সদস্যদেরও অনেকে আছেন। আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থী (স্বতন্ত্র প্রার্থী) কৌশলে ক্ষুদ্ধ হয়েছে ক্ষমতাশীন দলের শরিক দলগুলো ও অনুগত বিরোধী দল খ্যাত জাতীয় পার্টি। কারণ বিগত পাতানো নির্বাচনগুলোতে তাদের যে সব আসন ছেড়ে দেয়া হয়েছিল সে আসনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়িয়ে গেছে। ১৪ দলের নেতাদের এর পরই মাথা ব্যাথা শুরু হয়। তাঁরা বিষয়টি ১৪ দলীয় জোটের জোট নেত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন। বায়না ধরেছেন তাদের আসনে ডামি প্রার্থী রাখা যাবে না। তবে দীর্ঘ দেন-দরবারের পর অনুগত ১৪ দলীয় জোটের নেতারা ৩০টি আসন দাবি করেছে। এত আসন দিতে নারাজ আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে শরিক দলগুলো যে নির্বাচনে পাস করার নিশ্চয়তা চাচ্ছে, সে বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। শরিকদের ৫ নেতাকে ৫টি আসন ছাড় দেওয়ার বিষয়ে ইতোমধ্যেই সম্মত হয়েছে আওয়ামী লীগ। এসব আসনের মধ্যে রাজশাহী-২ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, কুষ্টিয়া-২ আসনে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বরিশাল-২ অথবা বরিশাল-৩ আসনে রাশেদ খান মেনন, পিরোজপুর-২ আসনে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, চট্টগ্রাম-১ আসনে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী রয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকা-১৪ আসনে জেপি (মঞ্জু) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে তৃণমূল বিএনপির তৈমূর আলম খন্দকার, সিলেট-৬ আসনে শমসের মবিন চৌধুরীকে বিশেষ ছাড় দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। কক্সবাজার-১ আসন কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে দেয়া হতে পারে। কিন্তু কোনো আসন থেকেই ডামি প্রার্থীরা সরে যেতে চাচ্ছেন না। এমনকি নারায়ণগঞ্জ-১ আসন নিয়ে এখনো জটিলতা কাটেনি। সেখানে বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী নৌকার প্রার্থী হয়েছেন।

এদিকে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে আসন সমঝোতা (তাদের ভাষায় জোট) না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে বিশ্বাস করা যায় না। বর্তমান একাদশ সংসদে জাপার আসন রয়েছে মোট ২৬টি। এর মধ্যে ২২ জন সরাসরি নির্বাচিত আর ৪ জন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য। এবার জাপা ৫০ টির বেশি আসনে ছাড়ের দাবি করলেও আওয়ামী লীগ প্রথমে ২০টি ও পরে প্রায় ৩০টি আসন ছাড় দিতে রাজি হয়েছে। জাপার প্রস্তাব অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ যে কয়টি আসনে ছাড় দেবে, সেগুলোতে ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী রাখা হবে না। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু তিন দফায় বৈঠক করেন। বৈঠকে জাতীয় পার্টির প্রত্যাশিত আসন দিতে অপরাগতা প্রকাশ করা হয়। তবে ২০ থেকে ৩০ আসন দেয়া হবে এমন জানানো হয়। জাতীয় পার্টি থেকে দাবি করা হয় সমঝোতা করে যে সব আসন লাঙ্গলের প্রার্থীদের দেয়া হবে সে সব আসনে নৌকার প্রার্থী ছাড়াও আওয়ামী লীগের যারা ডামি প্রার্থী হয়েছেন তাদের মনোয়ন প্রত্যাহার করে নিতে হবে। কিন্তু জাপা থেকে জানানো হয় তারা নৌকার প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন তবে ডামি প্রার্থীদের ব্যাপারে তাদের করার কিছু নেই।

১৪ দলীয় জোটের ছোট দলের অনুগত নেতা এবং আওয়ামী লীগের একান্ত অনুগত জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতার আসন ছেড়ে দিলেও ভোটের আগে আগাম ‘নির্বাচিত হওয়ার নিশ্চয়তা’ দিতে পারছেন না আওয়ামী লীগ। কারণ পরজীবী দলগুলোকে সমঝোতার আসন ছেড়ে দেয়া হলেও ডামি প্রার্থীদের সঙ্গে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। শুধু গণবিচ্ছিন্ন সুবিধাবাদী দলগুলোর নেতারাই নয়, আওয়ামী লীগ মনোনীত অনেক নৌকার প্রার্থীর গলার কাঁটা হয়ে গেছেন ডামি প্রার্থীরা। কারণ প্রায় অর্ধশতাধিক আসনে আওয়ামী লীগ থেকে যারা নৌকার প্রার্থী হতে পারেননি এবং দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডামি প্রার্থী হয়েছেন তারা খুবই শক্ত অবস্থানে। গাজীপুর-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকির বিপরীতে ডামি প্রার্থী হয়েছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারুজ্জামান। সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী আবদুল মমিন ম-লের প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস। চট্টগ্রাম-১, আসনে মাহবুব রহমান রুহেল নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনজুর আলম চট্টগ্রাম-১০, আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পর আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন বাচ্চুর জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম-১১ আসনে নৌকার প্রার্থী এম এ লতিফের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন, তার পক্ষ নিয়েছে নগর আওয়ামী লীগের একটি অংশ। চট্টগ্রাম-১৫ আসনে নৌকার আবু রেজা মো. নেজামুদ্দীন নদভীকে চ্যালেঞ্জ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম এ মোতালেব। চট্টগ্রাম-১৬, আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান। রাজশাহী-৪, আসনে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য এনামুল হক। সাতক্ষীরা-২, আসনে নৌকা না পেয়ে দলীয় প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবুর বিরুদ্ধে লড়াই করবেন দুইবারের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। যশোর-৪, আসনে মনোনয়ন না পেলেও ভোটের ময়দান ছাড়েননি সংসদ সদস্য রণজিত রায়। তার লড়াই হবে নৌকার এনামুল হক বাবুলের সঙ্গে। বরিশাল-৫, আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পনিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম বিপক্ষে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী। ভোলা-৩, আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন ২০০৮ সালে নৌকা নিয়ে এমপি হওয়া জসিম উদ্দিন। পটুয়াখালী-২, আসনের সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের নৌকার বিপক্ষে লড়বেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হাসিব আলম তালুকদার। ফরিদপুর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে নৌকার শামীম হককে প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যবসায়ী নেতা এ কে আজাদ, ময়মনসিংহ-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী নীলুফার আনজুম পপির প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ, হবিগঞ্জ-২ আসনে নৌকার ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েলের বিরুদ্ধে তিনবারের সংসদ সদস্য আব্দুল মজিদ খান, সুনামগঞ্জ-১ আসনে নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-২ আসনে নৌকার প্রার্থী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বিপক্ষে ডাকসাইটে রাজনীতিক সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী সাবেক এমপি জয়া সেনগুপ্ত প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়াও আরো অনেকগুলো আসনে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে ডামি হিসেবে নির্বাচনে নেমেছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এ ধরনের পাতানো নির্বাচন গণতান্ত্রিক শাসনের সঙ্গে কোনোভাবেই যায় না। গণতান্ত্রিক যাত্রাপথের সূচনা হয় একটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে। পুতুল পুতুল খেলার মতো নির্বাচন দেশের মানুষ চায় না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button