Bangladesh

দক্ষদের চাহিদা শ্রমবাজারে: সউদী গমনেচ্ছু ৩৩ ক্যাটাগরির কর্মীদের ট্রেনিং বাধ্যতামূলক নতুন নতুন মেগা প্রকল্প নেয়ায় মালয়েশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে দক্ষ কর্মীদের চাহিদা :: শ্রমবাজার-বান্ধব কর্মী গড়তে পারলে রেমিট্যান্সের পালে লাগবে সুবাতাস :: আমাদের কর্মীরা সারা জীবন অদক্ষ হয়ে বিদেশে যাক এমনটা চাই না : প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী

অদক্ষকর্মী কর্মক্ষেত্রের জঞ্জাল। বিশ্বের দেশে দেশে প্রতিটি সেক্টরে দক্ষকর্মীর বেতন ও চাহিদা বেশি। বাংলাদেশের লাখ লাখ অদক্ষকর্মী সউদী আরব, মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কাজ করছে। কিন্তু এসব অদক্ষকর্মীর চাহিদা ক্রমান্বয়ে কমে এসেছে। জনশক্তি রফতানির প্রধান দেশ সউদী আরব ধীরে ধীরে অদক্ষ কর্মী নিয়োগ কমিয়ে দিচ্ছে। দেশটি এখন কর্মক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত কর্মী নেয়ার দিকে ঝুঁকেছে। জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে পর্যটন খাত ও ব্যবসায় খাতকে চাঙ্গা করতে রাজকীয় সউদী সরকার ভিশন-২০৩০ উন্নয়নের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। নিওম সিটির অধীনে দেশটির ৭টি মেগা প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। আগামীতে দেশটিতে দক্ষ কর্মীর চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। সউদী আরবের মতো মালয়েশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোও অদক্ষ শ্রমিক নেয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

জানা গেছে, আগামী ২০২৪-২০২৬ সালে নতুন নতুন মেগা প্রকল্প চালু হলে প্রচুর দক্ষ অভিবাসী কর্মীর প্রয়োজন পড়বে। বাংলাদেশ এসব মেগা প্রকল্পে দক্ষ জনশক্তি প্রেরণের উদ্যোগ নিলে আগেভাগেই ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হবে। দক্ষকর্মী নিয়োগের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই সউদী গমনেচ্ছু ৩৩ ক্যাটাগরির কর্মীর ট্রেনিং বাধ্যতামূলক ঘোষণা দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোতে দক্ষ কর্মীর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। মালয়েশিয়ায়ও প্রচুর দক্ষ কর্মীর চাহিদা রয়েছে। দক্ষকর্মী প্রেরণের সংখ্যা বাড়াতে পারলে রেমিট্যান্সের পালেও সুবাতাস লাগবে।

জানতে চাইলে বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম বলেন, গত ২৫ জুলাই সউদী দূতাবাস এক চিঠিতে সউদী গমনেচ্ছু কর্মীদের ৩৩টি ক্যাটাগরির ট্রেনিং বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে। তারা বিএমইটির প্রাথমিকভাবে তিনটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)-কে ট্রেনিং দেয়ার জন্য অনুমোদন দিয়েছে। আমরা সউদী কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তকে (ট্রেনিং বাধ্যতামূলক) স্বাগত জানাই। দক্ষ হয়ে বিদেশ গেলে অর্থ-সম্মান দু-ই মেলে।

মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বায়রা কর্তৃপক্ষ ঢাকার অদূরে গাজীপুরের কড্ডায় ২০ বিঘা জমির ওপর আন্তর্জাতিক মানের ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণের কাজ জোরেশোরে শুরু করেছে। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে উল্লেখিত ট্রেনিং সেন্টার উদ্বোধন করা হবে বায়রার যুগ্ম মহাসচিব এম টিপু সুলতান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিএমইটির টিটিসিগুলো আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নয়। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা এবং রেমিট্যান্স খাতকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে এসব টিটিসিাকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বহির্বিশ্বের সাথে পাল্লা দিয়ে সউদী সরকার তার দেশকে উন্নয়নের শীর্ষ পর্যায়ে নিতে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দেশটিকে অর্থনৈতিকভাবে আরো সাবলম্বী এবং বিশ্ব মানদ-ের শিখরে নিতে জোরেশোরে কার্যক্রম শুরু করেছে। অর্থনীতির গতিকে আরো চাঙ্গা করতে নতুন নতুন মেগা প্রকল্প নির্মাণের কাজ চলছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অনেক দক্ষ টেকনেশিয়ান কর্মী এসব মেগা প্রকল্পে কাজ করছে। অভিবাসী কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সময় সাশ্রয় ও কাজের নিশ্চয়তার লক্ষ্যে দক্ষকর্মী চাচ্ছে দেশটি। মেগা প্রকল্পগুলো চালু হলে এর পরিচালনায় সুফল পেতে সউদী সরকার দক্ষকর্মী নিতে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে। মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোও দক্ষ অভিবাসী নিয়োগে বেশি আগ্রহী। দক্ষকর্মী প্রেরণের সংখ্যা বাড়াতে পারলে রেমিট্যান্স খাতেও অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হবে। বায়রার একাধিক সূত্র এ অভিমত ব্যক্ত করেছে।

সউদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্য হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। সউদী সরকার দক্ষ কর্মীর চাহিদা পূরণে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নিচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ কর্মীর পরিবর্তে বেশি বেশি দক্ষকর্মী নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে সউদী সরকার। সোর্সকান্ট্রি হিসেবে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে সউদী কর্তৃপক্ষ দুইধাপে ৩৩টি ক্যাটাগরির কর্মীদের ট্রেনিং বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে। ঢাকাস্থ রাজকীয় সউদী দূতাবাস গত ২৫ জুলাই এক জরুরি চিঠিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিএমইটিকে উল্লেখিত কর্মীদের ট্রেনিংয়ের বিষয়টি বাধ্যতামূলক করার জন্য সুস্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যে মাত্র তিনটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)-কে অনুমোদনও দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারও সউদী গমনেচ্ছু কর্মীদের ট্রেনিং বাধ্যতামূলক ঘোষণা করায় স্বাগত জানিয়েছে।

এদিকে, ট্রেনিং বাধ্যতামূলকের নিদের্শনা জারি হওয়ায় বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সিতে শত শত সউদীগামী ভিসা আটকা পড়েছে। এতে এজেন্সিগুলো বিপাকে পড়েছে। সউদী সরকার যেসব ক্যাটাগরির ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করেছে তা হচ্ছে- খনির ছাদস্থাপক, খননকর্মী, বিধ্বংসীকর্মী, নির্মাণকর্মী, কাদা ও সূতককর্মী, ইট প্রস্তুতকর্মী, শাড়ী প্রস্তুতকারী, পাথর প্রস্তুতকারী, ঢালাইকারী, নির্মাণ শ্রমিক, মোজাইক স্থাপনকারী, সিমেন্ট ছাদ ঢালাইকারী, নির্মাণ সামগ্রীকর্মী, ধাতব ছাদ স্থাপনকারী, শ্রমিক, কাঠ ও মাটির ছাদশ্রমিক, ভাপ নির্মাণ শ্রমিক, ছাদকর্মী, কাঠের ফ্লোর স্থাপনকারী, পাকা করার শ্রমিক, ব্যবহৃত টায়ার পুনঃপ্রস্তুতকারী, মোজাইক মিক্সারকর্মী, যানবাহনের গ্লাস ঠিককারী, টায়ার যৌগ নির্মাণকারী, প্লাস্টারার, গাড়ী মেকানিক, বাস মেকানিক, মোটরসাইকেল মেকানিক। এছাড়া গত ২৯ মে চিঠি অনুযায়ী ইলেক্ট্রিসিটি, প্লাম্বিং, অটো মেকানিক, রেফ্রিজারেশন এবং এয়ার কন্ডিশন্ড মেকানিক।

সউদী গমনেচ্ছু লাখ লাখ কর্মীকে ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করতে হলে বিপুল সংখ্যক কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে (টিটিসি) যথাযথ মানসম্পন্ন এবং অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। উল্লেখিত ক্যাটাগরির কর্মীদের ট্রেনিং দিয়ে দেশটিতে পাঠাতে পারলে কর্মস্থলে বেতন দ্বিগুণ এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। বিএমইটির কর্তৃপক্ষ এমনটিই আশা করছেন।

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ ইনকিলাবের সাথে আলাপকালে সউদী ঘোষিত ৩৩ ক্যাটাগরির কর্মীর ট্রেনিং বাধ্যতামূলকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অদক্ষ কর্মীর চেয়ে দক্ষ কর্মীর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আমাদের কর্মীরা সারা জীবন অদক্ষ হয়ে বিদেশে যাক এমনটা চাই না। বহির্বিশ্বের চাহিদা সামনে রেখে আমরাও বেশি বেশি দক্ষকর্মী পাঠাতে চাই। দক্ষকর্মী পাঠাতে পারলে দেশের রেমিট্যান্স খাতে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হবে।

মাধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার কেন্দ্রিক দেশগুলোতে অদক্ষ কর্মীর চাহিদা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারত, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়া বিভিন্ন ট্রেডের টেকনেশিয়ান ও দক্ষকর্মীরা মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার দখল করে নিচ্ছে। এসব দেশের দক্ষকর্মী বাংলাদেশি কর্মীদের তুলনায় প্রতিমাসে দ্বিগুণ মজুরি আয় করছেন। অথচ বাংলাদেশের শ্রমিকদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের উদ্যোগ নেই। সউদী, দুবাই, কাতার, ওমান, কুয়েত, বাহরাইন, মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি অধিকাংশ কর্মী অদক্ষ এবং লেবার শ্রেণির কর্মী। তারা অদক্ষ হওয়ায় মজুরিও পাচ্ছে কম। বিদেশের শ্রমবাজারগুলোতে দক্ষকর্মী প্রেরণের সংখ্যা বাড়াতে পারলে রেমিট্যান্স আয়ের খাত আরো বেশি চাঙ্গা হতো।

ওদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সউদী আরবে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। তাদের এ অভিযানে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে বিভিন্ন অপরাধে ১৫ হাজারের বেশি অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে। সউদীর সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ জানিয়েছে, রেসিডেন্সি, কাজ ও সীমান্ত নিরাপত্তা আইন ভঙ্গ করার অভিযোগে এক সপ্তাহে এত সংখ্যক অভিবাসীকে ধরা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি আরো জানিয়েছে, গত ১০ থেকে ১৬ আগস্টের মধ্যে ১৫ হাজার ২৪৫ জনকে আটক করা হয়। এরমধ্যে ৮ হাজার ৫৩৯ জন রেসিডেন্সি আইন ভঙ্গ, ৪ হাজার ২৫৩ জনকে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের প্রচেষ্টা এবং বাকি ২ হাজার ৪৫৩ জনকে আটক করা হয়েছে কাজ সংক্রান্ত বিষয়ে। সউদী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে বলেছে, যদি কোনো ব্যক্তি অন্যকে সউদীতে অবৈধভাবে প্রবেশ, অবস্থান ও পরিবহনে সহায়তা করে তাহলে উক্ত ব্যক্তির সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদ- হতে পারে। দ-ের সঙ্গে ১০ লাখ সউদী রিয়াল জরিমানা অথবা গাড়ি ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে। আটককৃত এসব অভিবাসী কর্মীকে সউদী অভিবাসী আইনের আওতায় সাজাভোগ করে স্ব স্ব দেশে ফেরত পাঠানো হবে। দেশটির সামাজিক নিরাপত্তা সুরক্ষা এবং অনিয়মিত অভিবাসীদের সংখ্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে এসব অভিবাসীকে আটক করেছে। দেশটির বিভিন্ন কারাগারে অনেক বাংলাদেশি আটক রয়েছে। তারা দেশে ফেরার অপেক্ষায়। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পেও বেশ কিছু বাংলাদেশি কারাভোগ করছেন। আইনি সহায়তা পেলে আটক বাংলাদেশিরা দেশে ফেরার সুযোগ পাবে বলে একাধিক সূত্র আশবাদ ব্যক্ত করেছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতও বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার। দেশটিতে লাখ লাখ নারী-পুরুষ কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছেন। অতিসম্প্রতি দেশটির কর্তৃপক্ষ অভিবাসী কর্মীদের ওয়ার্ক পারমিটে সুখবর দিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মীরা এখন থেকে তিন বছরের ওয়ার্ক পারমিট (কাজের অনুমতি) পাবে। দেশটির কর্তৃপক্ষ নতুন এ নিয়মের ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে আমিরাতে একজন কর্মী দুই বছরের ওয়ার্ক পারমিট পেতো। ফেডারেল ন্যাশনাল কাউন্সিলের অনুমোদনের পর দেশটি থেকে এ সিদ্ধান্ত এল। অ্যারাবিয়ান নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে। মূলত সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজ করতে হলে বৈধ ওয়ার্ক পারমিটের প্রয়োজন হয়।
অপরদিকে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম গতকাল সোমবার ইনকিলাবকে জানান, বিদেশে ড্রাইভারের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। গত অর্থবছরে বিআরটিসির সারাদেশে ২৪টি ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে প্রায় ২৪ হাজার যুবককে ড্রাইভিং শিক্ষা দিয়ে দক্ষ করে তুলেছে। এদের অধিকাংশই বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে। পশ্চিমা দেশে যেসব স্টুডেন্ট পড়াশুনার জন্য যাচ্ছে তাদের অধিকাংশই বিআরটিসির ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে ড্রাইভিং শিখে যাচ্ছে। ড্রাইভিং-এর পাশাপাশি টেকনিক্যালও শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। চলতি অর্থ বছরে ২৪টি ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে ৩০ হাজার যুবককে ড্রাইভিং শিক্ষার টার্গেট নেয়া হয়েছে। গাড়ী চালানোর ওপর দক্ষতা অর্জন করে এসব যুবক বিদেশে ভালো মজুরিতে চাকরি লাভের সুযোগ পাচ্ছে বলেও চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন।

বিএমইটির সূত্র জানায়, গত জানুয়ারি থেকে গত ১৬ আগস্ট পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৮ লাখ ১৪ হাজার ৮১১ জন দক্ষ-অদক্ষ নারী-পুরুষ চাকরি নিয়ে গেছেন। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টের প্রথম ১১ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে ৬৯ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। এতে দৈনিক রেমিট্যান্স আসছে ৬ কোটি ৩১ লাখ মার্কিন ডলার (টাকার হিসাবে ৬৯০ কোটি)। গত ১৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, সউদী আরবে বাংলাদেশি অদক্ষ ন্যূনতম বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ মাসিক বেতন ৭৫০ সউদী রিয়াল এবং ৯৫০ রিয়াল। দেশটিতে দক্ষকর্মী প্রেরণ করতে পারলে মাসিক মজুরি দ্বিগুণ পাওয়া সম্ভব বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। একশ্রেণির অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সি সউদীতে ভালো চাকুরি ও বেতনের নামে শত শত অদক্ষ বাংলাদেশি কর্মীকে রিয়াদের আবদ্ধ রুমে নিয়ে আটকে রেখেছে। মাসের পর মাস তাদের শর্তানুযায়ী কাজ ও ইকামা দিতে পারছে না এসব প্রতারক এজেন্সি। রিয়াদে অবরুদ্ধ অদক্ষ কর্মীরা অনাহার-অনিদ্রায় চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। কাজ নেই, ইকামা নেই, খাবারও পাচ্ছে না নিয়মিত। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কর্ম, আহার ও ইকামাহীন এসব প্রবাসী কর্মী আছে বেহাল অবস্থায়। হোটেলে কাজ দেয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। এসব প্রবাসীকর্মীর কাউকে কাউকে বাইরের কোম্পানিতে মাসে ১০ থেকে ৭ দিন পার্টটাইম কাজ দেয়া হলেও বেতন পাচ্ছে না। বাধ্য হয়েই অদক্ষ প্রবাসী কর্মী জনৈক সাকিল হোসেন বাধনের স্ত্রী সুমি গত ৫ জুলাই স্বামীর ন্যায্য অধিকার, যথাযথ কাজ, ইকামা, বেতন-আহার, নইলে চার লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করে তাকে দেশে ফেরত আনার দাবিতে কাকরাইলস্থ বিএমইটির মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ পেশ করে

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button