International

দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনার মধ্যে আসিয়ানের নেতৃত্বে লাওস

দক্ষিণ চীন সাগরে, চীন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এখন নিয়মিত সরাসরি সংঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। আর, মিয়ানমারে তিন বছর আগে ক্ষমতা দখল করা সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই এখন এমন এক মাত্রায় পৌঁছেছে যে- অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ বলছেন, দেশটিতে এখন গৃহযুদ্ধ অবস্থা বিরাজ করছে।

অনেকের উচ্চাশা ছিল, ২০২৩ সালে অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ-ইস্ট এশিয়ান নেশনস বা আসিয়ানের নেতৃত্বে থাকা ইন্দোনেশিয়া, এই সংগঠনের বৃহত্তম দেশ হিসেবে নিজেদের প্রভাবকে ব্যবহার করে উভয় সমস্যার একটি সমাধান বের করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারবে। তবে, এই বিষয়ে অগ্রগতি ছিল খুবই কম। বর্তমানে এই সংগঠনের সবচেয়ে দরিদ্র ও ছোট দেশগুলোর অন্যতম লাওস পালাক্রম অনুসারে আসিয়ানের নেতৃত্ব দেয়ার দায়িত্ব পেয়েছে।

সপ্তাহান্তে আসিয়ানের এই বছরের প্রথম শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়। লুয়াং প্রবাং-এ সমবেত হন আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। আসিয়ান তার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণ ঠেকাতে পারবে কিনা, তা নিয়ে অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন।

গত ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সু চি-র সরকারের কাছ থেকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে নেয়। এর পর, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আসিয়ান ‘পাঁচ দফা ঐক্যমত্য’ পরিকল্পনা নিয়ে আসে।

আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো হলো ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, ব্রুনেই ও লাওস।

মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্ব ওই পরিকল্পনাকে এখন পর্যন্ত উপেক্ষা করে আসছে। জাতিসঙ্ঘের মতে, দেশটিতে মানবিক সঙ্কট বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর, সহিংসতা বৃদ্ধির ফলে ২৬ লাখের বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

আসিয়ানের পরিকল্পনায়, অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ, সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মধ্যে সংলাপ অনুষ্ঠান ও আসিয়ানের বিশেষ দূতের মাধ্যমে মধ্যস্থতার আহবান জানানো হয়। এ ছাড়া, আসিয়ানের মাধ্যমে মানবিক ত্রাণ সরবরাহ ও সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে বিশেষ দূতের মিয়ানমার সফরও এই পরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্ত ছিল।

মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে, ইন্দোনেশিয়া একটি ত্রিপক্ষীয় পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করেছিল। ওই ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থার অংশ ছিল, বর্তমান সভাপতি ইন্দোনেশিয়া এবং পরবর্তী সভাপতি লাওস ও মালয়েশিয়া।

সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্নম স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ইন্সটিটিউট অফ ডিফেন্স অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সাথে যুক্ত মুহাম্মাদ ফাইজাল বলেন, আসিয়ানের সদস্য, লাওস হলো অন্যতম কমিউনিস্ট দেশ, যাদের সাথে বেইজিং-এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাই, মিয়ানমার সংঘাতের সমাধানে, চীনের সহায়তা নিতে লাওস আগ্রহী হয় কিনা, তা হবে একটি আগ্রহ সৃষ্টিকারী বিষয়।

এই অঞ্চলের দ্বীপ, সমুদ্রগর্ভের সম্পদ ও প্রবাল প্রাচীরের ওপর ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান ও ব্রুনেই এর নিজস্ব দাবি রয়েছে। ইন্দোনেশিয়াও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে- তাদের পানিসীমার এক্সক্লুসিভ ইকোনোমিক জোনে বেইজিং দখলদারিত্ব চালাচ্ছে।

গত ২০১২ সালে চীন ও আসিয়ান আচরণ বিধি বিষয়ক একটি ঘোষণায় সম্মত হয়। দক্ষিণ চীন সাগরে ‘মতবিরোধ ও বিতর্কের শান্তিপূর্ণ ও টেকসই সমাধানের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি শক্তিশালী’ করতে এই ঘোষণায় সম্মত হয়েছিল তারা। তবে, বর্তমানে এই ঘোষণার প্রতি তেমন সদিচ্ছা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor