Bangladesh

দণ্ড দিয়েই ঠান্ডা: বিএনপির দেড় হাজার নেতা-কর্মীর শাস্তি

সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহর আরেক নাম ‘আদল’। অর্থাৎ ন্যায়পরায়ণ বা ন্যায়বান। ‘আদল’ থেকে ‘আদালত’ শব্দের উৎপত্তি। যাকে বলা হয়, ‘ন্যায়ের স্থান’। আর আরবি ‘নিসফ’ শব্দের অর্থ অর্ধেক। ‘ইনসাফ’ অর্থ সমান দুই ভাগ। বেশি কিংবা কম নয়। ন্যায়ের স্থানে ইনসাফ মিলবে এটি ‘সভ্যসমাজ’ দাবিকারীদের ন্যূনতম প্রত্যাশা। দেশের আদালতে ন্যায়বিচার মিলবে-নাগরিক মাত্রই এ প্রত্যাশা। বিদ্যমান বিচারব্যবস্থার প্রতিশ্রুতিও সেটি। কিন্তু আজকের বাস্তবতা কি? আদালতগুলোতে মামলার পাহাড়। বিভিন্ন পর্যায়ে জট লেগে আছে ৪০ লাখেরও বেশি মামলা। অধিকাংশ মামলাই পড়ে আছে বছরের পর বছর। এটিকে ‘স্বাভাবিক ঘটনা’ জ্ঞানে চেপে রেখে কুৎসিতরকম দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে বিপরীত চিত্র। ঝটপট সেরে ফেলা হচ্ছে ‘বিচার’। রাত নেই, দিন নেইÑ ঘোষিত হচ্ছে মামলার ‘রায়’। ‘বিচার’ নামক কার্যক্রমের অধিকাংশ শর্ত অপূর্ণ রেখে দেয়া হচ্ছে দণ্ডাদেশ।

বলাবাহুল্য, এই দণ্ডাদেশ আসছে কেবলমাত্র সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। ফৌজদারি আইনে ‘রাজনৈতিক মামলা’ বলে কিছু নেই। কিন্তু মামলার রাজনৈতিক ব্যবহারই ‘রাজনৈতিক মামলা’ শব্দের যথার্থতা নিশ্চিত করেছে। আইনজ্ঞদের মতে, প্রথমে মামলাকে রাজনীতিকায়ন করা হয়েছে। পরে সেই মামলার বিচারেও দেখা যাচ্ছে রাজনীতিকায়ন। সব মামলা রেখে শুধু ‘পুলিশ বাদী’ মামলা রায় হচ্ছে এখন। পুলিশ বাদী, পুলিশই সাক্ষী। আর এহেন একাধিক মামলার রায় হচ্ছে প্রতিদিন। দণ্ডিত একাধিক ব্যক্তির আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, অধিকাংশ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ পুলিশ সাক্ষীদের আদালতে হাজির করছে। পুলিশ সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিয়ে বেশির ভাগ মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাজা হচ্ছে। কারাদণ্ড থেকে রেহাই পাচ্ছেন না বিএনপির মৃত এবং গুম হয়ে যাওয়া নেতা-কর্মীও।

চার বছর আগে মারা যাওয়া বিএনপি নেতা আবু তাহের দাইয়া এবং ১০ বছর আগে গুম হওয়া সাজেদুল ইসলাম সুমন এবং ৮ বছর আগে গুম হওয়া আমিনুল ইসলাম জাকিরকেও কারাদণ্ড দেয়া হয়।
রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছে, আগামী দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গণহারে দেয়া হচ্ছে দণ্ডাদেশ। হামলা-মামলা, নিপীড়নে বর্তমান ধারায় যুক্ত হয়েছে কারাদণ্ড। জারি হচ্ছে গ্রেফতার পরোয়ানা। এ ধরনের কারাদণ্ডের প্রাথমিক অ্যাকশনটি হচ্ছে দণ্ডিত ব্যক্তি আপাতত নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হারাচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় দণ্ডিতদের পলাতক থাকতে হচ্ছে। এতে সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথের আন্দোলন কঠিন হয়ে পড়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের থাকতে হচ্ছে পালিয়ে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের মতে, বিএনপির মাঠের রাজনীতিতে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রাখতে পারেন, তেমন নেতা-কর্মীদের পরিকল্পিতভাবে কারাদণ্ড দেয়া হচ্ছে। সরকারের উদ্দেশ্য, বিএনপির নেতা-কর্মীদের রাজনীতি থেকে বিতাড়ন করা। ‘দণ্ড’ দিয়ে ‘ঠাণ্ডা’ করার নীতি গ্রহণ করেছে সরকার।
দণ্ডিত বিএনপির দেড় হাজার নেতা-কর্মী : ঘটনা দৃষ্টিগ্রাহ্য হয় গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিএনপি আহূত মহাসমাবেশের তারিখ ঘোষণার পর থেকে। গত চার মাসে সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকা বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দেড় হাজার নেতা-কর্মীকে কারাদণ্ড দিয়েছে বিভিন্ন আদালত। এর মধ্যে আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত শুধু রাজধানীতেই ৫৫ মামলায় ৮৪৫ নেতা-কর্মীকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। শুধু নভেম্বরে রায় দেয়া হয় ৩৩টি ‘নাশকতা’র মামলার। এসব মামলায় কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে ৬১৫ জনকে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কারাদণ্ড দেয়া হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে। এসব মামলার অধিকাংশই ২০১৩ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দায়েরকৃত।

মামলা-সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা জানান, ঢাকার বিভিন্ন আদালতে আগস্ট মাসে ৩টি, অক্টোবরে ৬টি, নভেম্বরে ৩৩টি এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তায় ৭ দিনে ১৩টি মামলার কারাদণ্ড হওয়ার তথ্য মিলেছে। ২৮ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় সহিংসতার অভিযোগে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১৫৩টি মামলা হয়। এরপরও দায়ের হচ্ছে নিত্যনতুন মামলা। নতুন মামলা রুজুকে ছাপিয়ে এখন আলোচনায় উঠে এসেছে পুরনো মামলায় গণহারে কারাদণ্ড প্রদান।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, গত ৭ নভেম্বর দ্রুত বিচার আইনে যুবদল নেতা ইসহাক সরকারসহ ৯ জনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আশেক ইমাম এ কারাদণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অন্যরা হলেনÑ ঢাকা দক্ষিণের যুবদল নেতা আরমান, আনোয়ার হোসেন রকি, আব্দুর রাজ্জাক মিন্টু, অ্যাডভোকেট রাশেদ, পারভেজ, সোহেল ও নাদের।

‘নাশকতা’র পৃথক মামলায় ১০ নভেম্বর বিএনপির ২৫ নেতা-কর্মীকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী এ কারাদণ্ড দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেনÑ সোহেল, রাজু, হাজী সিরাজ, মামুন, রনি, মঈন, হাজী মো: মাছুম ওমর ফারুক, ঢাকা দক্ষিণের মহিলা দলের নেত্রী রাজিয়া আলম ওরফে রাজিয়া সুলতানা। এ মামলায় দণ্ডিতদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দণ্ডিতরা বংশাল থানাধীন ১০৩ নং এনসিসি রোডের সামনে মিছিল করার সময় গাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়।

‘নাশকতা’র পৃথক মামলায় বিএনপির ৩০ নেতা-কর্মীর কারাদণ্ড হয় গত ১৫ নভেম্বর। ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাসফিকুল ইসলাম এ রায় দেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেনÑ মিনহাজউদ্দীন মোল্লা, শফিকুল ইসলাম, শাহজালাল, আমানুল ইসলাম আমান, মো: রাকিব, আলাউদ্দীন, আশিকুর রহমান, মাহমুদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম শহিদ, ফজল আহমেদ, আফসার মোক্তার, রেজাউল করিম জুয়েল, খোরশেদ আলম, ইউনুস খান, মো: নয়ন, শহিদুল ইসলাম (পিতা গরীবুল্লাহ), মিজানুর রহমান মিজান, হাসিবুর রহমান, আসাদুজ্জামান টিটু, ইউসুফ হোসেন, শাহনেওয়াজ হাওলাদার, জাহাঙ্গীর হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, মুসলেমউদ্দীন, আমজাদ হোসেন টুটুল, মো: রাকিব (পিতা চান মিয়া), মোহাম্মদ আলী পাঠান, আরিফুল হক সুমন, সাইফুল ইসলাম ও মাহমুদুল মুকুল।

১৬ নভেম্বর দ্রুত বিচার আইনের মামলায় কারাদণ্ড হয় বিএনপির তিন নেতা-কর্মীর। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিবের আদালত এ রায় দেন। দণ্ডিতরা হলেনÑ নান্টু জামান, তানভীর ওরফে জাপান ও আব্দুর রাজ্জাক।

২০ নভেম্বর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ ২৫ নেতা-কর্মীকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ তাদের ২ বছর কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পুলিশের দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদানের অভিযোগ আনা হয় দণ্ডাদেশে।

কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেনÑ বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু, হাবিবুর রশিদ হাবিব ও যুবদল দক্ষিণের সভাপতি এনামুল হক এনাম। এছাড়া অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারসহ ১২ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

গত ২৩ নভেম্বর পৃথক ৩টি মামলায় ঢাকা উত্তর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গীর আলমসহ ৭৫ জনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: হাবিবুল হক এ কারাদণ্ড দেন। ২০১৩ সালে পুলিশ বাদী হয়ে ‘নাশকতা’র অভিযোগে মামলাগুলো দায়ের করে। রায় ঘোষণাকালে মোট ৭৭ আসামির মধ্যে ৭২ জনই পলাতক ছিলেন। এ কারণে কারাদণ্ড দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

২৮ নভেম্বর কারাদণ্ড দেয়া হয় বিএনপি-জামায়াতের অন্তত ৫৫ নেতা-কর্মীকে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন এ রায় দেন। এ মামলায় পলাতক থাকা আসামিদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর মধ্যে রাজধানীর বংশাল থানায় ১০ বছর আগে করা এক মামলায় বিএনপির ১৬ নেতা-কর্মীকে ৬ মাসের এবং দক্ষিণখান থানায় ২০১৮ সালে করা এক মামলায় বিএনপির ৩৮ জন নেতা-কর্মীকে ৪ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া নাশকতার অভিযোগে কাফরুল থানার মামলায় জামায়াতের একজনের দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ডিতদের মধ্যে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক আলী সরকার, মো: মোহন, রফিকুল ইসলাম, ডলার ইকবাল, মো: শাজাহান, আব্দুল করিম, সিরাজ শেখ ওরফে বাঙাল সিরাজ, মোহাম্মদ মাসুম, মো: বেলাল হোসেন, রাজু আহমেদ, আব্দুর রহমান, মোহাম্মদ সেন্টু, মো: ফারুক, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, জুবায়ের আলম ও কামরুল ইসলাম।

একই দিন আরেক মামলায় কারাদণ্ড দেয়া হয় ৩৮ নেতা-কর্মীকে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেনÑ মো: শফিকুল ইসলাম শফিক, আব্দুল আলীম, শাহিন মিয়া, মো: মামুন, শামসুল হক রিপন, রুম্মন সিদ্দিকী, শাহীন, রাজীব, সরোয়ার হোসেন, মো: দুলাল মিয়া, নুরুজ্জামান হাওলাদার সোহেল, আনোয়ার হোসেন বকুল, মো: কামাল হোসেন, শাহ আলম, দীন ইসলাম, মো: আব্দুর রহিম বাদশা, রিপন সরকার, আবু বকর সিদ্দিক, ছোকন মেম্বার, আলী হোসেন, মোতালেব হোসেন রতন, শহিদুল ইসলাম, মো: ইয়াকুব আলী, মো: মোকলেস, মমতাজ উদ্দিন, মো: শেখ নূর মোহাম্মদ, মো: হারুন অর রশিদ হারুন, মো: আনোয়ার হোসেন সরকার, মো: তোফাজ্জল হোসেন মিঠু, সরকার রফিকুল ইসলাম মুকুল, মো: গোলাম মোস্তফা, মো: মোজাফফর হোসেন বাদল, মো: জাকির হোসেন, মো: ইয়াকুব আলী, মো: সফিল উদ্দিন, মো: শরীফ হোসেন, রিপন মিয়া, মো: লুৎফর রহমান খোকন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে নাশকতার অভিযোগে দক্ষিণখান থানায় এ মামলা হয়।

কাফরুল থানায় করা ‘অগ্নিসংযোগ’র মামলায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিমের ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম এ রায় দেন।

গত ২৯ নভেম্বর পৃথক মামলায় কারাদণ্ড দেয়া হয় বিএনপির ২২ নেতা-কর্মীকে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: আতাউল্লাহ এ রায় দেন। দণ্ডিতদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, মো: আব্দুস সালাম, মো: আমিনুল ইসলাম, ইমরান হোসেন, সৈয়দ ইমরান আহম্মেদ, মো: গোলাম মোস্তফা, আলাউদ্দিন, মনির হোসেন ভূঁইয়া, আরিফুল ইসলাম, মো: ছেকন মিয়া, মো: তাহের মৃধা, এস আই টুটুল, আশরাফুল হক, আবু বকর সিদ্দিক, মো: মোজাম্মেল হক, বেলাল হোসেন, সোলেমান হোসেন, মো: রফিকুল ইসলাম, জামাল উদ্দিন, অপু সিকদার, আফাজ উদ্দিন ও এম কফিল উদ্দিন রয়েছেন। এ মামলায় দণ্ডিতদের বিরুদ্ধে ‘বেআইনি সমাবেশ’ ও ‘পুলিশের কাজে বাধা প্রদান’-এর অভিযোগ আনা হয়।

গত ৩ ডিসেম্বর নাশকতার মামলায় কারাদণ্ড দেয়া হয় ১১ নেতা-কর্মীকে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফিক উদ্দিন এ কারাদণ্ড দেন। দণ্ডিতদের আড়াই বছর কারাদণ্ড প্রদানের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। দণ্ডিতরা হলেনÑ বিএনপি নেতা আতাউর রহমান, হেলাল ডালি, লালন বেপারি, বাবুল শেখ, মফিজুর রহমান, কাজী হজরত আলী, জাকির হোসেন বেপারি, জাকির হোসেন বাগমার, এরশাদ আলী খান, মইজুল ইসলাম দর্জি এবং আলী মিয়া।

গত ৬ ডিসেম্বর পৃথক ৩ মামলায় কারাদণ্ড দেয়া হয় বিএনপির ১২ নেতা-কর্মীকে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম এ রায় দেন। দণ্ডিতরা হলেনÑ বিএনপি নেতা আনোয়ারুল আজিম, হায়দার আলী বাবলা, মো: আলাউদ্দিন, শওকত, মো: পারভেজ, ইমরান হোসেন ইমু, সাঈদ আহম্মেদ রানা, হাজী ফরহাদ রানা, আরিফ হোসেন বাপ্পি, ফজলুল হক মনি, হাজী মো: নাজিম উদ্দিন ও মো: সোবহান।

গত ১০ ডিসেম্বর কলাবাগান থানার মামলায় যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নসহ ৪০ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী এ রায় দেন।

সর্বশেষ গতকাল সোমবার (১১ ডিসেম্বর) কারাদণ্ড দেয়া হয় যুবদল নেতা নয়নসহ বিএনপির ৭৩ নেতা-কর্মীকে। নাশকতার পৃথক ৩ মামলায় তাদের এ দণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এর মধ্যে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রাজিয়া আলমও রয়েছেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: আলী হায়দার এ রায় দেন।

তবে বিভিন্ন মামলায় রায় প্রদানের এই সুপারসনিক গতিকে ‘স্বাভাবিক’ বলে বর্ণনা করছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, মামলাজট কমাতেই সরকারপক্ষ থেকে পুরনো মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখানে বিরোধী দল বা বিএনপি কোনো লক্ষ্যবস্তু নয়।

তবে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলছেন, পুলিশ এতদিন গায়েবি মামলা করত। কিন্তু এখন দুঃখজনকভাবে কিছু আদালতও গায়েবি রায় দিচ্ছে। কেবলমাত্র বাংলাদেশ নয়। বিশ্বের কোথাও এমন নজির নেই যে মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধেও রায় হয়। তারা (বিচারক) তড়িঘড়ি করে মনে হচ্ছে কারও নির্দেশে এই রায়গুলো কার্যকর করছেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
Toto Gacor
bacan4d
bacansport login
slot gacor
pasaran togel resmi
bacan4d
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
slotgacor
bacan4d rtp
bacan4d
bacan4d toto
Slot Casino
bacan4d toto
slot gacor
bacan4d
bacan4d
Slot Toto
bacan4d
bacan4d login
totoslotgacor
slot gacor
TOTO GACOR
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
toto slot
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
Slot Gacor
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
xx1toto
bacansport
bacan4d
toto slot
situs toto
slot gacor
Toto Slot
slot maxwin
slot demo
bacan4d toto slot
bacan4d toto slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacansports
bacansports
bacansports
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d
slot gacor
pasaran togel resmi
situs toto
bacan4d login
pasaran togel
pasaran togel
situs toto
bacan4d
bacan4d gacor
bacan4d slot
bacan4d rtp
bacan4d rtp
bacan4d slot gacor
toto slot
situs toto
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bandar togel
toto gacor Toto Gacor bacan4d slot toto casino slot slot gacor bacantoto totogacorslot Toto gacor bacan4d login slotgacor bacan4d bacan4d toto Slot Gacor toto 4d bacan4d toto slot bacan4d slot gacor