দেশি পেঁয়াজের সেঞ্চুরি, দাম বেড়েছে ‘গরিবের আমিষে’ও
দুই দিন আগে (৮ অক্টোবর) কৃষিমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমরা পেঁয়াজ, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। এ নিয়ে সমালোচনা করেন, আমরা মেনে নেব। কারণ এটা আমাদের দুর্বল দিক।’
তার কথার সত্যতা পাওয়া গেল আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বাজারে। কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে রাজধানীর বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। চার দিনের ব্যবধানে একই বাজারে সেই পেঁয়াজ এবার সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে। পাড়া-মহল্লায়ও শতক হাঁকিয়েছে দেশি পেঁয়াজ।
ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাপকভাবে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে।
আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে বাজারে দাম বেড়েছে ‘গরিবের আমিষ’ খ্যাত ফার্মের মুরগির ডিমেরও। ডজনে ১০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ডিম।
মঙ্গলবার রাজধানীর শ্যামবাজার, বাড্ডা, গুলশান কালাচাঁদপুর, শাহজাদপুর ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে এক-দেড় মাসের মধ্যে বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ সময় দাম কমতে পারে। সাধারণত ডিসেম্বরের শুরু থেকে বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসতে থাকে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, কৃষকদের হাতে দেশি পেঁয়াজের মজুদ কমে আসায় বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। এর প্রভাব পড়ছে পাইকারি ও খুচরা বাজারেও। কৃষক ও মজুদদারদের কাছে দেশি পেঁয়াজ কমে যাওয়ায় এবং বাজারে চাহিদা থাকায় দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর দেশি পেঁয়াজ, আলু ও ডিম―এই তিন পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। তবে তার প্রভাব নেই বাজারে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে অভিযান চালালেও ফল যা তাই। দাম নির্ধারণ করার সময় রাজধানীর বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ৭৫-৮০ টাকা। সরকার নির্ধারিত দর ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। ওই সময় ডিমের ডজন ছিল ১৫০ টাকা। দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। ডিমের ডজনে বেঁধে দেওয়া দর ১৪৪ টাকা। ব্যবসায়ীরা আলু বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ৫০ টাকা। সরকার নির্ধারিত দর ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজরদরেও পেঁয়াজ ও ডিমের দাম বাড়ার প্রমাণ মিলেছে। মঙ্গলবারের বাজারদরে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা এবং আমাদনি করা পেঁয়াজ কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে। ফার্মের ডিম হালিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে।
রাজধানীর ভাটারা থানার শাহজাদপুরের এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ ও ডিমের দাম নতুন করে বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১০০ টাকার নিচে বিক্রির সুযোগ নেই। আমদানি করা পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি করছি।’