Bangladesh

দেশে চলছে ডিজিটাল চুরি ও লুটপাট : নজরুল ইসলাম

বক্তব্য রাখছেন নজরুল ইসলাম খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ সংবিধান সংশোধন করার কারণে দেশের সর্বত্র সংকট চলছে। চিকিৎসা ও শিক্ষা খাতে খুবই খারাপ অবস্থা। শিল্প-বাণিজ্য সব খাতে খারাপ অবস্থা। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নামে দেশে ডিজিটাল চুরি ও লুটপাট করা হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশ ইন্টারনেটের গতির দিক দিয়ে আফগানিস্তানের চেয়েও পেছনে।

তিনি বলেন, মানুষ বাঁচতে চায়। তারা পরিবর্তন চায়; যেখানে তারা বাঁচতে পারবে। আসুন মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। সেজন্য আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে। সেই লক্ষ্যেই বিএনপির এক দফা আন্দোলন।

শনিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র (ড্যাব) ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক সংকট ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বেগম খালেদা জিয়া আজ কারাবন্দী। তার সুস্থতা কামনা করছি। তার অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দায়িত্ব পালন করছেন। তাকেও দূরে সরিয়ে রাখতে বহু বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তার সহধর্মিণীকেও বানোয়াট অভিযোগে সাজা দিয়েছে। একটি অত্যাচারী অনির্বাচিত দায়হীন সরকারের পক্ষে সবকিছুই করা সম্ভব। সেটিই এখন হচ্ছে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বর্তমান সরকারকে চায় না। কিন্তু সেটা প্রমাণের সুযোগ তাদের দেয়া হচ্ছে না। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দেশে কিভাবে নির্বাচন হয়েছে তা সবাই জানেন।

তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলন সংগ্রামে বিজয়ী হলে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনায় যাবে। আজকে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও পাচার করলেও কোনো অভিযোগ নেই। ফরিদপুরের এক নেতা ২ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। সেটার কোনো বিচার নেই। আর খালেদা জিয়া একজন বয়স্ক মহিলা দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না। জামিনও দিচ্ছে না। কারণ আওয়ামী লীগ শক্ত প্রতিপক্ষকে ভয় পায়। এজন্য তারেক রহমানকে ভয় পায়। একই কারণে ভয় পায় ডা: জুবাইদা রহমানকে। সেজন্যই তাকে দণ্ড দেয়া হয়েছে। সেই দণ্ড দিতে গিয়ে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মানুষ নিরাপদ আশ্রয় নেয় পুলিশের কাছে। কিন্তু তারা এখন একটি দলের লাঠিয়াল বাহিনীর ভূমিকা পালন করে। বিচার বিভাগের কাছে মানুষ ন্যায়বিচার আশা করে। সেখানেও একই অবস্থা। আবরার হত্যা মামলার আসামি ছাড়া পেয়ে যায় আর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরা দীর্ঘদিন ধরে বন্দী।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই শেয়ারবাজার লুট হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক লুট হয়। অন্য সরকারের সময় হয় না। দেশের শতকরা ৫ ভাগ মানুষের হাতে ৯০ শতাংশ অর্থ। এই সময়ে সরকারের লোকেরা কোটিপতি হয়েছে আর নতুন করে সাড়ে তিন কোটি মানুষ নতুনভাবে দরিদ্র হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই সরকার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো দিয়ে তথ্য গোপন করছে। প্রতিবছর শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। আজকে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে ক্ষুধার্ত থাকতে হয়।

তিনি বলেন, ডা: জুবাইদা রহমান তার মায়ের কাছ থেকে কিছু টাকা উপহার পেয়েছিলেন। সেগুলো ব্যাংকে রেখেছেন এবং রিটার্নও দিয়েছেন। তারপরও সরকার বলছে- এটি তার টাকা নয়। অথচ জুবাইদা রহমান পারিবারিক সূত্রে স্বচ্ছল। তবুও তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আসলে তাকে নানাভাবে হেয় করা হচ্ছে। যেমন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে এই সরকার করেছে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, অথচ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের কঠিন সংকটের সময় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উই রিভোল্ট বলে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। তিনি প্রথম জেড ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আর সেই ব্যাক্তিকে হেয় করা হয় অভিযুক্ত করা হয়।

নজরুল ইসলাম খান আরো বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর নাকি জিয়াউর রহমান বেশি বেনিফিশিয়ারি। এসব অপপ্রচার। অথচ শফিউল্লাহ, খালেদ মোশাররফ ও এম এ জি ওসমানীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। শুধু জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ। কারণ হলো তার বিরুদ্ধে জনগণের কোনো অভিযোগ নেই। ওই সময় আওয়ামী লীগ যেখানে বব্যর্থ সেখানে জিয়াউর রহমান সফল হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, সেসময় দেশে কোনো শান্তি-শৃঙ্খলা ছিল না। তাদের সময় দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। তারা একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। সেখানে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কৃষির উন্নয়ন ঘটিয়ে বিদেশে চাল রফতানি করেছিলেন।

ড্যাবের মহাসচিব ডা: মো: আবদুস সালাম বলেন, অতীতের স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে পেশাজীবী সংগঠন হিসেবে ড্যাব যেভাবে রাজপথে থেকেছিল এবারো তাই থাকবে। এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকবো। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা: জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সাজা দেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা: হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা: মো: মেহেদী হাসানের পরিচালনায় বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ড্যাবের মহাসচিব ডা: মো: আবদুস সালাম, বাংলাদেশ ম্যাডিক্যাল অ্যাসোসিয়ের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি এ কে এম আজিজুল হক, সাবেক মহাসচিব ডা: গাজী আব্দুল হক, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা: মো: রফিকুল ইসলাম, সহ-সম্পাদক ডা: পারভেজ রেজা কাকন, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, ড্যাবের উপদেষ্টা ডা: শহীদুর রহমান, সহ-সভাপতি ডা: ওবায়দুল কবির খান, ডা: সিরাজুল ইসলাম, ডা: শহীদুল আলম, ডা: মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা: মহিউদ্দিন ভুঁইয়া মাসুম, কোষাধ্যক্ষ ডা: জহিরুল ইসলাম শাকিল, যুগ্ম মহাসচিব ডা: মো: শেখ ফরহাদ, ডা: শহীদুল হাসান বাবুল, ডা: আদনান হাসান মাসুদ, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, ডা: মো: জাহাঙ্গীর আলম, প্রকৌশলী এম এ হানিফ, বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, ডা: আজহারুল ইসলাম, ডা: আশফাক নবী কমল প্রমুখ। এ সময় ড্যাবের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor