Bangladesh

দেশ জাতি রাষ্ট্র: মার্কিন-ভারত নির্বাচনী সমীকরণ

‘এতক্ষণে অরিন্দম কহিল বিষাদে’ মাইকেলের এই উদ্ধৃতির পরিপূরক যেন ভারতের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচির। ২০২৪ সালের বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা জগতে যখন তোলপাড় তখন একরকম নীরব-নিস্পৃহ প্রতিবেশী ভারত। বছরখানেক ধরে এরকম চলার পর এই সেদিন মুখ খুললেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। গত ৩ আগস্ট নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ের সময় এক সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল- ‘বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে অন্যান্য দেশের মন্তব্যকে ভারত কিভাবে দেখছে?’ এমন প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘সেখানে কিভাবে নির্বাচন হবে তা বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে।’

তিনি বলেন, ‘এগুলো নিয়ে পুরো বিশ্বই মন্তব্য করতে পারে, তবে ভারত ভারতই। বাংলাদেশের সাথে আমাদের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশে যা ঘটে, তাতে আমরাও জড়িত, কারণ তা আমাদের প্রভাবিত করে… বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে নির্ধারণ করবে নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, সেভাবেই হওয়া উচিত।’ তিনি আরো বলেন, ‘অবশ্যই, আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সেখানে আমাদের একটি হাইকমিশন আছে। আমরা আশা করি, সেখানে শান্তি থাকবে, সহিংসতা থাকবে না এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ সতর্কভাবে প্রদত্ত এই কূটনৈতিক বক্তব্যে তিনটি দিক রয়েছে : প্রথমত, বোঝা যায়- মার্কিন ডামাডোলে ভারত এতদিন মুখ খোলা সঙ্গত মনে করেনি। দ্বিতীয়ত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বক্তব্য স্পষ্ট হয়েছে, ভারত মূলত যেখানে থাকার সেখানেই রয়েছে। তৃতীয়ত, বোঝা গেল- ২০১৪ কিংবা ২০১৮-এর টোন আর নেই। কোথাও যেন সংযম ও সতর্কতার বার্তা রয়েছে। গত সপ্তাহে ভারতের শাসকদল বিজেপির আমন্ত্রণে শাসক আওয়ামী লীগের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ভারত সফর করে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেখতে চায় ভারত, বললেন দিল্লিফেরত আওয়ামী লীগ নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমরা বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেখতে চাই, সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই।’ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তারা আমাদের সাহায্য করবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। এই প্রতিশ্রুতি কতটা সৌজন্যমূলক অথবা বাস্তব, ভবিষ্যতের কর্মধারাই তা বলে দেবে।

সন্দেহ নেই, আওয়ামী লীগ ভারতের বিশ্বস্ত বন্ধু। কিন্তু ভারতের জাতীয় স্বার্থ তাদের পররাষ্ট্রনীতির নিয়ামক। বাংলাদেশ ভারতবেষ্টিত হওয়ায় আমাদের যেমন বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তেমনি ভারতের পূর্বাঞ্চল, ট্রানজিট, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা-কৌশল নিয়ে বাংলাদেশের কাছে ভারতেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। এটি স্বাভাবিক সত্য, ভারত কোনোক্রমেই তাদের বৈরী কোনো শক্তিকে বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দেখতে চাইবে না। ২০১৪ সালে সুজাতা সিং বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রকাশ্যে নগ্ন হস্তক্ষেপ করেন। ২০১৮ সালে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আন্তর্জাতিক আপত্তি থাকা সত্ত্বেও নরেন্দ্র মোদি অভিনন্দনের প্রথম বার্তাটি পাঠান। এর পরে আসে শি-এর শুভেচ্ছা। পরস্পরবিরোধী অথচ স্বার্থ-সুবিধার কি অপূর্ব মিল!

এই সময়কালে এই অঞ্চলে মার্কিন ভূমিকা ছিল গৌণ, মুখ্য নয়। ট্রাম্পের ক্ষমতা দখলের আগে হিলারি ক্লিনটন ভারতকে দক্ষিণ এশিয়ার প্রভুত্ব দিয়ে যান। গোল বাধে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্র্যাটরা ডেমোক্র্যাসির জন্য বিশ্বব্যাপী ভূমিকা পালন করতে চায়। রিপাবলিকানদের এত মাথাব্যথা নেই। মানবাধিকার ও গণতন্ত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির অনিবার্য অংশ। ভারত ও বাংলাদেশের মানবাধিকার এবং গণতন্ত্র নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনগুলো সুখকর নয়। তবে বাংলাদেশের বিষয়ে কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র নিঃসন্দেহে হতাশ। গত দুই বছরে মার্কিন দূতদের অনেকবার আগমন ও প্রত্যাগমনে বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের গুরুত্বের দিকটি বোঝা যায়। আর বাংলাদেশের নেতৃত্বের রাগ, ক্ষোভ ও গোস্বা থেকেও খানিকটা অনুমান করা যায়। ভিসানীতি প্রয়োগের পর ক্ষমতাসীন সরকারের সাথে তাদের সম্পর্ক পয়েন্ট অব নো রিটার্নে পৌঁছে যায়। ভারত আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত বন্ধু হওয়া সত্ত্বেও পিনপতন নীরবতা পালন করে। দীর্ঘ নীরবতার পর ভারতীয় মুখপাত্র, কূটনৈতিক পর্যায় ও পত্র-পত্রিকায় যেসব ভাবনা ও ভাষ্য প্রকাশিত হয়েছে তার দু’রকম বিশ্লেষণ রয়েছে।

গত ২২ আগস্ট ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনে এ সম্পর্কে একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে স্পষ্টত বলা হয়েছে, ভারত বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র সমালোচনা করেছে। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা যে গ্রহণযোগ্য নয় তা তারা কূটনৈতিক পর্যায়ে পরিষ্কারভাবেই অবহিত করেছে। তবে বিস্ময়ের ব্যাপার এই, এ সম্পর্কিত কোনো প্রতিবেদনই ভারত সরকারের প্রত্যক্ষ সূত্রের বা বক্তব্যের উল্লেখ নেই। কেউ কেউ বলছেন, প্রতিবেদনগুলো বানোয়াট। বাংলাদেশের কূটনীতিকরা এ ধরনের প্রতিবেদনকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কারসাজি বলবেন, এটিই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিও প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোকে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলতে চাইছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ভিসানীতির আপত্তির কথা ভারত ভালোভাবেই ওয়াশিংটনকে জানিয়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মৌখিক ও লিখিতভাবে এসব প্রতিবাদ পৌঁছানো হয়েছে। ভারত কূটনৈতিক শিষ্টাচারের কারণে এসব বিষয় প্রকাশ্যে অবহিত করেনি। প্রকাশিত প্রতিবেদনে দিল্লির সাউথ ব্লকের একজন সিনিয়র কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘এমন ভাবার কোনো কারণ নেই যে, আমরা কিছু করছি না, এখানে ভারতের কৌশলগত সরাসরি স্বার্থ রয়েছে। কিন্তু আমরা যদি সরাসরি প্রকাশ্যে কিছু বলি তাহলে বলা হবে- ভারত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে। এ সম্পর্কে অনাকাক্সিক্ষত বিরোধ বা সমালোচনা এড়ানোর জন্য ভারত নীরব থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অন্তত জনসম্মুখে।’ ওই কর্মকর্তার নাম ও পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এতে বক্তব্য সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করার যথেষ্ট কারণ থেকে যায়।

বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র অথবা মানবাধিকারকে রাজনৈতিক অথবা কূটনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এটি নতুন কিছু নয়।’ চক্রবর্তী ব্যাখ্যা করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ ব্যাপারে নিশ্চয়ই কোনো স্বার্থ রয়েছে। তিনি আরো ব্যাখ্যা করেন, গত দুই-তিন দশক ধরে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক পরিবর্তিত বলয়ে প্রবেশ করেছে। তাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তিনি পরামর্শ দেন, ভারতের উচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এ কথা বলা যে, বাংলাদেশকে বেশি চাপ দিলে কেউই লাভবান হবে না। অপর একজন বাংলাদেশ বিশেষজ্ঞ রাধা দত্ত মন্তব্য করেন, ভারত এখানে চীনা কার্ড প্লে করছে। তারা মার্কিনিদের হয়তো বোঝাবে, বাংলাদেশকে যতই চাপ দেয়া হবে ততই তারা চীনের দিকে এগোবে। তিনি আরো মন্তব্য করেন, ভারত যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের ব্যাপারে বলে তাহলে তা হবে ৫০ বছর উত্তীর্ণ একটি জাতির সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের উদাহরণ। বাংলাদেশও বিষয়টি পছন্দ করবে না। অন্য আরেকজন পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ একই ধরনের মন্তব্য করেন।
মার্কিন নীতিভঙ্গি সম্পর্কে, ভারতের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ইতিবাচকভাবে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কলকাতার আনন্দবাজার গ্রুপের ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশকে অবাধ নির্বাচনের বার্তা দেবে ভারত। প্রতিবেদনটির একটি পর্যালোচনা প্রকাশিত হয়েছে বাংলা দৈনিক নয়া দিগন্তে। পর্যালোচনাটি এরকম :

জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী মাসে দিল্লি সফরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই সফরের সময় ভারত তাকে দু’টি স্পষ্ট বার্তা দিতে পারে। এগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে অবশ্যই অবাধ ও সুষ্ঠু হতে হবে এবং তার দল আওয়ামী লীগকে চীনপন্থী ও ইসলামপন্থী নেতাদের বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িক এবং জনপ্রিয় প্রার্থীদের বেছে নিতে হবে। তিন দিন আগে আনন্দবাজার ‘হাসিনাকে দুর্বল করলে ক্ষতি সবার, বার্তা আমেরিকাকে’-এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। যা নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। ওই প্রতিক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই দ্য টেলিগ্রাফ অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে খবর দিয়েছে। আনন্দবাজারের রিপোর্টের সাথে ওই রিপোর্টের আকাশ-পাতাল তফাৎ রয়েছে। খবরে বলা হয়, শেখ হাসিনার প্রতি এই জোড়া বার্তা প্রসঙ্গে ভারতের নিরাপত্তা এস্টাবলিশমেন্টের একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই ঘটনা বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের বিষয়ে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ব্যাপক ঐকমত্যের ইঙ্গিত দেয়।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দুই দেশের (ভারত ও মার্কিন) নিরাপত্তাবিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে ধারাবাহিক আলোচনা হয়েছে। এসব বৈঠক হয়েছে ভারত ও এই অঞ্চলের অন্য কয়েকটি দেশে। অতীতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বড় ধরনের মতপার্থক্য ছিল। তবে এবার দুই দেশ ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে মনে হচ্ছে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জি-২০ সম্মেলনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দিল্লিতে থাকবেন তখন তাকে এই দু’টি বার্তা দেয়া হবে। যদিও শেখ হাসিনা দাবি করে আসছেন, তার অধীনে হওয়া নির্বাচনগুলো অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। তবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশের মধ্যে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। অথচ নয়াদিল্লি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কখনো কোনো প্রশ্ন তোলেনি।

২০১৮ সালের নির্বাচনে ৯৬ শতাংশের বেশি আসনে জয় পাওয়ার পর শেখ হাসিনাকে প্রথম অভিনন্দন জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অর্থাৎ, নির্বাচনের ফলাফল যতক্ষণ পর্যন্ত শেখ হাসিনার পক্ষে থাকবে ততক্ষণ ভারত এর সুষ্ঠুতা নিয়ে চিন্তা করবে না। শেখ হাসিনাকে নয়াদিল্লি সর্বদা তার প্রতিবেশীদের মধ্যে সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্র হিসেবে বিবেচনা করে। ঢাকার এক কৌশলগত সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ বলেন, শেখ হাসিনা এখনো ভারতের প্রিয় তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন কৌশলগত উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নয়াদিল্লির এসব উদ্বেগের সমাধান না হলে ভারত এবারো শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে যাবে- এমনটি না-ও হতে পারে। যদিও আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের অনেকগুলো ইচ্ছা পূরণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে- ইসলামপন্থীদের দমন এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য চলাচলের অনুমতি দেয়া। তবে নয়াদিল্লির জন্য এখন সব থেকে বড় উদ্বেগ হলো- চীনের সাথে শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠতা। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই একটি ফ্যাক্টরই ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এক করেছে।

সমাগত নির্বাচন নিয়ে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টানাপড়েন এবং সমীকরণ সম্পর্কে উদ্ধৃত দুটো প্রতিবেদনই যথেষ্ট। ভারতের সমস্ত শক্তি সামর্থ্য ও সমৃদ্ধি সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সে অনেক দুর্বল। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ভারত আজও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করার সামর্থ্য রাখে না। আঞ্চলিক রাজনীতিতে চীন যেহেতু ভারতের চির শত্রু, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের চির মিত্র হতে বাধ্য। বাংলাদেশের ব্যাপারে বাইডেন প্রশাসন প্রথম থেকেই ভারত থেকে ভিন্নতর নীতি-কৌশল গ্রহণ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ সম্পর্কিত নীতি-কৌশল প্রবল ও অপরিবর্তনীয়। বিশেষ করে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ব্যাপারে তাদের অনড় অবস্থান রয়েছে। কোনো কোনো সময় কূটনৈতিক ভাষায় পরিবর্তন, পরিমার্জন পরিলক্ষিত হলেও অন্তত নির্বাচন পর্যন্ত গৃহীত সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। নির্বাচন প্রশ্নে সরকারের বেপরোয়া কার্যক্রমের বিপরীতে আরো শক্ত পদক্ষেপের সম্ভাবনা দেখছে রাজনীতি অভিজ্ঞ মহল। দৈবদুর্ঘটনাক্রমে একটি অনাকাক্সিক্ষত অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন যদি অতিক্রান্ত হয় তাহলেও শেষ রক্ষা হবে না। অবশেষে ভারত-মার্কিন সমীকরণে ক্ষমতা ভারসাম্যের অনিবার্যতায় বাংলাদেশে একটি বাস্তব নির্বাচন অসম্ভব কিছু নয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d