নিত্যপণ্য কিনতেই আয় শেষ, সঞ্চয় শূন্য
সেলিনা খাতুনের বয়স ৬০ পেরিয়েছে। মাছ কাটেন কারওয়ান বাজারে। গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার এ নারী প্রায় দুই যুগ ধরে বাস করছেন ঢাকায়। এখন থাকেন মগবাজার এলাকায় ছোট একটি ছাউনি ঘরে। ভাড়া চার হাজার টাকা। নিজে যা আয় করনে তা দিয়ে ঘরের ভাড়া ও সংসারের খরচ মেটাতেন। স্বামীর আয়ের এক অংশ সংসারে খরচ হলেও বাকিটা হতো সঞ্চয়। দীর্ঘ সংসার জীবন এভাবেই সামলেছেন সেলিনা। সে সঞ্চয় দিয়ে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন, কিছু জমিও রেখেছেন গ্রামে। তবে সে পরিস্থিতি এখন বদলে গেছে। আয়ের পর সঞ্চয় দূরের কথা, সংসার চালানোই কঠিন হয়ে গেছে তাদের।
তাদের এখন আর মাছ কেটে বাসা ভাড়া ও সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। স্বামীর আয়ও সঞ্চয়ে থাকছে না। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় মাছ কেটে আয় কমেছে। ক্রেতা যেমন মাছ কেনা কমিয়েছেন, তেমনি তাদের মাছ কাটার পরিমাণও কমেছে। এতে আয় কমেছে। উল্টো বেড়েছে সংসারের খরচ।
সেলিনা খাতুন জানান, আগে মাছ কেটে দিন শেষে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বাসায় নিয়ে যেতে পারতেন। এখন মাছ কাটার জন্য (বসার ভাড়া) ৩০০ টাকা ভাড়া দিয়ে তার আর তেমন টাকা থাকে না। কোনো কোনো দিন ২০০ টাকা নিয়ে যেতে পারেন। তবে সরকারি ছুটির দিন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করতে পারেন তিনি।
আগে মাছ কাটার জন্য অপেক্ষা করতে হতো। এখন তেমন ভিড় নেই। যারা মাছ কাটেন তারা হাঁক-ডাক দেন, ক্রেতা ডাকেন। দরদাম করা যায় এখন, কম দাম দিলেও নিয়ে নেন তারা।
তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় সংসার চালাতে কষ্ট হয়। বাজারে মাছের ক্রেতা কম থাকায় এমনটা হয়েছে। আবার অনেকেই (ক্রেতা) খরচ বাঁচাতে মাছ কিনে বাসায় নেন, নিজেরাই মাছ কাটেন। এসব কারণে আয় কমেছে। আবার যা আয় তা দিয়ে সংসার চালাতে পারছি না। কোনো সঞ্চয় এখন করতে পারি না। আগে সব কিছুর (নিত্যপণ্য) দাম কম ছিল। আয় যা ছিল, তা দিয়ে সংসার চলতো।
একই কথা বলেন সত্তরোর্ধ্ব শিল্পী খাতুন। তিনি বলেন, আগে মানুষ (ক্রেতা) অনেক বেশি মাছ কিনতো। পাইকারি থেকে মাছ কিনেই আমাদের কাছে এসে কাটাতো। এখন তেমন কেনে না। তাদের (ক্রেতা) মাছ কেনা কমেছে। যারা মাছ কিনছেন, তাদের অনেকেই বাড়ি নিয়ে কাটেন।
তিনি বলেন, আমরা দুটি বঁটি (মাছ কাটার কাজে ব্যবহৃত) নিয়ে কাজ করতাম। এখন বঁটি একটা, অন্যজনের সহযোগী হয়ে কাজ করি। বেশি কাজ আসে না। সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩০০ টাকা করে দিতে হয় ভাড়া। এরপর বাকি টাকা নিজেদের থাকে। অনেক সময় ভাড়ার টাকা দেওয়ার পর শুধু খাওয়া খরচ থাকে।
ওষুধের দাম বেড়ে গেছে। অভাবে অতিপ্রয়োজনীয় ওষুধ খাওয়াও কমিয়ে দিচ্ছে মানুষ। মাছ-মাংস হয়তো কম খাওয়া যায়। ওষুধ কম খাওয়ার সুযোগ নেই। এটি বোকামি। কিন্তু কোনো উপায় নেই। স্বনির্যাতিত হয়ে এমন কৌশল করে টিকে থাকতে হচ্ছে
বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা হাফিজ, কারওয়ান বাজারে এসেছেন মাছ কিনতে। কয়েক প্রকারের মাছ কিনে কাটার জন্য একজনের কাছে দিয়েছেন তিনি। হাফিজ জাগো নিউজকে বলেন, এখন দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় কষ্ট স্বীকার করে টিকে থাকার চেষ্টা করছে মানুষ। ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। আগের মতো কোনো পণ্যই কিনতে পারিনি।
তিনি বলেন, আগে মাছ কাটার জন্য অপেক্ষা করতে হতো। এখন তেমন ভিড় নেই। যারা মাছ কাটেন তারা হাঁক-ডাক দেন, ক্রেতা ডাকেন। দরদাম করা যায় এখন, কম দাম দিলেও নিয়ে নেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকও বলছে, দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু নীতিগত পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। বিশিষ্টজনরা বলেন, মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাচ্ছে। অনেকেই নিম্নমানের বাসায় চলে যাচ্ছে। অভাবে অতিপ্রয়োজনীয় ওষুধ খাওয়াও কমিয়ে দিচ্ছে মানুষ। মাছ-মাংস হয়তো কম খাওয়া যায়। কিন্তু নিত্যপণ্য, ওষুধ কেনা তো আর কমানো যায় না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু নীতিগত পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। আশা করি আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে। তখন একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে আশা করছি।
এসব বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, অর্থনীতিবিদ ও ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, মানুষ স্বনির্যাতনের মধ্যে জীবনযাপন করছে। খাবার তালিকা, শিশুখাদ্য কাটছাঁট করে ফেলছে। নিজ থেকে এমন কষ্ট স্বীকার করে টিকে থাকার চেষ্টা করছে মানুষ।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, আর-তো উপায় নেই। অবস্থা বুঝে তাকে কৌশল নিতে হচ্ছে। করোনার মধ্যে আমরা গবেষণা করে দেখেছি, শহরের ১০ শতাংশ মানুষ গ্রামে চলে যাচ্ছে। আর টিকে থাকতে পারছে না। অনেকেই নিম্নমানের বাসায় চলে যাচ্ছে। এক মিটিংয়ে আলোচনা শুনে আঁতকে উঠি। ওষুধের দাম বেড়ে গেছে। অভাবে অতিপ্রয়োজনীয় ওষুধ খাওয়াও কমিয়ে দিচ্ছে মানুষ। মাছ-মাংস হয়তো কম খাওয়া যায়। ওষুধ কম খাওয়ার সুযোগ নেই। এটি বোকামি। কিন্তু কোনো উপায় নেই। স্বনির্যাতিত হয়ে এমন কৌশল করে টিকে থাকতে হচ্ছে।
Really no matter if someone doesn’t understand
after that its up to other people that they will help, so here it takes place.
Here is my web page :: vpn special coupon code (vpnspecialcouponcode.wordpress.com)
This is a very good tip especially to those fresh to
the blogosphere. Simple but very precise info… Thank you for
sharing this one. A must read article!
Feel free to visit my blog post; what does vpn do
Your method of explaining the whole thing in this article is genuinely pleasant, every one
can effortlessly understand it, Thanks a lot.
Look at my homepage … best vpn deal
Good replies in return of this matter with real arguments and describing everything regarding that.
My homepage – vpn coupon code ucecf
When I initially commented I clicked the “Notify me when new comments are added” checkbox
and now each time a comment is added I get four
e-mails with the same comment. Is there any
way you can remove me from that service? Thanks!
my web page; facebook vs eharmony to find love online
I read this post fully concerning the comparison of latest and previous technologies, it’s amazing article.
Look into my website: eharmony special coupon code 2024
Appreciation to my father who shared with me regarding this
blog, this blog is genuinely awesome.
my web page: nordvpn special coupon code