Bangladesh

নির্বাচনের তফসিল, এরপর কী

অনেক কথা, জল্পনা, কল্পনা, আলোচনা, পরামর্শ ও সমালোচনার মুখেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার(সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সিইসিকে দেখে ভদ্র  ও সজ্জন লোক বলেই মনে হয়। যদিও উনার সঙ্গে কখনোই কথা হয়নি। কিন্তু কাল সিইসির ভাষণ দেখে মনে হলো বেশ চাপের মুখেই তফসিল ঘোষণা করতে হয়েছে তাকে। ভাষণে সিইসিকে খুব বেশি প্রাণবন্ত মনে হয়নি। কোথায় যেন চিন্তার রেখা খেলা করছিল। তার ভাষণ শুনে মনে হয়েছে তিনি নিশ্চিত না ঘোষিত তফসিল বাস্তবায়িত হবে কি না। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বিএনপিসহ অন্যান্য সমমনা দলগুলো তফসিল প্রত্যাখান করেছে। বৃহস্পতিবার অর্ধদিবস হরতাল ঘোষণা করেছে বাম জোট। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলো দীর্ঘদিন ধরেই রাজপথে আন্দোলন করছে।

এই মাসে বিরতি দিয়ে দিয়ে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। শুধু বিএনপি বা সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোই না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বারবার তাগিদ দিয়েছে। সর্বশেষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির কাছে পাঠানো এক চিঠিতে শর্তবিহীন সংলাপে বসে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ খোঁজার আহ্বান  জানিয়েছেন।

তবে বিরোধীদের আন্দোলন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের পরামর্শকে উপেক্ষা করেই সরকার নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু শেষপর্যন্ত কতগুলো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের মিত্র জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যেতে পারে। জাতীয় পার্টি এখনো চূড়ান্তভাবে কিছু বলেনি। জাতীয় পার্টি নিয়ে নানা ধরনের গুঞ্জন রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন জাতীয় পার্টি শেষ বিচারে নির্বাচনে যাবে। জাতীয় পার্টির পক্ষে আওয়ামী লীগের নিদের্শ অমান্য করা সম্ভব না। যদিও এ সপ্তাহেই জাতীয় এক বৈঠকে দুইজন ছাড়া অধিকাংশ বক্তা নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। ওই বৈঠকে বক্তারা পরিস্কারভাবেই বলেছেন, আওয়ামী লীগের দুর্নীতি ও অপরাধের দায়িত্ব জাতীয় পার্টি নিতে পারে না। কেবলমাত্র দুইজন বক্তা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মতামত দেন। তারা বক্তব্য দেয়ার সময় অন্যরা দালাল দালাল বলে চিৎকার করে উঠেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে জাতীয় পার্টি দলীয় নেতা-কর্মীদের কথা বা মতে চলে না। দলটিকে বাইরে থেকে পরিচালনা করা হয়। এর চেয়ারম্যান বা মহাসচিব পদে পাপেটের মতো কিছু লোক বসে থেকে বাইরের নির্দেশ পালন করেন কেবল। তাই শেষ পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচনে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ভিন্ন জায়গায়। জাতীয় পার্টির নেতারা বলছেন বটে, তারা কেন আওয়ামী লীগের নানা কর্মকাণ্ডের দায় বহন করবেন। যদি জাতীয় নির্বাচনে যায় বা মনোনয়ন জমা দেয় তাহলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদেরও যাবতীয় দায় বহন করতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের ১৯৯০ সালের কথা স্মরণ করতে হবে। ওই সময় জাতীয় পার্টির ক্ষমতা থেকে পতন হলে সঙ্গে আ স ম আবদুর রবের জাসদকেও পর্দার আড়ালে  চলে যেতে হয়েছিল তাই আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিতে পারে। কিন্তু যদি কোনো কারণে গণেশ উল্টে যায় তবে জাতীয় পার্টিকেও এবার পালাতে হবে বা আত্মগোপনে যেতে হবে। জাতীয় পার্টি ছাড়া আওয়ামী লীগের জোটে থাকা অন্যান্য দলগুলো ভোটের মাঠে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ না। ওয়ার্কার্স পার্টি বা জাসদ (ইনু) এক নেতা নির্ভর দল। এছাড়া আওয়ামী লীগের কাছাকাছি থাকা ইসলামপন্থী দলগুলোও কিন্তু নির্বাচনী তফসিল প্রত্যাখান করেছে। খেলাফত মজলিশ তফসিল বাতিলের দাবি জানিয়েছে। এর আগে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা সমমনা পাঁচটি ইসলামপন্থী দল তফসিল ঘোষণার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিল। এই দলগুলোর সরকার ঘেষা বলেই পরিচিত। এদের অনেকেই বিএনপির জোট থেকে বেরিয়ে এসেছে।

ফলে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে থাকা দলগুলোর মধ্যে জাতীয় পার্টি এখনো নিশ্চিত করেনি নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে। ইসলামপন্থী দলগুলোও সংলাপের কথা বলছে। তাহলে নির্বাচনে যাচ্ছে কারা? আওয়ামী লীগ যাবে। এর সঙ্গে ওয়ার্কার্স পাটি, জাসদ (ইনু), সাম্যবাদী দল থাকতে পারে। বিএনপিতে গুরুত্ব হারানো কিছু নেতাকর্মী নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু এদের রাজনৈতিক প্রভাব খুবই নগণ্য।

এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের পক্ষে হাতে গোনা কয়েকটি দলকে নিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করা কঠিন হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিলেও এবারের  নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া আওয়ামী লীগের জন্য  সহজ হবে না। কারণ বিএনপিসহ সব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথ ছাড়বে না বলেই মনে হচ্ছে। বিএনপির জোট বা আন্দোলনের বাইরে থাকা বামজোট তফসিল ঘোষণার পরপরই হরতালের ঘোষণা দিয়েছে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি বিএনপির একার দাবি না। এই দাবি জনমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। ডানপন্থী, মধ্যপন্থী, উদারপন্থী ও বামপন্থী সবার দাবিতে পরিণত হয়েছে। এই দাবিকে সরকার রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে দমনের চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু সফল হতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

এছাড়াও আরো একটি বড় কারণ হচ্ছে, আগের মতো আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পাবে না। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী বহির্বিশ্বের সমর্থন পেয়েছিল একচেটিয়াভাবে। ওই সময় আওয়ামী লীগ এক ঝুড়িতে সব ডিম রাখার রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করে সফল হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, ইউরোপিয় ইউনিয়ন, রাশিয়া সবারই সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয়েছিল। বলা যায় ওই সময় আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধকে কৌশলে কাজে লাগিয়ে সব পক্ষকেই কাছে টেনেছিল। এই অঞ্চলের জঙ্গীবাদের বিস্তার ঘটছে বা ঘটবে এই ধরনের যুক্তি দেখিয়ে সবাইকে কাছে টানতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু এবার বিশ্ব রাজনীতির মোড় ঘুরে গেছে। সন্ত্রাসবাদী বিরোধী যুদ্ধ এখন আর পশ্চিমাদের পররাষ্ট্রনীতির শীর্ষে অবস্থান করছে না। এর বাইরে নানা বিষয় তাদের পছন্দের তালিকায় ঢুকে গেছে। এর মধ্যে  আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র চলে গেছে। ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে। ফলে ডিমগুলো এখন আর আওয়ামী লীগের ঝুড়িতে এক সঙ্গে থাকতে চাইছে না।  যুক্তরাষ্ট্র অনেকটা ঘোষণা দিয়েই এবার অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে মাঠে নেমেছে।  যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিষয়ে সক্রিয় হলে পশ্চিমা  জোটের অন্যান্য শরীকরা পক্ষে না থাকলেও বিপক্ষে যাবে না। আমাদের নির্বাচন নিয়ে জাপান, অস্ট্রেলিয়া কথা বলেছে। কানাডার সংসদেও কথা হয়েছে। সবাই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে কথা বলছেন। সবাই বলছে, যদি সব দলের অংশগ্রহণ থাকে তবেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু এই নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হবে। সরকারের উচিত হবে নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখা। বিরোধী দলের উপর দমন-নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।

 এ অবস্থায় দেশ বিদেশের রাজনৈতিক দল, উন্নয়ন সহযোগীদের মতামত, পরামর্শ, অনেকগুলো যদি, কিন্তু, উচিত হবে কে উপক্ষো করে বা এড়িয়ে নির্বাচন করা আওয়ামী লীগের পক্ষে সহজসাধ্য হবে না। বরং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে আওয়ামী লীগের নিজের উপরেই চাপ বাড়িয়ে দিলো। এখন আওয়ামী লীগকে যে কোনো প্রকারে নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ একগুঁয়েমিপনা করে এমন এক অবস্থায় উপনীত হয়েছে নির্বাচন করলেও মুশকিল না করলেও মুশকিল। আওয়ামী লীগ যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে না পারে তবে রাজনৈতিক পরাজয় হবে। আবার নির্বাচন করলে দেশের ভিতর ও বাইরে থেকে আরো নতুন করে চাপ আসবে। রাজনৈতিক পরাজয় বা নতুন চাপ আওয়ামী লীগ সামলাতে পারবে কি না সন্দেহ আছে। ভারতের প্রচ্ছন্ন সহযোগীতা এবং রাশিয়া ও চীনের সমর্থনে নির্বাচনের রাস্তা এখন অনেক সংকটময়। সেই পথে কাঁটা হয়ে ফুটে আছে ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আমলে সেনাবাহিনী, র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবির হাতে ক্রসফায়ার, মিছিলে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি, হেফাজতে খুন হওয়া ২ হাজার ৫৯৭ জন মানুষ। এই পথে পিছলে পড়ার শংকা আছে। এই শংকা থেকে প্রশ্ন জাগে যতই তফসিল ঘোষণা করুক শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে তো! নির্বাচন হবে তো!

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
Toto Gacor
bacan4d
bacansport login
slot gacor
pasaran togel resmi
bacan4d
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
slotgacor
bacan4d rtp
bacan4d
bacan4d toto
Slot Casino
bacan4d toto
slot gacor
bacan4d
bacan4d
Slot Toto
bacan4d
bacan4d login
totoslotgacor
slot gacor
TOTO GACOR
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
toto slot
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
Slot Gacor
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
xx1toto
bacansport
bacan4d
toto slot
situs toto
slot gacor
Toto Slot
slot maxwin
slot demo
bacan4d toto slot
bacan4d toto slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacansports
bacansports
bacansports
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d
slot gacor
pasaran togel resmi
situs toto
bacan4d login
pasaran togel
pasaran togel
situs toto
bacan4d
bacan4d gacor
bacan4d slot
bacan4d rtp
bacan4d rtp
bacan4d slot gacor
toto slot
situs toto
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bandar togel
toto gacor Toto Gacor bacan4d slot toto casino slot slot gacor bacantoto totogacorslot Toto gacor bacan4d login slotgacor bacan4d bacan4d toto Slot Gacor toto 4d bacan4d toto slot bacan4d slot gacor