নেই আলো, মেঝেতে রাশি রাশি মমি! বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক গুহার সন্ধান
প্রাচীন কাল থেকেই গুহা নিয়ে আজ জনতার মধ্যে আগ্রহের অন্ত নেই। নতুন নতুন গুহার হদিশ পেতে এখনও বিপদ সংকুল পথে পাড়ি দেন বহু অভিযাত্রী। প্রিয় পাঠকের জন্য ইনকিলাব অনলাইনের এই প্রতিবেদনে তেমনই বিপজ্জনক একটি গুহার কথা তুলে ধরলাম আমরা।
সুপ্রাচীন বিপদ সংকুল এই গুহাটির পোশাকি নাম ডার্ক স্টার কেভ। পশ্চিম এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকায় যার অবস্থান। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববাসীর কাছে অজানাই ছিল এই গুহা। গত শতাব্দীর শেষ দিকে হঠাৎ করেই যা একদিন আবিষ্কার করেন ফেলে ওই এলাকায় অ্যাডভেঞ্চারে যাওয়া অভিযাত্রীদের একটি দল।
উল্লেখ্য, সন্ধান মেলার পর ডার্ক স্টার কেভকে নিয়ে দিনকে দিন জনমনে উৎসাহ বাড়তে থাকে। গুহাটির ভিতরের অংশ নিকষ কালো অন্ধকারে ঢাকা থাকায় সেখানে প্রবেশ করা খুবই কঠিন। শুধু তাই নয়, গুহাটি মাইলের পর মাইল লম্বা বলে জানিয়েছে অভিযাত্রীর দল।
উজবেকিস্তান প্রশাসন সূত্রে খবর, ডার্ক স্টার কেভের গভীরতা অন্তত তিন হাজার ফুট। সেখানে পৌঁছলে মনে হবে পৃথিবীর পেটের মধ্যে সিঁধিয়ে গিয়েছেন আপনি। গভীরতা এতোটা বেশি হওয়ায় গুহাটির আরও একটি নামকরণ করা হয়েছে। ভূবিজ্ঞানীদের অনেকেই একে ‘এশিয়ার ভূগর্ভের এভারেস্ট’ বলে উল্লেখ করে থাকেন।
প্রসঙ্গত, গত শতাব্দীর শেষ দিকে খবরের শিরোনামে আসার পর ডার্ক স্টার কেভে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। ফলে সেখানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনকে। বর্তমানে ওই গুহায় যেতে হলে প্রথমে পা রাখতে হয় বেস ক্যাম্পে। টানা কয়েকদিন হেঁটে সেখানে পৌঁছন পর্যটক বা অভিযাত্রীর দল।
গুহা মুখের সামনের বেস ক্য়াম্প থেকে ডার্ক স্টার কেভে প্রবেশ কিন্তু মোটেই সহজ নয়। এর জন্য জানতে হবে রোপ ক্লাইম্বিং। দড়ি ধরে ঝুলে ঝুলে গুহার মেঝেতে পা রাখতে পারেন পর্যটক বা অভিযাত্রী। সেখানে পৌঁছতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে বলে জানা গিয়েছে।
ডার্ক স্টার কেভের ভিতরের অংশও রহস্যে মোড়া। সেখানে পৌঁছয় না সূর্যের আলো। ফলে গুহাটির ভিতরে রয়েছে বরফের হ্রদ। গুহার ভিতরের তাপমাত্রা অধিকাংশ সময় থাকে হিমাঙ্কের নীচে। পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না নিয়ে সেখানে গেলে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটবে মৃত্যু, জানিয়েছে উজবেকিস্তান প্রশাসন।
এছাড়াও এই গুহার মধ্যে মমি হয়ে যাওয়া বেশ কিছু প্রাণীর দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, প্রাণীগুলি কোনও কারণে সেখানে প্রবেশ করেছিল। এর পর তাপমাত্রা মারাত্মকভাবে নেমে যাওয়ার কারণে মৃত্যু হয় তাদের। এখনও বিশ্বের খুব কম পর্যটকের পা পড়ে এই গুহায়।