Bangladesh

পিটার হাসের ফিরে আসায় উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা

  • পুঁজি খুঁজছে বিএনপি
  • যদিও কী কৌশলে আন্দোলন করা হবে তা স্পষ্ট নয়

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাজপথে অবরোধ, হরতাল কর্মসূচি পালন করছে বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। এসব কর্মসূচিতে বড় নেতারা অংশগ্রহণ না করলেও তৃণমূল নেতাকর্মীরা কর্মসূচি অনেকটা সফল করছেন। এ অবস্থায় কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার কৌশলে বিকল্প কর্মসূচির কথা ভাবছে দলটি।

গতকাল সোমবার এ কথা বলেন দলটির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা। তারা বলেন, ‘বিকল্প কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কারাবন্দি নেতাদের স্বজনদের সমাবেশ হবে। এর আয়োজক বিএনপি সমর্থক পেশাজীবীরা। গত শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির সমর্থক পেশাজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে। সামনে পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে নামার চিন্তাভাবনা চলছে।

দলের কৌশল ও নতুন কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ‘কর্মসূচি চলমান রয়েছে। প্রতিটি কর্মসূচি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। নতুন কর্মসূচির বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্থায়ী কমিটির সদস্য ছাড়া আত্মগোপনে থাকা বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। ইতিমধ্যে ভিন্নধর্মী একটি কর্মসূচি পালিত  হয়েছে। সময় হলে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে কী ধরনের কর্মসূচি আসবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘দেশের জনগণ ও বন্ধুপ্রতিম দেশগুলো চায় দেশে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। কিন্তু সরকার একতরফা নির্বাচন করার পথে হাঁটছে। এতে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না বলে মনে করছে সবাই। গতকাল সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, “আমাদের নির্বাচনে কিন্তু বাইরের থাবা পড়েছে।” তার এমন বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন করা নিয়ে তাদের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে। তা ছাড়া মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ছুটিতে থাকায় ও সরকারপন্থিদের নানা প্রচারণায় নেতাকর্মীদের মধ্যে নানা শঙ্কা কাজ করেছে। গতকাল ছুটি শেষে পিটার হাস কাজে যোগ দেওয়ায় আমাদের নেতাকর্মীরা উদ্দীপ্ত হয়েছে। তারা আশাবাদী হয়ে উঠছে। আশা করছি, নেতাকর্মীরা উদ্দীপ্ত হবে ও আগামীর কর্মসূচিতে তাদের অংশগ্রহণ বাড়বে।’

গতকাল নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘আমাদের নির্বাচনে কিন্তু বাইরের থাবা পড়েছে। তারা থাবা বিস্তার করেছে। দেশের অর্থনীতি, ভবিষ্যৎসহ অনেক কিছু রক্ষা করতে হলে আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি বেহাল। গার্মেন্টসশ্রমিকদের বেতন আশানুরূপ বাড়েনি। সরকার তাদের আন্দোলনকে কঠোরভাবে দমন করেছে। এতে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ গার্মেন্টশিল্পের ক্রেতারা ক্ষুব্ধ। আশঙ্কা করা হচ্ছে গার্মেন্টশিল্পে কোনো আঘাত আসতে পারে। সেদিকে সরকারের নজর নেই। জনগণ ও বন্ধুপ্রতিম দেশগুলো সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। সরকার সেদিকে না হেঁটে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের একতরফা নির্বাচনের পথে হাঁটছে। এতে দেশ বেকায়দায় পড়তে পারে। এত কিছুর মধ্যেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘জনগণের ভোটাধিকর, মানবাধিকার রক্ষায় আমরা রাজপথে রয়েছি। দেশপ্রেমিক প্রতিটি মানুষের, বিশেষ করে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবার উচিত এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়া। যারা জনগণের পক্ষে থাকবে না তারা জনগণের শত্রু হিসেবে গণ্য হবে। এ বিষয়টি বোঝানোর জন্য আমরা কাজ করছি। সিইসির বক্তব্যেও নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হবে বলে আমরা মনে করছি। ধীরে ধীরে সবাই জনগণের পক্ষে আসবে।’ 

১৫ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বর। যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। তার তিন সপ্তাহ পর হবে ভোটগ্রহণ। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটের প্রচার চালানোর সুযোগ থাকবে।

বিএনপির এক ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘আন্দোলন সংগ্রাম করছে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) তফসিল ঘোষণা করেছে এবং সরকারের বিভিন্ন দল ও জোটের নেতাদের ভাগিয়ে নির্বাচনে নিতে নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ করার মতো বিএনপি নেতা কিংবা জোট নেতাদের ভাগিয়ে নিতে পারেনি। এতে করে জনগণ ও বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর কাছে প্রত্যাশিত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে সরকার এবং আগামীতেও ব্যর্থ হবে।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d