বড় ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা সংকট কাটছে না শিগগির
গ্যাস সংকটের জাঁতাকলে পড়ে বন্ধ হয়ে আছে অনেক শিল্পকারখানার চাকা। এ কারণে উৎপাদন শিকেয় উঠেছে। আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্য সরবরাহে নেমে এসেছে বিপর্যয়। গ্যাস সংকটে শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়ায় প্রতিদিন কোটি কোটি ডলারের ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে বস্ত্র উৎপাদন কমেছে ৬৫ শতাংশ। নিট খাতের উৎপাদন কমেছে ৪০ শতাংশ। ফলে প্রধান পণ্য পোশাক রপ্তানি কমে গেছে অনেকটাই। দেশে অভ্যন্তরীণ পোশাক বাজারের চাহিদামতো সুতা ও কাপড়ের জোগান কমে গেছে। ফলে এসব পণ্যও আমদানি করতে হতে পারে; যা রিজার্ভে বাড়তি চাপ তৈরি করতে পারে।
সরকার বলছে, গ্যাসের এই সংকট সাময়িক। সরবরাহ বাড়ানোর জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মার্চের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিগগির গ্যাস সংকট দূর হবে না। তারা অভিযোগ করেন, দেশীয় গ্যাসের অনুসন্ধানের চেয়ে আমদানিতেই সরকারের নজর বেশি। ফলে সম্ভাবনা থাকার পরও দীর্ঘদিন গ্যাস অনুসন্ধানে অবহেলা করা হয়েছে। এদিকে উচ্চমূল্যের এলএনজি আমদানিতে বিপুল পরিমাণ যে ডলারের প্রয়োজন তাও সরকারের হাতে নেই। ফলে সংকট আরও ঘনীভূত হবে।
পেট্রোবাংলার সূত্রে জানা গেছে, দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন কমতে থাকায় এমনিতেই দেশে গ্যাসের হাহাকার চলছে। দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণ শেষে চালু করতে গিয়ে গেল শুক্রবার কারিগরি ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে ওইদিন এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল। পরে রাতে টার্মিনাল চালু হলেও শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ণ সক্ষমতায় চালানো যায়নি। অন্য টার্মিনালটি রক্ষণাবেক্ষণে পাঠানো হচ্ছে। এটি চালু হবে মার্চে। সে পর্যন্ত ৩০-৪০ কোটি ঘনফুটের ঘাটতি থাকবে। মার্চে দুটি টার্মিনাল চালু হলে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর সক্ষমতা তৈরি হবে। তবে অর্থ সংকটে এই গ্যাস আমদানি করা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ ছাড়া মার্চে গরম পড়বে, শুরু হবে সেচ মৌসুম, থাকবে রমজান। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা আরও বাড়বে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাড়াতে হবে গ্যাসের সরবরাহ। তখন সরবরাহ বাড়লেও শিল্পে ঘাটতি কতটুকু দূর হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা দিনে ৪২০ কোটি ঘনফুট। বিপরীতে এলএনজিসহ গড়ে সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ২৫৫ কোটি ঘনফুট।
শিল্পকারখানায় সংকট
শিল্পের মধ্যে গ্যাসের ব্যবহার বস্ত্র খাতেই বেশি। বস্ত্রকলে বাষ্প তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে গ্যাস ব্যবহার হয়। এ খাতে দুই বছর ধরে গ্যাস সংকট চলছে। তবে নতুন করে গ্যাস সংকট উৎপাদন কাঠামোকে এলোমেলো করে দিয়েছে। উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বস্ত্রকলগুলো সক্ষমতার চেয়ে ৬৫ শতাংশ কম উৎপাদন করছে। দিনে গ্যাসের চাপ থাকছে না।
গ্যাসের চাপ যেখানে ১৫ পিএসআই (পাউন্ড পার স্কয়ার ইঞ্চি) থাকার কথা, সেখানে মিলছে ১ থেকে ২ পিএসআই। এত কম চাপের কারণে জেনারেটর চালু হয় না। ফলে অনেক বস্ত্রকলে উৎপাদন বন্ধ। যেখানে পিএসআই একটু বেশি পাওয়া যায়, তার সঙ্গে বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়িয়ে কোনো রকমে জেনারেটর চালু করা যায়। এ পদ্ধতিতে কিছু কিছু বস্ত্রকল খুঁড়িয়ে চলছে। তবে তা উৎপাদন সক্ষমতার মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ। আবার জেনারেটর চালাতে অতিরিক্ত বিদ্যুতের ব্যবহার উৎপাদন খরচ বাড়াচ্ছে। বস্ত্রকলগুলোতে সাধারণত গ্যাসের ব্যবহার ৭৫ শতাংশ, বাকি ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য সংযোগ নেওয়া হয়ে থাকে।
বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) গ্যাস বিদ্যুৎ-সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, ‘সাধারণত একটি জেনারেটর ১ হাজার কিলোওয়াটের হয়ে থাকে। ৭০০ কিলোওয়াটের শক্তি থাকলেও কাজ চালানো যায়। সেখানে বিদ্যুতের অতিরিক্ত ব্যবহার বাড়িয়ে ২৫০ থেকে ৩০০ কিলোওয়াটের জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এতে জেনারেটরের ওপর চাপ বাড়ছে। প্রায় সব বস্ত্রকলেই জেনারেটর নষ্ট হওয়ার ঘটনা আছে। আমার বস্ত্রকলে তিনটি জেনারেটর নষ্ট হয়, যেগুলো কেজি দরে বিক্রি করতে হয়েছে। ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন জেনারেটর কিনতে হয়েছে আমাকে।’
তিনি বলেন, ‘উৎপাদন কমে আসায় ক্ষতি কমাতে অনেক বস্ত্রকল শ্রমিক ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছে। চাপ কম থাকায় ডায়িং ও প্রিন্টিংয়ের মান খারাপ হয়ে যাচ্ছে। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৬ সালের আগে গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে না। ফলে যাদের পক্ষে সম্ভব, তারা এ দুই বছর আশায় আশায় লোকসান গুনবেন। আর যারা পারবেন না, তারা চালু থাকা বাকি অংশও বন্ধ করতে বাধ্য হবেন।’
পোশাক খাতের মধ্যে নিট অর্থাৎ গেঞ্জি-জাতীয় পণ্যের প্রায় শতভাগ কাঁচামাল দেশীয় বস্ত্রকলগুলো জোগান দেয়। কয়েকজন উদ্যোক্তা বলেছেন, বস্ত্রকলের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাড়তি ডলার ব্যয়ে কাঁচামাল আমদানি করা হচ্ছে। নিট পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিকেএমইএর সহসভাপতি ফজলে শামীম এহসান জানান, অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে কাঁচামাল পাচ্ছেন না তারা। এ কারণে নিটের রপ্তানি পোশাকের উৎপাদন ৪০ শতাংশ কমেছে। গতকাল পর্যন্ত কাঁচামাল আমদানি তেমন একটা হয়নি। অনেকেই এখন বাধ্য হয়ে আমদানির কথা ভাবছেন।
এদিকে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা চেম্বারের (ডিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ গ্যাস সংকটে শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়ায় প্রতিদিন কয়েক লাখ কোটি ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। যা গোটা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে ডিসিআইর পক্ষ থেকে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমস্যাটি সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে
গ্যাস সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, কয়েক মাস ধরেই শিল্পকারখানায় গ্যাস সংকট চলছে। সরবরাহ না থাকায় দিনের পর দিন বিভিন্ন কারখানা বন্ধ থাকছে। এতে উৎপাদনে ধস নেমেছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে শিল্পোৎপাদন গভীর সংকটে পড়বে। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। শিল্পকারখানা বন্ধ হলে কিংবা বেতন দিতে না পারলে লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। দেশের অর্থনীতিই চাপে পড়বে। তাই গ্যাস সংকট নিরসনে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। দেখে মনে হচ্ছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, গ্যাস আমদানিনির্ভর একটি জ্বালানি। বর্তমানে বৈশ্বিক পরিস্থিতিও ভালো নয়। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণ ও হামলার কারণে লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিকল্প পথে জাহাজ চলাচলের কারণে দূরত্ব বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এর ওপর আছে ডলারের দর বৃদ্ধি। শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতেও খরচ বাড়ছে। চলমান গ্যাস সংকট ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয় ২০২৬ সাল থেকে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের কথা বলছে। মাত্র ২০২৪ সাল শুরু হয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের জন্য যদি দুই বছর অপেক্ষা করতে হয়, সেই সময়টা অনেক বেশি। শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস দিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
জানতে চাইলে জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, বর্তমান সংকট সাময়িক। এফএসআরইউর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সরবরাহ একটু কমেছে। দ্রুত সরবরাহ আগের অবস্থায় যাবে। তিনি বলেন, এফএসআরইউগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। ফলে গ্রীষ্ম মৌসুমে যখন বাড়তি গ্যাস লাগবে, তখন এলএনজি আমদানি বাড়িয়ে চাহিদা মেটানো যাবে। দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে অনুসন্ধানে জোর দেওয়া হয়েছে। তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, ডলারের যে সংকট তৈরি হয়েছে, এর জন্য বৈশ্বিক পরিস্থিতি দায়ী। যুদ্ধের কারণে গত বছর জ্বালানি আমদানিতে ১৪ বিলিয়ন ডলার বাড়তি খরচ হয়েছে। সামনে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, এখনই বলা যাচ্ছে না।
Hi superb blog! Does running a blog such as this take a large amount of work?
I have absolutely no understanding of computer programming but I
was hoping to start my own blog in the near future. Anyways, should you have
any ideas or techniques for new blog owners please share.
I know this is off subject but I just wanted to ask. Many thanks!
Also visit my site vpn special coupon code (vpnspecialcouponcode.wordpress.com)
This website certainly has all of the info I wanted concerning this subject and didn’t know who to ask.
My website: what is vpn meaning
You actually make it seem really easy together with your presentation however I to find
this matter to be really one thing that I think I’d never understand.
It seems too complex and very broad for me.
I am having a look ahead in your next post, I’ll
attempt to get the cling of it!
My web page :: vpn special coupon code
I’m not that much of a internet reader to be
honest but your sites really nice, keep it up! I’ll go ahead and bookmark your website to come back later.
All the best
Stop by my homepage vpn ucecf
I really like it when people come together and share views.
Great blog, keep it up!
Also visit my website … facebook vs eharmony to find love online
Pretty component of content. I simply stumbled upon your
blog and in accession capital to claim that I acquire
actually enjoyed account your weblog posts. Anyway I will be subscribing for your feeds and even I
achievement you get right of entry to consistently quickly.
My homepage … eharmony special coupon code 2024
This is very interesting, You’re a very skilled blogger.
I’ve joined your rss feed and look forward to seeking
more of your magnificent post. Also, I have shared your website in my social networks!
Also visit my website nordvpn special coupon code 2024