Trending

বৈশ্বিক ঋণ ৩০৭ লাখ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে

ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সের মতে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে বিশ্ব অর্থনীতির ঋণের বোঝা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে, যেখানে প্রায় দুই বছরের পতনের পর মোট দেশজ উৎপাদনের অংশ হিসাবে ঋণ আবারো বেড়েছে।

গত মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্লোবাল ডেট মনিটর রিপোর্টে আইআইএফ জানিয়েছে, গত জুন পর্যন্ত ছয় মাসে সার্বভৌম, কর্পোরেট এবং পরিবারের মোট ঋণের পরিমাণ ১০ লাখ কোটি বেড়ে প্রায় ৩শ’ ৭ লাখ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। বৈশ্বিক ঋণের পূর্ববর্তী শিখরটি ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো আগ্রাসীভাবে সুদের হার বৃদ্ধি শুরু করার আগে ২০২২ সালের গোড়ার দিকে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে অতীতে হ্রাস পাওয়া জিডিপির বৈশ্বিক ঋণ, এ বছরের শুরু থেকে ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে জুনের মধ্যে ৩৩৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

বেশিরভাগ দেশে উচ্চ সুদের হার ঋণের ব্যয়কে বাড়িয়ে তোলে যা সার্বভৌম ক্রেডিট রেটিংগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সরকারের অর্থায়ন ব্যয় বাড়ানোর ফলেও এমনটি হয়।

আইআইএফ-এর প্রতিবেদনের প্রধান লেখক এমরে টিফটিক বলেন, ‘আমাদের উদ্বেগ হল, দেশগুলোকে সুদের ব্যয়ের জন্য আরো বেশি অর্থ বরাদ্দ করতে হবে, যা তাদের তহবিল ব্যয় এবং ঋণের গতিশীলতার ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে।’ আইআইএফ জানিয়েছে, বছরের প্রথমার্ধে অতিরিক্ত ঋণের ৮০ শতাংশেরও বেশি পরিপক্ক বাজার থেকে এসেছে, যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি, ফিচ রেটিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাডওয়ার্ড পার্কার বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান সুদের বিলগুলো জনসাধারণের অর্থ এবং সার্বভৌম রেটিং এর, বিশেষত উন্নত বাজারের মূল ঝুঁকি।’ ঋণের মাত্রা বৃদ্ধি সত্ত্বেও ২০০৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে উন্নত বাজারের সুদ বিল নামমাত্র কম ছিল। পার্কার জানান, সুদ পরিশোধ এখন ঋণ বা রাজস্বের চেয়ে দ্রুত বাড়ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি মোকাবেলায় আরো ঋণ পুনঃঅর্থায়ন এবং সুদের হার বেশি থাকায় ঋণের সুদের ব্যয় বাড়তে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার ওইসিডি সতর্কতা দিয়েছে যে, অর্থনৈতিক চাপের ক্রমবর্ধমান লক্ষণ সত্ত্বেও মুদ্রাস্ফীতিকে পরাজিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সুদের হার উচ্চ পর্যায়ে রাখা উচিত অথবা তা আরো বাড়ানো উচিত। সরকারের ঋণের দুর্বলতা হ্রাস করতে এবং দীর্ঘমেয়াদী ঋণপ্রবণতা বিপরীত করতে সহায়তা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেয়া উচিত। যেহেতু আরো বেশি দেশ তাদের ঋণ পুনর্গঠন করতে বাধ্য হচ্ছে, উচ্চমাত্রার অভ্যন্তরীণ ঋণ তাদের ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে কারণ আইএমএফের ঋণ পুনর্গঠন কর্মসূচি বিনিয়োগ তহবিল এবং অন্যান্য সার্বভৌম এবং বৈদেশিক মুদ্রাঋণের মতো বহিরাগত ঋণদাতাদের দিকে বেশি মনোনিবেশ করে।

টিফটিক বলেন, ‘আমাদের কাছে যে সনাতন ব্যবস্থাপনা রয়েছে তা মূলত বৈদেশিক ঋণের দুর্বলতাগুলো মোকাবিলার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধির তীব্র হ্রাসের মূল্যে উদীয়মান বাজারগুলোকে ঋণ এবং মুদ্রাস্ফীতির দুষ্টচক্রের মাঝখানে রাখতে সক্ষম।’ আইএমএফ বলেছে, ‘ঋণের বোঝা কমানোর ফলে আর্থিক স্পেস তৈরি হবে এবং নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা আগামী বছরগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সহায়তা করবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button