International

মস্কোয় হামলার আসল পরিকল্পনাকারী কারা: রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তার ভাষ্য

মস্কোয় কনসার্ট হলে ভয়াবহ হামলার সঙ্গে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র জড়িত বলে মনে করেন রাশিয়ার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির কর্মকর্তা আন্দ্রে পোপভ। তাঁর মতে, মস্কোয় এই নৃশংসতার নির্দেশ দিয়েছে কিয়েভ সরকার। আর এতে ‘নিশ্চিতভাবে’ অর্থায়ন করেছে ওয়াশিংটন।

স্পুতনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আন্দ্রে পোপভ বলেন, সন্দেহভাজন হামলাকারীরা সীমান্ত অতিক্রম করে ইউক্রেন যেতে চাচ্ছিলেন। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, তাঁরা ইউক্রেন ব্যবহার করে পালাতে চাচ্ছিলেন। দেশটির গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগসাজশ ছাড়া তাঁদের সীমান্ত পেরোনো বাস্তবসম্মত নয়।  

এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরও বলেন, হামলার পেছনে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হাত রয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর এমন দাবির কোনো ভিত্তি নেই। ইউক্রেনে যাওয়ার সময় আটক সন্দেহভাজন হামলাকারীদের সবার কাছে তাজিকিস্তানের পাসপোর্ট ছিল। এ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে মস্কোয় নৃশংসতার নির্দেশ দিয়েছিল কিয়েভ সরকার।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ’ হস্তক্ষেপে মস্কোয় হামলা সংঘটিত হতে পারে—এমন মন্তব্য করে রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা আন্দ্রে পোপভ বলেন, ওয়াশিংটন ‘নিশ্চিতভাবে’ এই হামলার পেছনে অর্থায়ন করেছে। কারণ, ‘ইউক্রেনের মাধ্যমে যে সন্ত্রাসবাদ চালানো হচ্ছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে অর্থ আসছে না।’

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মস্কোর উত্তরে ক্রাসনোগোর্স্ক অঞ্চলে ক্রোকাস সিটি হলে শত শত মানুষ কনসার্ট দেখতে জড়ো হয়েছিলেন। গান শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট আগে সশস্ত্র কয়েকজন সেখানে ঢুকে পড়েন। তাঁরা নির্বিচার গুলি ছুড়তে শুরু করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় অন্তত ১৪৩ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।

এ হামলার পর এফএসবির পরিচালক আলেসান্দার বোর্তনিকভ শুক্রবার বলেন, সন্দেহভাজন ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চারজন সরাসরি হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেন সীমান্তের কাছে ব্রিয়ানস্ক অঞ্চল থেকে তাঁদের আটক করা হয়েছে।

এদিকে হামলার পর এর দায় স্বীকার করে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস। সংগঠনটির ওয়েবসাইট আমাক ও তথ্য আদান–প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে বিষয়টি জানিয়েছে তারা। একই সুরে কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রও। অপর দিকে শুরু থেকেই হামলায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নাকচ করে আসছে কিয়েভ সরকার।

যদিও রাশিয়ার ভূখণ্ডে বহু আগে থেকেই হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে ইউক্রেনের গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে। মস্কোর অভিযোগ, রাশিয়ার বেলগোরোদ অঞ্চলে গোলা হামলা চালিয়েছে তারা। এ ছাড়া রুশ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দারিয়া দুগিনা ও সাংবাদিক ভ্লাদলেন তারাস্কি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এসব গোয়েন্দা জড়িত।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button