মহাকাশেও চীন-রাশিয়াকে মোকাবিলা করবে যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন মহাকাশে চীন ও রাশিয়াকে মোকাবিলা করতে শক্তিমত্তা বাড়াচ্ছে। ওয়াশিংটন মনে করে, চীন ও রাশিয়ার বিভিন্ন মহাকাশভিত্তিক অভিযান যুক্তরাষ্ট্রের স্থলভাগে থাকা সামরিক বাহিনী, সম্পদ ও কক্ষপথে থাকা কৃত্রিম উপগ্রহের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তবে মহাকাশে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে শক্তি বাড়াচ্ছে, তার বিস্তারিত গোপন রাখছে পেন্টাগন। তবে প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা এটা নিশ্চিত করেছেন, তাদের এ প্রচেষ্টার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। কারণ, মহাকাশ ক্রমেই যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে।
পেন্টাগনের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ কেবল সামরিক কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান, দিকনির্দেশনা ঠিক করা বা চিহ্নিত করার ওপর নির্ভরশীল থাকবে না, তারা নতুন নতুন মহাকাশভিত্তিক বিভিন্ন যন্ত্রের বিকাশ ঘটাবে। এসব যন্ত্র কৃত্রিম উপগ্রহের নেটওয়ার্ককে বিরোধীদের হামলার মুখ থেকে বাঁচাবে।
নতুন পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের আগের সামরিক পরিকল্পনাগুলো থেকে আলাদা। ২০১৯ সালে মার্কিন বিমানবাহিনী স্পেস ফোর্স নামে একটি নতুন শাখা গঠন করে। গত মার্চে ওই শাখার প্রধান জেনারেল চান্স সলৎজম্যান বলেন, ‘আমরা অবশ্যই আমাদের মহাকাশের সক্ষমতাকে রক্ষা করব।’
পেন্টাগনের কর্মকর্তা ও সাম্প্রতিক গোপন নথির ভিত্তিতে মার্কিন গোয়েন্দারা জানান, চীন ও রাশিয়া উভয় দেশই স্থলভিত্তিক উচ্চক্ষমতার লেজার, অ্যান্টি-স্যাটেলাইট ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন যন্ত্র পরীক্ষা ও মোতায়েন করেছে, যা মহাকাশে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ নষ্ট করতে পারে।
রাশিয়া মহাকাশভিত্তিক পারমাণবিক বোমার উন্নয়ন করছে– এমন খবরের ভিত্তিতে মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। এটা কক্ষপথে থাকা বাণিজ্যিক বা সামরিক উভয় ধরনের কৃত্রিম উপগ্রহগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়ার সামর্থ্য রাখে। পেন্টাগনের কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে রাশিয়া এক ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ব্যবহার করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত অস্ত্রব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করেছে।
তবে মহাকাশে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র মোতায়েন করেছে চীন। এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা ফ্র্যাঙ্ক কেন্ডাল বলেন, ‘চীন আমাদের বাহিনীকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পরিকল্পনায় মহাকাশে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র মোতায়েন করেছে।’ এগুলোকে যদি না হারাতে পারি, তাহলে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে আমরা সফলভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারব না।