মাথাপিছু মাসিক গড় আয় এখন ৭৬১৪ টাকা
খানা আয় ও ব্যয় জরিপের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ
দেশে একজন মানুষের মাসিক গড় আয় ৭ হাজার ৬১৪ টাকা। আট বছর আগে ২০১৬ সালে গড় আয় ছিল ৩ হাজার ৯৪০ টাকা। সে হিসাবে এই আয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০২২ সালের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। এর আগে গত এপ্রিল মাসে প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী এখন সার্বিক দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭। ছয় বছর আগে অর্থাৎ ২০১৬ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৪ দশমিক ৩। দেশে অতি দারিদ্র্যের হার ৫ দশমিক ৬। ছয় বছর আগে এই হার ছিল ১২ দশমিক ৯। সবচেয়ে বেশি দারিদ্র্য বরিশাল বিভাগে। এই বিভাগে দারিদ্র্যের হার ২৬ দশমিক ৯। আর সবচেয়ে কম পার্শ্ববর্তী খুলনা বিভাগে। এই বিভাগে দারিদ্র্যের হার ১৪ দশমিক ৮। এ ছাড়া দারিদ্র্যের হার ঢাকায় ১৭ দশমিক ৯, চট্টগ্রামে ১৫ দশমিক ৮, রাজশাহীতে ১৬ দশমিক ৭, সিলেটে ১৭ দশমিক ৪, রংপুরে ২৪ দশমিক ৮ এবং ময়মনসিংহে ২৪ দশমিক ২।
বিবিএসের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গ্রামের মানুষের চেয়ে শহরের মানুষের আয় অনেক বেশি। শহরের একজন মানুষের মাসিক গড় আয় ১০ হাজার ৯৫১ টাকা। আর গ্রামের মানুষের আয় অর্ধেকের কাছাকাছি ৬ হাজার ৯১ টাকা। বাংলাদেশে একটি খানা বা পরিবারের গড় সদস্যসংখ্যা ৪ দশমিক ২৬। পরিবারের সবাই আয় করেন না। এক্ষেত্রে উপার্জনকারীদের গড় আয় ২৫ হাজার ৭০৭ টাকা। ৮ বছর আগে এর পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৬৪৬ টাকা। বিবিএসের হিসাবে পরিবারের মাসিক আয় ৩২ হাজার ৪২২ টাকা। মাসে খরচ হয় গড়ে সাড়ে ৩১ হাজার টাকা। খাবারের পেছনে প্রতি মাসে গড়ে ১৪ হাজার ৩ টাকা খরচ করে একটি পরিবার। প্রাথমিক প্রতিবেদনে আয় বৈষম্য বৃদ্ধির তথ্য উল্লেখ করা হয়েছিল। চূড়ান্ত হিসাবেও সেটি রয়েছে। এতে দেখা গেছে দেশের মোট আয়ের প্রায় ৪১ শতাংশ করেন উচ্চ আয়ে ১০ শতাংশ মানুষ। ২০১৬ সালে আয়ের এই হার ছিল ৩৯। তবে সবচেয়ে গরিব ১০ শতাংশ মানুষের আয়ের অংশীদারত্ব কিছুটা বেড়েছে। এখন দেশের মোট আয়ের ১ দশমিক ৩১ শতাংশ তাদের হাতে। আট বছর আগে এই হার ছিল ১ দশমিক শূন্য ২। বৈষম্য হিসাব করার মাধ্যম গিনি সহগ। বিবিএসের তথ্যউপাত্ত অনুযায়ী, ২০২২ সাল শেষে গিনি সহগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে দশমিক ৪৯৯ পয়েন্ট। ২০১৬ সালে গিনি সহগ ছিল দশমিক ৪৮২ পয়েন্ট। সাধারণত দশমিক ৫০০ হলেই একটি দেশকে উচ্চ আয়বৈষম্যের দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই গিনি সহগ যত শূন্যের কাছাকাছি থাকবে, ততই বৈষম্য কমার নির্দেশ করবে।