Bangladesh

যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপের আহ্বানকে সন্দেহ আওয়ামী লীগের

তফসিলের ঠিক আগমুহূর্তে সংলাপের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের চিঠির পেছনে কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না, সেই প্রশ্নও রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের অনেকের।

যুক্তরাষ্ট্রের শর্তহীন সংলাপের আহ্বানকে সন্দেহের চোখে দেখছে সরকার ও আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ঠিক আগমুহূর্তে সংলাপের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের চিঠির পেছনে কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না, সেই প্রশ্নও রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের অনেকের।

সংলাপের আহ্বান–সম্পর্কিত যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর চিঠি গত সোমবার ঢাকায় বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এই চিঠিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শর্তহীন সংলাপে বসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গতকালও চিঠি না পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। চিঠি দেওয়ার জন্য ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস কোনো যোগাযোগ করেছে কি না, যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি আওয়ামী লীগ গ্রহণ করবে কি না—এসব প্রশ্নে সরকারের একজন মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সরাসরি কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, তিনি কিছু বলতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি পেলে আমরা দলের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করব।

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক

সংলাপের বিষয় আবার যখন আলোচনায় এসেছে, তখন বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েই দুই দল এগোচ্ছে। আওয়ামী লীগ এখন পুরোদমে নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু মামলা ও গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে কারাগারের বাইরে থাকা বিএনপির নেতারা আত্মগোপনে আছেন। এমন পটভূমিতে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে দলটি অবরোধের মতো কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।

তবে বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনা বা সমঝোতার উদ্যোগ নিতে রাজি নয় সরকার। সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ থেকে শুরু করে হরতাল–অবরোধ অব্যাহত রেখে বিএনপি রাজনীতিকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিয়েছে এবং পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে। বিএনপির এই অবস্থানের মুখে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি নয় আওয়ামী লীগ।

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক গতকাল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি পেলে আমরা দলের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করব।’

সংলাপের বিষয় আবার যখন আলোচনায় এসেছে, তখন বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েই দুই দল এগোচ্ছে। আওয়ামী লীগ এখন পুরোদমে নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু মামলা ও গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে কারাগারের বাইরে থাকা বিএনপির নেতারা আত্মগোপনে আছেন।

বিএনপিও যুক্তরাষ্ট্রের চিঠির ব্যাপারে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করার কথা বলছে। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের যাঁরা এখনো গ্রেপ্তার এড়িয়ে জেলের বাইরে আছেন, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

সংলাপে গুরুত্ব দিচ্ছে না আ.লীগ

যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া মেনে সংলাপে গুরুত্ব দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলটি মনে করছে, তফসিল ঘোষণার ঠিক আগমুহূর্তে সংলাপ চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি দেওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক নয়। এর মাধ্যমে নির্বাচন ঝুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা থাকতে পারে। তাই সংলাপে গুরুত্ব না দিয়ে তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনের পথে এগিয়ে যেতে চাইছে আওয়ামী লীগ।

 তবে আওয়ামী লীগ এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপের চিঠি পায়নি। এ কথা জানিয়েছেন দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।

দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের যাঁরা এখনো গ্রেপ্তার এড়িয়ে জেলের বাইরে আছেন, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

বিএনপি আসলে কী করবে

যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপের আহ্বানের চিঠি বিএনপি পেয়েছে গত সোমবার। তারা এই চিঠির ব্যাপারে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে মনে হয়েছে। তবে বিএনপি নিজেরা সংলাপের ব্যাপারে কোনো দায়িত্ব নিতে রাজি নয়। তারা দায়িত্ব চাপাতে চায় সরকারের ওপর।

বিএনপির নেতারা মনে করেন, গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে সংঘাত এবং পরে পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযান যা চলছে, এটি নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের পরিকল্পনার অংশ। বিএনপিকে বাইরে রেখে আবারও একতরফা নির্বাচন করার চেষ্টা চলছে। ফলে সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই সম্প্রতি দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন নেতাসহ সারা দেশে আট হাজারের বেশি নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আলোচনার মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার প্রশ্নে সরকারের হাতেই এখন সবকিছু, মানে বল সরকারের কোর্টে।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এম সাখাওয়াত হোসেন

অন্যদিকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি এখন আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে বিএনপি তাদের আন্দোলনের গতি আরও বাড়ানোর কথা বলেছে।

সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি সংলাপের পক্ষে। দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের চিঠির মাধ্যমে আলোচনার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই সুযোগ প্রধান দুই দলের নেওয়া উচিত।

আলোচনার সম্ভাবনা কতটা

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, দুই পক্ষ যে অবস্থানে চলে গেছে, তাতে তাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা ও সমঝোতার সম্ভাবনা কম। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এম সাখাওয়াত হোসেন গতকাল বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন হলে এর দায়দায়িত্ব কার ওপর চাপবে—সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে ক্ষমতাসীন দলেরই সংলাপ–সমঝোতার উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তিনি মনে করেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার প্রশ্নে সরকারের হাতেই এখন সবকিছু, মানে বল সরকারের কোর্টে।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor