International

শহরবাসীর জন্য ৪২ কোটি টাকা রেখে গেলেন জীর্ণ পোশাক পরা সেই ব্যক্তি

জিওফ্রে হল্ট ছিলেন বেশ নিরীহ গোছের মানুষ। থাকতেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের হিন্সডেলে। সেখানে একটি ভ্রাম্যমাণ বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ করতেন তিনি। খুব সাদাসিধে চললেও মানুষটির জীবন ছিল কৌতূহলোদ্দীপক।

জীর্ণ পোশাক পরে শহরময় হল্ট ঘুরে বেড়াতেন। ঘাস কাটার গাড়িতে চড়ে যেদিকে খুশি যেতেন। প্রধান সড়কের পাশে গাড়ি থামিয়ে পত্রিকা পড়তেন বা বসে বসে অন্য গাড়ির চলাচল দেখতেন।

হল্ট অন্যদের জন্য ছোটখাটো কাজও করতেন। কিন্তু খুব কমই শহরের বাইরে যেতেন। হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের গাড়ি চালানো শেখালেও নিজে একটা সময় গাড়ি ছেড়ে সাইকেল চালাতেন। আর শেষমেশ চালানো শুরু করেন ঘাস কাটার গাড়ি। পার্কে থাকা তাঁর ভ্রাম্যমাণ বাড়িটিতে তেমন আসবাব ছিল না। না ছিল টেলিভিশন, কম্পিউটার। তাঁর খাটের অবস্থাও ভালো ছিল না।

হল্টের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু এডউইন স্মিথ বলেন, তিনি মনে করতেন, যা চাইতেন, তিনি তা পেতেন। কিন্তু তিনি কখনো বেশি কিছু চাননি।

চলতি বছরের শুরুর দিকে হল্ট মারা যান। এরপর বেরিয়ে আসে তাঁর এক গোপন তথ্য। তিনি ছিলেন প্রায় ৩৮ লাখ মার্কিন ডলারের (৪২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা প্রায়) মালিক। তাঁর সব সম্পদ তিনি দিয়ে গেছেন এই শহরের ৪ হাজার ২০০ বাসিন্দাকে।

শহরের নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারপারসন স্টিভ দিওরিও বলেন, ‘আমার মনে হয় না হল্ট যে এতটা সফল ছিলেন, এটা কেউ ভাবতে পেরেছেন। আমি জানি, তাঁর পরিবার ছিল না। এরপরও তিনি যে শহরে থাকতেন, সেখানকার মানুষের জন্য (এত সম্পদ) রেখে যাওয়া… এটা দুর্দান্ত এক উপহার।’

এই অর্থ ব্যয় নিয়ে নানা প্রস্তাব আসছে। কেউ বলছেন হাইকিং, মাছ ধরা, ক্ষুদ্র ব্যবসা খাতে হল্টের দান করা এই অর্থ ব্যয় করা যায়। আবার কেউ বলছেন, শহরের হল ঘড়িটিকে ঠিকঠাক করা, ভবন পুনরুদ্ধার করা। কেউ কেউ আবার হল্টের সম্মানে নতুন ভোট গণনা যন্ত্র কেনার প্রস্তাব দিয়েছেন। কারণ, হল্ট সব সময় ভোট নিশ্চিত করতে চাইতেন। আরেকটি হতে পারে অনলাইনে গাড়ি চালানোর শিক্ষা কোর্স।

শহরের প্রশাসক ক্যাথরিন লিঞ্চ বলেন, হল্টের রেখে যাওয়া অর্থ খুব সাবধানতা ও যত্নের সঙ্গে খরচ করবে হিন্সডেল।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button