শেখ হাসিনা-মোদি বৈঠক আজ, তিন সমঝোতার প্রস্তুতি
তিন দিনের সফরে আজ শুক্রবার দুপুরে ভারতের নয়াদিল্লিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী এ সফর করবেন।
আজ নয়াদিল্লি পৌঁছার পর সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসবেন। সেই বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের কথা রয়েছে।
এগুলো হলো—দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে লেনদেনের সরলীকরণ (রুপি ও টাকায় বিনিময়), কৃষি গবেষণা খাতে সহযোগিতা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। নয়াদিল্লিতে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ আসবে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না। আমরা যেটি চাই তা হালো আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা। ’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা কোনো কারচুপি চাই না। আমরা স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন চাই। সেখানে কেউ যদি আমাদের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়, সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই।
তবে কেউ যদি মাতবরের ভূমিকা নিয়ে আসে, আমরা তা সহ্য করব না। ’ মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কাউকে ভয় পান না।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সম্প্রতি বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির প্রসঙ্গ তুলবে বাংলাদেশ। তবে এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, তিস্তার বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি, স্থিতিশীলতাসহ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। নয়াদিল্লি থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, আগামীকাল শনিবার জি২০ সদস্য ও অতিথি রাষ্ট্রের নেতাদের সম্মানে আয়োজিত নৈশ ভোজে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও তাঁর সাক্ষাৎ হতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের সভাপতিত্বে জি২০ শুরু হয়েছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এবং সভাপতিত্বের এই মেয়াদে ভারত বাংলাদেশসহ মোট ৯টি দেশকে সব জি-২০ বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। এই দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, মিসর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর, স্পেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
মোমেন বলেন, ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে অনন্য সম্পর্কের কারণে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে এই সুযোগ পেয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়।