Bangladesh

‘স্যাংশন-ভিসা নীতির ওপর নির্ভর করে থাকলে হবে? যা করার আমাদেরই করতে হবে’

সরকার পতনে যা কিছু করা দরকার তাই করতে হবে বলে সবাইকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সরকার পতনে যা কিছু করা দরকার তাই করতে হবে বলে সবাইকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীতে শিক্ষকদের এক মহাসম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন আমরা যে দুঃশাসনের মধ্যে পড়েছি, এখন যারা আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আমাদের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে, মারছে, খুন করছে, হত্যা করছে, লুণ্ঠন করছে… এটাকে সরানোর দায়িত্ব কার? এই স্যাংশনের ওপর নির্ভর করে থাকলে হবে, ভিসা নীতির ওপর নির্ভর করে থাকলে হবে? অন্য কেউ করে দিয়ে যাবে? যা করার আমাদেরই করতে হবে।’

‘এখন তারা ভালো কথা শুনছে না, শান্তির কথা শুনছে না। আমরা বার বার বলছি যে, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি… বলছি, পদযাত্রা করছি, রোডমার্চ করছি, সমাবেশ করছি… শুনছে? চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী। তবে এখন তাদের শোনাতে হবে এবং শোনানোর জন্য যা কিছু করা দরকার তাই করতে হবে। সেজন্য সমগ্র জাতিকে এগিয়ে আসতে হবে এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য, সব মানুষকে এই সরকারকে সরাতে রাজপথে সোচ্চার হতে হবে। আমরা বিজয়ী হবই’, বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি এখনো বলি, এখনো আহ্বান জানাচ্ছি, অনেক কষ্ট দিয়েছেন মানুষকে, অনেক হত্যা করেছেন, অনেক স্ত্রীকে স্বামীহারা করেছেন, অনেক মাকে পুত্রহারা করেছেন, অনেক সন্তানকে পিতাহারা করেছেন, অনেক রক্ত ঝরিয়েছেন। এখনো সময় আছে দয়া করে মানে মানে বিদায় হোন।’

‘আপনারা যে অপকর্ম করেছেন, এই অপকর্মের জবাবদিহি একসময় করতে হবে। তার আগে সসম্মানে যদি বিদায় হতে চান, তাহলে এখনই সময়, বিদায় হোন। আমরা বলেছি, পদত্যাগ করুন, এই সংসদ বিলুপ্ত করুন এবং স্পষ্ট করে বলেছি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন’, বলেন তিনি।

‘বিদেশিরা কেউ বলেনি কেয়ারটেকার সরকারের কথা’ গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা বলতে হয় না… এটা বুঝা যায় যে, এখানে (বাংলাদেশ) নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীন ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তার প্রমাণ তারা দিয়েছে ২০১৪ সালে, ২০১৮ সালে আর এখনো প্রমাণ দিচ্ছে। আর বলে কি না নির্বাচন সুষ্ঠু করা তো আমাদের কর্তব্য, সুষ্ঠু করছি।’

‘গতকাল প্রধানমন্ত্রী প্রেস কনফারেন্সে বলেছেন, আমাদের নির্বাচন নিয়ে এতো কথা আমি বুঝতে পারি না। নির্বাচন তো আমরা করছি সুন্দর নির্বাচন, অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করছি। এখন এই কথাগুলো শুনলে ঘোড়াও হাসে। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন করেন এটা বিস্ময়ের ব্যাপার। যাই হোক অবৈধভাবে হোক আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো। ১৫ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী আছেন। তিনি কি একবারও চিন্তা করেন না যে, তার এই কথা শুনে মানুষ হাসবে’, যোগ করেন তিনি।

গত কয়েক বছরে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৪৫ লাখ মিথ্যা মামলা দায়েরসহ গত এক বছরে রাজপথে ২২ জন নেতাকে গুলি করে হত্যা, আট হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, লক্ষাধিক নেতাকর্মী-সমর্থককে আসামি করা, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা প্রদান ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়ার কথাও তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘র‌্যাবের ওপর স্যাংশন দিয়েছে… ওরা মানুষ খুন করতো, কথায় কথায় গুলি করে মেরে দিতো, গুম করে দিতো… এখন ভিসা নীতি আরোপ করেছে। ভিসা নীতিতে এখন সবাই আতঙ্কিত। ওদের যারা দুর্নীতি করেছে, যারা অন্যায় করেছে, যারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, যারা বিচারক হয়ে দলীয়ভাবে বিচার করছে, যে ব্যবসায়ী চুরি করছে, দুর্নীতি করছে সবাই এখন আতঙ্কিত হয়ে গেছে।’

‘সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের ছাপ আমরা দেখতে পাচ্ছি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মুখে। এমনভাবে কথাবার্তা বলছেন মনে হয় যে…
সাবেক চিফ জাসিস্ট বিচারপতি এ টি এম আফজাল একবার রায়ের মধ্যে লিখেছিলেন, রং হেডেড পারসন। সেই রং হেডেড পারসন আরও রং হেডেড হয়ে গেছেন। রং হেডেড পারসন যদি আরও রং হেডেড হয় তাকে কী বলে? উন্মাদ’, বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এসব ডিগবাজিতে কোনো লাভ হবে না। ডিগবাজি করে একবার বাইরে যাচ্ছেন, এদিক-ওদিক যাচ্ছেন। বলছেন, খালেদা জিয়ার সময় নাই… এতো কান্নাকাটি করার কী দরকার। তাই এবার আমরাও বলতে চাই, রাজনৈতিকভাবে আপনারও সময় হয়ে গেছে। দয়া করে মানে মানে কেটে পড়ুন। না হলে জনগণ আপনাকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাবে।’

রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের উদ্যোগে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে ও শিক্ষক-কর্মচারীর হয়রানি-নির্যাতনের প্রতিবাদে’ এই মহাসম্মেলন হয়। এতে সারাদেশ থেকে সহস্রাধিক শিক্ষক-কর্মচারী নেতা অংশ নেন।

আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বেগম খালেদা জিয়ার অঙ্গীকার শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানান মির্জা ফখরুল। একইসঙ্গে শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করাসহ তাদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন ও কারাগারে প্রেরণের ঘটনার সমালোচনাও করেন তিনি।

শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে ও শিক্ষক সমিতির মহাসচিব জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুগিস উদ্দিন মাহমুদসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d