৪৫ তলা ভবনে গৃহহীনদের বাস, বিশ্বের সর্বোচ্চ বস্তি সম্পর্কে জানলে অবাক হবেন
৪৫ তলা গগনচুম্বী অট্টালিকা। সেখানে হাজার হাজার গৃহহীনদের বাস। যার জেরে বিশ্বের সর্বোচ্চ বস্তির খেতাব পেয়েছে এই বহুতল। বিশ্বের কোন প্রান্তে রয়েছে এহেন অদ্ভুত বাড়ি?
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলার ‘দ্য টাওয়ার অফ ডেভিড’। ৪৫টি তলার এই গগনচুম্বী অট্টালিকার ৫টি ফ্লোর জুড়ে রয়েছে বিলাশ বহুল হোটেল। আর বাকি তলগুলিতে থাকেন তিন হাজার মানুষ। যাদের থাকার আর কোনও জায়গা নেই। ১৯৯০-তে এই বহুতলের নির্মাণকাজ শুরু হয়। কিন্তু তিন বছরের মধ্যেই অর্থাৎ ১৯৯৩-তে হঠাৎ করেই এর বিনিয়োগকারী মারা যান। এর পর বহুতলটির তৈরির দায়িত্বভার গ্রহণ করে সরকার। কিন্তু তার পরও এর নির্মাণ কাজ শেষ করা যায়নি।
‘দ্য টাওয়ার অফ ডেভিড’-র মধ্যে রয়েছে ছ’টি বিল্ডিং। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ার জন্য এতে বেশ কিছু সুবিধা চালু করা যায়নি। এর মধ্যে রয়েছে লিফট, বিদ্যুৎ ও পানির পরিষেবা। এছাড়া বিল্ডিংটির অধিকাংশ ব্যালকনিতে নেই রেলিং, লাগানো হয়নি জানলা। বেশ কিছু ঘরের মধ্যে নেই দেওয়ালও। ১৯৯৮-তে বিল্ডিংটিকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুগো চাভেজ। সহায় সম্বলহীনদের সেখানে থাকার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। এর পরই গৃহহীনরা ‘দ্য টাওয়ার অফ ডেভিড’-এ ভিড় জমাতে শুরু করেন। ২০০৭-র মধ্যে দেশের তৃতীয় উচ্চতম এই বহুতলটি একেবারে বস্তিতে পরিণত হয়।
পরবর্তীকালে ওই গগনচুম্বী অট্টালিকায় বেশ কিছু সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেন সেখানকার বাসিন্দারা। অন্তত ৫০টি ঘরে আনা হয় বিদ্যুৎ। ২২ তলা পর্যন্ত চালু করা হয় পানির পরিষেবা। এছাড়া সেখানে দোকান-বাজারও তৈরি করেন বাসিন্দারা। বসান ইলেকট্রনিক গেট। মোতায়েন করেন নিরাপত্তা রক্ষী। ২০১৪-য় দ্য টাওয়ার অফ ডেভিড থেকে বস্তিবাসীদের সরিয়ে দেয় ভেনেজুয়েলা সরকার। প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অন্য একটি বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করা হয় তাদের। ওই বাড়িটিও তৈরি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
বিশ্বের অদ্ভূত বাড়ির মধ্যে অন্যতম উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং-র রিইউগইয়ং নামের একটি হোটেল। ১৯৮৭-তে এর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও আজ তা শেষ হয়নি। ফলে কেউ সেখানে থাকেন না। হোটেলটিতে বর্তমানে লাগানো রয়েছে একটি বিরাট স্ক্রিন। সেখানে সরকারি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়।