Science & Tech

যুক্তরাষ্ট্রের অটোমোবাইল শিল্পের জন্য ‘বড় হুমকি’ চীনের তৈরি ছোট্ট এই বৈদ্যুতিক গাড়ি

গেল বছর এটি বাজারে আনে চীনের গাড়ি-নির্মাতা বিওয়াইডি। প্রায় ১২ হাজার ডলারে গাড়িটি চীনে বিক্রি করা হচ্ছে। সিগাল নামের গাড়িটি খুবই ভালো চলে, আর এমন নিপুণতার সাথে বানানো হয়েছে – যার ফলে এটি তিনগুণ বেশি দামের যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ির সাথে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম। 

সীগালের স্বল্পপাল্লার সংস্করণও আছে, যার দাম ১০ হাজার ডলারের কম।

কম দামের আর ছোট্ট আকারের বৈদ্যুতিক গাড়িটি (ইভি) মারাত্মক দর্শন কিছু নয়। তবু এর ভয়েই থরহরি কম্পমান আমেরিকার গাড়ি নির্মাতা ও রাজনীতিবিদরা। 

গেল বছর এটি বাজারে আনে চীনের গাড়ি-নির্মাতা বিওয়াইডি। প্রায় ১২ হাজার ডলারে গাড়িটি চীনে বিক্রি করা হচ্ছে। সিগাল নামের গাড়িটি খুবই ভালো চলে, আর এমন নিপুণতার সাথে বানানো হয়েছে – যার ফলে এটি তিনগুণ বেশি দামের যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ির সাথে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম। 

সীগালের স্বল্পপাল্লার সংস্করণও আছে, যার দাম ১০ হাজার ডলারের কম। 

চীনে তৈরি ইভির ওপর নতুন করে শুল্ক বসাতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। এই শুল্কের কারণে আপাতত আমেরিকার বাজারে কম দামে আসতে পারবে না সীগাল। আমদানি করা হলে, শুল্কের কারণে স্বল্পপাল্লার সংস্করণের দামই পড়বে ১২ হাজার ডলার। 

তবে চীনের এই নতুন ইভি বৈশ্বিক অটোমোবাইল শিল্পকে এমন নাড়া দিতে পারে যেমনটা জাপানের গাড়ি নির্মাতাদের রপ্তানি বাজারে আসা বা ১৯৭০ এর দশকের তেল সংকটের পরে আর দেখা যায়নি। 

‘বিওয়াইডি’র পূর্ণ রূপ হচ্ছে ‘বিল্ড ইওর ড্রিম’। কিন্তু তাঁদের নতুন এই সৃষ্টি আমেরিকার অটোমোবাইল শিল্পের জন্য এক দুঃস্বপ্ন হতে পারে।  

যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার অটো-ফোরকাস্ট সলিউশন্স সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট স্যাম ফিয়োরনি বলেন, “প্রতিযোগী হিসেবে যেসব প্রতিষ্ঠান তাদেরকে (বিওয়াইডি) খাটো করে দেখবে, এই গাড়ি বাজারে আসলে তারা সবাই হারিয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিওয়াইডি আসবেই। তবে কখন আসবে সেটাই হচ্ছে মূল প্রশ্ন।” 

চীনা ইভিগুলোকে এরমধ্যেই গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখতে শুরু করেছেন মার্কিন রাজনীতিবিদ ও গাড়ি উৎপাদনকারীরা। আগামীকাল মঙ্গলবারই চীন থেকে আমদানি করা বৈদ্যুতিক যানের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দিতে পারে বাইডেন প্রশাসন। চীন থেকে করা এসব আমদানি যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থান ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি এমনটা উল্লেখ করে এই ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তুতকারকদের একটি প্রধান জোট – দ্য অ্যালায়েন্স ফর আমেরিকান ম্যানুফ্যাকচারিং তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, ভর্তুকির সুবিধা নিয়ে উৎপাদিত চীনা ইভির (যুক্তরাষ্ট্রের) বাজারে প্রবেশের ফলে “যুক্তরাষ্ট্রের অটোমোবাইল খাতের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার মতো ঘটনা হতে পারে।”

যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক চলতি বছরের শুরুতে মন্তব্য করেন, কোনোপ্রকার বাণিজ্য বাধা ছাড়া চীনের ইভিগুলো এত ভালো যে– তারা বিশ্বের যেকোনো (গাড়ি উৎপাদনকারী) কোম্পানিকে পথে নামাতে পারে।”

অনেক দেশের সরকারই এখন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জনগণকে জ্বালানি তেল-চালিত গাড়ির বদলে ইভি ব্যবহারে উৎসাহ দিচ্ছে। ফলে এই বাজার প্রতিনিয়ত বড় হচ্ছে।  চীনের বাইরে তাদের উৎপাদিত বৈদ্যুতিক গাড়িগুলোর দাম কিছুটা বেশি। এইক্ষেত্রে উচ্চ আয়ের ক্রেতাদেরই লক্ষ্যে রাখা হয়। তবে সাধারণ ভোক্তাদের জন্যও বিকল্প কম দামের গাড়ি আছে চীনা ব্র্যান্ডগুলোর। 

চীন থেকে একটি সিগাল গাড়ি আমদানির পর তা যুক্তরাষ্ট্রে সংযোজন করেছে ডেট্রয়েটের একটি প্রতিষ্ঠান কেয়ারসফট গ্লোবাল। কোম্পানির প্রেসিডেন্ট টেরি ওয়চস্কি বলেন, “এই গাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের অটো শিল্পের জন্য এক স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, কম দামের ইভি উৎপাদনে চীনের চেয়ে তারা কয়েক বছর পেছনে রয়েছে।”

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button