সংবিধান সংশোধনী বিল পাস: পার্লামেন্টের ওপর আদালতের ‘হস্তক্ষেপ’ বন্ধ করল পাকিস্তান
পাকিস্তান সরকার রোববার দেশটির পার্লামেন্টে সংবিধান সংশোধনীর একটি প্যাকেজ পাস করেছে। ভোটাভুটিতে খুব কম ব্যবধানে এই সংশোধনী পাস হয়। সরকার বলছে, এই সংশোধনী দেশটির আদালতকে পার্লামেন্টের ওপর ‘হস্তক্ষেপ’ করে– এমন রায় দেওয়া থেকে বিরত রাখবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শে দেশটির সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী বিলে সোমবার স্বাক্ষর করেছেন রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি।
সংশোধনীতে বলা হয়েছে, এখন থেকে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতিকে সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হবে এবং তাঁর মেয়াদ তিন বছর নির্ধারিত থাকবে। এ ছাড়া নতুন একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠিত হবে। গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন হয়। নির্বাচনের পর থেকে সরকার ও দেশটির শীর্ষ আদালতের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে দেখা যায়।
সংশোধনী পাসের ক্ষেত্রে সরকার কয়েকটি ছোট ধর্মীয় গোষ্ঠীর সমর্থন পায়। সংশোধনী পাসের আগের দিন গত শনিবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ খাজা বলেছিলেন, এর লক্ষ্য হলো পার্লামেন্টের ওপর হস্তক্ষেপমূলক বিচারিক রায় বন্ধ করা। সবাই একমত যে, আমরা পার্লামেন্টের কর্তৃত্বের বিষয়ে আপস করব না– বলেন তিনি।
রোববার মধ্যরাতে শুরু হওয়া অধিবেশনে উত্থাপন করা হয় বহুল আলোচিত বিলটি। স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৩৬ মিনিটে শুরু হওয়া অধিবেশনে তুমুল তর্কবিতর্কের পর অবশেষে সোমবার ভোর ৫টায় পাস হয় ২৬তম সংবিধান সংশোধনী বিল। শাহবাজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজ (পিএমএলএন) দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান পিপলস পার্টিসহ (পিপিপি) কয়েকটি দলের সমর্থনে পার্লামেন্টে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। পার্লামেন্টে সংশোধনী পাসের ক্ষেত্রে ২২৪ ভোট দরকার ছিল। ভোট পড়ে ২২৫টি। ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের কিছু বিদ্রোহী সদস্য এই সংশোধনীর পক্ষে ভোট দেন।
পার্লামেন্টের বৃহত্তম ব্লক পিটিআই এই সংশোধনী প্যাকেজ সমর্থনে অস্বীকৃতি জানায়। বিশ্লেষকরা বলেন, যদিও সংশোধনী নমনীয় করার পাশাপাশি একটি ঐকমত্য চুক্তির প্রস্তাব পিটিআইকে দেওয়া হয়েছিল।