USA

১৮শ’ সালে এই ঘটনা ঘটেছিল ॥ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ॥ বাকি আর মাত্র ১২ দিন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর বাকি মাত্র ১২ দিন।  এই নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের মধ্যে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সব আয়োজন চলছে সে লক্ষ্যেই। তবে এমন যদি হয়, ড্র হয় এই নির্বাচন, তাহলে আসলে কী হবে?
এ প্রশ্নের উত্তরের আগে জানা দরকার, যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা মূলত ভোট দিয়ে ইলেকটোরাল ভোটার নির্বাচন করেন। চূড়ান্তভাবে প্রেসিডেন্ট নির্ধারণ করে থাকেন তারাই। মোট ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ৫৩৮। ২৭০ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেতে লড়াই করবেন ট্রাম্প ও হ্যারিস। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীই যদি ২৬৯টি করে ইলেক্টোরাল ভোট পান, তাহলে এই নির্বাচনের মোড় ঘুরে যাবে অন্য পথে। এটা এমনকি তৃতীয় কোনো প্রার্থীর কারণেও ঘটতে পারে।

অর্থাৎ কোনো পক্ষই নির্বাচনে প্রয়োজনীয় ২৭০ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট না পেলেই সংকট। সে ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্ধারণের ক্ষমতা চলে যাবে মার্কিন কংগ্রেসের হাতে। এ ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের মধ্য থেকে প্রত্যেক অঙ্গরাজ্যের একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি গঠন হবে। এই সদস্যরা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন। ফলে ফলে ৫০টি অঙ্গরাজ্যের হিসাবে সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন হবে ২৬টি ভোট। আর ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন সিনেটররা। অর্থাৎ কংগ্রেসের দুই কক্ষ থেকে ভোটের মাধ্যমে আসবেন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট।
আমেরিকানরা আসলে যারা প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট হতে চান তাদের সরাসরি ভোট দেন না। এর পরিবর্তে, তারা ‘নির্বাচকদের’ ভোট দেন। ইলেকটোরাল কলেজের সদস্য নির্বাচিত করার পর এই সদস্যরাই পরবর্তী ধাপ এগিয়ে নেন। সাধারণভাবে ভোট গণনা হওয়ার পর নভেম্বরেই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তবে এটি আসলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নয়। আনুষ্ঠানিক ভোট হবে ডিসেম্বরে। এ বছর নির্বাচকেরা ১৭ ডিসেম্বর ভোট দেবেন এবং তারপর সেই ভোটগুলো ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসে গণনা করা হয়। ওই সময়ই প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত হন।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে, কংগ্রেসে প্রথমবার হওয়া নির্বাচনও যদি ড্র হয়; অর্থাৎ দুই প্রার্থীই যদি ২৫টি ভোট পান তখন কী হবে। প্রতিবেদন বলছে, হ্যাঁ, এমন ঘটনাও ঘটতে পারে। এর সমাধান হলো, একজন প্রার্থী সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়া পর্যন্ত ভোটের পুনরাবৃত্তি হয়। কিন্তু নতুন মেয়াদ শুরুর নির্ধারিত দিন (২০ জানুয়ারি) পর্যন্ত যদি কেউ প্রেসিডেন্ট পদে বিজয়ী না হন, তাহলে সিনেটের ভোটে নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ গ্রহণ করবেন। এ ছাড়া ভাইস প্রেসিডেন্ট পদেও একই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

এ পরিস্থিতিতে হাউস স্পিকার দায়িত্ব পালন করবেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত। ১৮০০ সালে আমেরিকার চতুর্থ নির্বাচনে ঘটেছিল এমন ড্রয়ের ঘটনা। ওই সময় ভোটের ফলাফল এতটাই সমস্যাযুক্ত ছিল যে, এটি ভোটের নিয়মই পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছিল। তখন কেউ ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে লড়েননি। ওই নির্বাচনে যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিকান দলের টমাস জেফারসন এবং অ্যারন বুর সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিলেন।

জনসাধারণের মতো কংগ্রেসও ওই নির্বাচনে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে, তাঁরা প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাকে চায়। পরবর্তী নির্বাচনের জন্য কংগ্রেস ১২তম সংশোধনী আনে, যাতে ভোটারদের প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্য দ্বিতীয় ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button