USA

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: পরস্পরকে আক্রমণ কমলা ও ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে সমাপনী বক্তব্য দিয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। শেষ ভাষণেও পরস্পরকে আক্রমণ করতে ভোলেননি তারা। ট্রাম্পকে ‘বিশৃঙ্খলাকারী’ আখ্যা দিয়ে কমলা জনতার উদ্দেশে বলেন, সম্ভবত আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোট এটি। স্বাধীনতা ও বিশৃঙ্খলার মধ্য থেকে একটিকে বেছে নিন। অন্যদিকে ট্রাম্প বলেন, কমলা আমাদের লজ্জিত করেছে। তার মধ্যে নেতৃত্বের যোগ্যতা বলতে কিছুই নেই। খবর বিবিসি, এএফপি, রয়টার্সসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের।

ক্যাপিটল হিলের সমাবেশে ক্ষমতাসীন সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস স্বীকার করেন, যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি এখন বড় সমস্যা। তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, মানুষের খরচ কমানো, যা মহামারির আগেও বেড়েছিল এবং এখনো অনেক বেশি। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সংকটটি আমিও বুঝতে পারি।’

ট্রাম্প ‘লাগামহীন ক্ষমতা চান’ দাবি করে কমলা হ্যারিস বলেন, নির্বাচিত হলে তাঁর নিজের চ্যালেঞ্জগুলো হবে ভিন্ন। এ সময় নারীদের গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন তিনি। কমলার ভাষায়, ‘নিজের শরীরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মৌলিক স্বাধীনতা প্রত্যেক মানুষের থাকা প্রয়োজন।’

পেনসিলভানিয়ার সমাবেশে ট্রাম্প তাঁর ভাষণ শুরু করেন সরাসরি একচোখা প্রশ্ন দিয়ে। ভোটারদের তিনি প্রশ্ন করেন, ‘চার বছর আগের তুলনায় আপনারা কি এখন ভালো আছেন?’ এরপর তিনি মূল্যস্ফীতি কমানো এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ বন্ধের মতো নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলোর পুনরাবৃত্তি করেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আপনাদের পরিবারকে নিরাপদ রাখব। ধর্ম রক্ষা করব। চাকরি, সম্পদ ও কলকারখানা ফিরিয়ে আনব। পুয়ের্তোরিকোর জনগণ সন্তুষ্ট থাকবে। পুরো হিস্পানিক, ল্যাটিনো সম্প্রদায় কৃতজ্ঞ থাকবে।’

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য পেনসিলভানিয়ায় পুয়ের্তোরিকান বংশোদ্ভূতসহ হিস্পানিক ভোটার অনেক। এই অঙ্গরাজ্যে জেতার জন্য তাঁদের ভোট দুই প্রার্থীর জন্যই জরুরি।

গত রোববার নিউইয়র্কে ট্রাম্পের এক প্রচার সমাবেশে কৌতুক অভিনেতা টনি হিঞ্চক্লিফ পুয়ের্তোরিকোকে রগড় করে ‘আবর্জনার দ্বীপ’ বলায় দ্বীপটির অধিবাসী এবং সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হয়ে আসা মানুষ খুব খেপে গেছে। ক্যারিবীয় দ্বীপ পুয়ের্তোরিকো

যুক্তরাষ্ট্রের অধীন একটি দ্বীপ ভূখণ্ড। সেখানকার বাসিন্দারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিতে না পারলেও অভিবাসী পুয়ের্তোরিকানরা পারে। হিঞ্চক্লিফের ব্যঙ্গ করার বিষয়টি হিস্পানিক ভোটের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিশ্চিত না হলেও দৃশ্যত বিষয়টি সামলাতে তৎপর হয়েছেন ট্রাম্প। তার দল ইতিমধ্যে বলেছে, হিঞ্চক্লিফের কথাটি ট্রাম্পের বা তাঁর দলের আদর্শের প্রতিফলন করে না।

ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপি জানিয়েছে, নির্বাচনী প্রচারের শেষ মুহূর্তে মূলত দোদুল্যমান সাত অঙ্গরাজ্যের ওপর জোর দিচ্ছেন কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সাত অঙ্গরাজ্য হচ্ছে অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিন।

ওয়াশিংটন থেকে নর্থ ক্যারোলাইনা ও পেনসিলভানিয়া সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে কমলা হ্যারিসের। এর মধ্যে নর্থ ক্যারোলাইনায় বারাক ওবামার পর আর কোনো ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জয় পাননি। ফলে এবার অঙ্গরাজ্যটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া ডেমোক্র্যাট শিবির। গতকাল নর্থ ক্যারোলাইনা যাওয়ার প্রাক্কালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কমলা হ্যারিস বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি সব আমেরিকানের প্রতিনিধিত্ব করবেন। কে তাঁকে ভোট দিলেন, আর কে দিলেন না, তা কোনো বিবেচ্য হবে না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button