ক্ষোভে ফুঁসছে ভারত, ‘ইয়ুম-ই-তাশাকুর’: যুদ্ধজয়ের উল্লাস পাকিস্তানে

ক্ষোভে আর রাগে যখন ফুঁসছে ভারত, ঠিক তার উল্টো চিত্র প্রতিবেশী পাকিস্তানে।
রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে করাচি, লাহোর, পেশোয়ার হয়ে আজাদ কাশ্মীর পর্যন্ত—দেশজুড়ে যেন উৎসবের আমেজ।
ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর জবাবে চালানো পাকিস্তানের ‘অপারেশন বুনিয়ানুন মারসুস’ অভিযানে সামরিক সাফল্যের দাবি ঘিরেই এমন উদযাপন।
গত শনিবার সকালে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে পাকিস্তান চালায় ‘অপারেশন বুনিয়ানুন মারসুস’।
এই অভিযানে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লক্ষ্যবস্তু করা হয় ভারতের একাধিক সামরিক স্থাপনা।
পাকিস্তান দাবি করেছে, এই অভিযানে ধ্বংস হয়েছে ভারতের অত্যাধুনিক ও ব্যয়বহুল এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যার আনুমানিক মূল্য ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এই অভিযানের কিছুক্ষণ পরেই ভারতও পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায়।
তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং আরও বড় সংঘর্ষ এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই দেশ যুদ্ধবিরোতিতে সম্মত হয়।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তান কূটনৈতিক ও সামরিক দুই ক্ষেত্রেই এগিয়ে থেকেছে এই পর্বে।
এই ‘সফলতা’ উদযাপনেই পাকিস্তানে ঘোষণা করা হয় ‘ইয়ুম-ই-তাশাকুর’—উর্দু শব্দটির বাংলা অর্থ ‘কৃতজ্ঞতার দিন’।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ সরাসরি এই কর্মসূচির ডাক দেন। দেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই এই বিশেষ দিবস পালন করা হচ্ছে বলে জানায় সরকারি সূত্র।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এবং পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে এই তথ্য।
‘ইয়ুম-ই-তাশাকুর’-এর দিন লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।
বিভিন্ন শহরের রাজপথ প্রকম্পিত হয় সশস্ত্র বাহিনীর সমর্থনে দেওয়া স্লোগানে। জনতার মাঝে বিতরণ করা হয় মিষ্টান্ন, আয়োজন করা হয় র্যালি ও সমাবেশের।
গোটা পাকিস্তান জুড়েই এই দিনটি যেন পরিণত হয় এক জাতীয় উল্লাসে।
উল্লেখ্য, এর আগে গেল মঙ্গলবার ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান পরিচালনা করে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে।
দিল্লির দাবি, এই অভিযানে ধ্বংস করা হয় সন্ত্রাসীদের একাধিক ঘাঁটি। তবে ইসলামাবাদের পাল্টা অভিযোগ, এই হামলায় নিহত হয়েছেন কেবলমাত্র সাধারণ নাগরিকরা।
এই ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান চালায় ‘অপারেশন বুনিয়ানুন মারসুস’।
নামটির অর্থ ‘সীসার দেয়াল’—শক্ত প্রতিরক্ষার প্রতীক। অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতের সামরিক জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং কাশ্মীর সংক্রান্ত উত্তেজনায় ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা।