Bangladesh

গুণগত ব্যয় নিশ্চিত করতে সচিবদের নির্দেশ: অপরিকল্পিত ঋণ ও ব্যয় বৃদ্ধির শঙ্কা

মন্ত্রণালয়গুলো সুষ্ঠুভাবে বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারছে না। অর্থবছরের শেষদিকে টাকা খরচ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পায়। অথচ বছরের শুরুতে ধীরগতিতে অর্থ ব্যয় হয়। অপরদিকে রাজস্ব আহরণ ও অর্থ ব্যয়-এ দুয়ের মধ্যে কোনো সমন্বয় থাকছে না। এতে সরকারের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে একধরনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হচ্ছে, যা মোকাবিলা করতে গিয়ে অপরিকল্পিত ঋণ গ্রহণ করতে হচ্ছে সরকারকে। এ ধরনের ঋণজনিত ব্যয়ের দায়ভারও বহন করতে হয়, যা আর্থিক শৃঙ্খলা নষ্ট করে।

এ পরিস্থিতি এড়াতে অর্থবছরের শুরুতে বাজেট বাস্তবায়নে প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এক মাসের মধ্যে পরিকল্পনার প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি অর্থ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে সব সচিবকে। ওই চিঠি দেওয়া হয় প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকেও। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২৫ শতাংশের সমান জাতীয় বাজেট হওয়ার কথা। বিশ্বের অনেক দেশ এখনো জিডিপির ৩০ শতাংশের সমান বাজেট দিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) মোট জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ সমান বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। যার আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের চেয়েও কম আকারে বাজেট ঘোষণার পরও ব্যয়ের সক্ষমতা নিয়ে প্রতিবছরই প্রশ্ন উঠছে। আর সেই প্রশ্ন থেকেই অর্থ বিভাগ সম্প্রতি সব সচিবকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অর্থ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ বুধবার যুগান্তরকে জানান, আমাদের ব্যয়ের সক্ষমতা নেই। এক্ষেত্রে দুর্বলতা আছে এখনো। সরকারের নিয়মনীতি পালন করে অর্থ ব্যয় করা কঠিন কাজ। প্রতিবছরই জিডিপি ও বাজেটের আকার বাড়ছে। সেভাবে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে অর্থ ব্যয়ের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের দক্ষতা ও সংখ্যা বাড়ছে না। জিডিপির অনুপাতে যে হারে বাজেট হওয়া দরকার, সেটি হলেও অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে আরও সমস্যা সৃষ্টি হতো। আমরা রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখি। সমান সমস্যা অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রেও।

অর্থ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, বেতনভাতা ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে অর্থ ব্যয় কম হয়। বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, মেরামত সংরক্ষণ, নির্মাণ ও পূর্তকাজ, মালামাল ক্রয় ও সংগ্রহের মতো কাজ অর্থবছরের শেষদিকে করা হয়। ফলে সরকারি ব্যয়ের গুণতম মান ঠিক রাখা যায় না। যে কারণে বছর শেষে অপরিকল্পিত ঋণের দায় গ্রহণ করতে হয়।

যেখানে মন্ত্রণালয়গুলোকে অর্থ ব্যয়ের জন্য একগুচ্ছ দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, চাকরিজীবীদের বেতনভাতা প্রতি তিন মাস অন্তর ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা তৈরি করতে হবে। এছাড়া প্রত্যেক মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে সব ধরনের ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করতে হবে। আর অর্থবছরের শুরুতে মেরামত ও সংরক্ষণ কাজ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া এমনভাবে শুরু করতে হবে যেন প্রত্যেক কোয়ার্টারে কাজের বিল ভারসাম্যপূর্ণভাবে পরিশোধ করা যায়; শেষ কোয়ার্টারে এসে বিল পরিশোধের চাপ সৃষ্টি না হয়। এছাড়া ইআরডি সবিচকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের সম্ভাব্য অঙ্ক তুলে ধরে একটি পরিকল্পনা প্রণয়নের। এছাড়া রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে বলা হয়, প্রতি তিন মাসের জন্য রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া এনবিআর কর, এনবিআর-বহিভর্‚ত কর, ও কর ব্যতীত প্রাপ্তির ক্ষেত্রে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

অর্থ বিভাগ মনে করে, বাজেট নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়নের জন্য আগাম পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। সেটি করতে পারলে অপরিকল্পিতভাবে সরকারের ঋণ গ্রহণ এড়ানো সম্ভব হবে। পাশাপাশি উলে­খযোগ্য পরিমাণে ঋণজনিত ব্যয় হ্রাস করা যাবে।

অর্থ বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়, চলতি বাজেটে কিছু কার্যক্রম ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া বিগত তিন অর্থবছরের বাজেটে কিছু কার্যক্রম এখনো বাস্তবায়নাধীন। সব কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থবছরের শুরুতে

সুনির্দিষ্ট ও সময়নিষ্ঠ পরিকল্পনা প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের গ্রহণ করা প্রয়োজন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto