Science & Tech

মহাকাশে গ্যাস স্টেশন তৈরি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান অরবিট ফ্যাব

মহাকাশে এ যাবত ১৫ হাজারেরও বেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। তবে বর্তমানে এর মধ্যে মাত্র অর্ধেকের মতো সচল আছে। বেশিরভাগেরই জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার পরে অকেজো হয়ে কক্ষপথে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিংবা বায়ুমণ্ডলে পুড়ে গেছে।

মহাকাশে থাকা স্যাটেলাইটের (কৃত্রিম উপগ্রহ) জন্য জ্বালানির স্টেশন তৈরি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্রের অরবিট ফ্যাব নামক একটি প্রতিষ্ঠান।

মহাকাশে এ যাবত ১৫ হাজারেরও বেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। তবে বর্তমানে এর মধ্যে মাত্র অর্ধেকের মতো সচল আছে। বেশিরভাগেরই জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার পরে অকেজো হয়ে কক্ষপথে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিংবা বায়ুমণ্ডলে পুড়ে গেছে।

অকেজো স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর চারপাশে ধ্বংসস্তূপের একটি আস্তরণ তৈরি করেছে। এই ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করাও বেশ জটিল ও ব্যয়বহুল। তবে, এই সমস্যা মোকাবিলার একটি উপায় হলো ভবিষ্যতে আরও আবর্জনা উৎপাদন না করা।

সেজন্য স্যাটেলাইটগুলোর জ্বালানি শেষ হয়ে গেলে সেগুলো পরিত্যক্ত হিসেবে ঘোষণা না করে রিফুয়েলিং করতে হবে। সে ব্যবস্থাই করতে করতে চায় অরবিট ফ্যাব।

অরবিট ফ্যাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড্যানিয়েল ফেবার বলেন, ‘এই মুহূর্তে আপনি কক্ষপথে একটি স্যাটেলাইটে জ্বালানি সরবরাহ করতে পারছেন না।’

‘যখন স্যাটেলাইটগুলোর জ্বালানি ফুরিয়ে যায়, সেগুলোকে কক্ষপথে সঠিক জায়গায় রাখা যায় না। সেগুলো বিপজ্জনক ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়, খুব উচ্চ বেগে চারপাশে ভেসে বেড়ায় এবং সংঘর্ষের ঝুঁকি তৈরি করে’, যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানির অভাবে মহাকাশ অভিযানের পরিকল্পনা এমন ভাবে করতে হয়, যাতে করে যতটা সম্ভব কম চলাফেরা করা লাগে। অর্থাৎ, কক্ষপথে কোনো ধ্বংসাবশেষ থেকে পরিত্রাণ পেতে আমরা কোনো উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে পারি না। আমরা কোনো মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারি না। কিছু আপগ্রেড করতে পারি না। কোনো কিছু নষ্ট হলে আমরা সেটি পরিদর্শন করতে পারি না। এমন অনেক কিছু আছে যা আমরা করতে পারি না এবং আমরা খুব সীমাবদ্ধভাবে কাজ করি। এটারই সমাধান আমরা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

এভাবেই মহাকাশে রিফুয়েলিং করা হবে স্যাটেলাইটের। ছবি: অরবিট ফ্যাব

এভাবেই মহাকাশে রিফুয়েলিং করা হবে স্যাটেলাইটের।

২০০৭ সালে নাসা কক্ষপথের স্যাটেলাইটে জ্বালানি ও সার্ভিসিং করার একটি ধারণা দেয়। পরবর্তীতে তারা দারপা এবং বোয়িংয়ের সহযোগিতায় অরবিটাল এক্সপ্রেস চালু করে। মিশনটিতে জ্বালানি বিনিময়ের উদ্দেশ্যে তৈরি দুটি স্যাটেলাইটের মধ্যে জ্বালানি বিনিময় করা হয়।

বর্তমানে, মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা তাদের পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট ল্যান্ডস্যাট ৭ এ রিফুয়েলিংয়ের লক্ষ্যে ওএসএএম-১ পেছনে কাজ করছে। ২০২৬ সালে এই অভিযান শুরু হতে পারে।

তবে এ ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে, এই স্যাটেলাইট রিফুয়েলিং-উপযোগী নয়। যার ফলে নাসা এর রূপান্তর করে নেবে। এতে মোট খরচ হবে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার।

তবে অরবিট ফ্যাবের পরিকল্পনা ভিন্ন। পুরনো স্যাটেলাইটের বদলে তারা ভবিষ্যতে মহাকাশে যে স্যাটেলাইটগুলো পাঠানো হবে, সেগুলোর জন্য কাজ করবে।

নতুন স্যাটেলাইটগুলোকে এমন ভাবে ডিজাইন করা হবে যাতে সেগুলো রিফুয়েলিং করা যায়। যার ফলে এতে খরচ অনেক কমে আসবে।

এখন পর্যন্ত কক্ষপথে স্যাটেলাইটে রিফুয়েলিংয়ের জন্য বাণিজ্যিক কোনো জ্বালানি বন্দর নেই।

অরবিট ফ্যাবের বিজ্ঞাপন থেকে জানা গেছে, তারা কক্ষপথে স্যাটেলাইটে জ্বালানি সরবরাহের জন্য কমপক্ষে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চার্জ রাখবে।

অরবিট ফ্যাবের প্রথম বেসরকারি গ্রাহক হবে অ্যাস্ট্রোস্কেল। এটি একটি জাপানি স্যাটেলাইট সার্ভিসিং কোম্পানি। এই প্রতিষ্ঠান প্রথম রিফুয়েলিং-উপযোগী স্যাটেলাইট নির্মাণ করেছে। ২০২৬ সালে এটি কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করা যাবে।

প্রাথমিকভাবে, অরবিট ফ্যাব অ্যাস্ট্রোস্কেলের মতো সংস্থাগুলোকে জ্বালানি সরবরাহ করতে চায়। যারা কক্ষপথে স্যাটেলাইট পরিদর্শন, মেরামত, আপগ্রেড কিংবা ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহের মতো কাজগুলো করে থাকে।

ফেবার জানান, শুরুতে তারা কক্ষপথে জ্বালানি সরবরাহ প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করবে। পরবর্তী উদ্যোগ হবে সেখানে জ্বালানি উৎপাদন করা। ১০ বা ১৫ বছরের মধ্যে তারা কক্ষপথে জ্বালানি পরিশোধনাগার তৈরি করতে চায়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto