Bangladesh

রিজার্ভের পতন ঠেকাতে ডলার ধারের উদ্যোগ

বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বা রিজার্ভের পতন ঠেকাতে বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর কাছ থেকে ডলার ধার করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সৌদি আরব, ভারত, চীনসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ উদ্যোগ রিজার্ভের আপৎকালীন সংকট কাটাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এক দেশের আরেক দেশে ডলার জমা রাখা মানি মার্কেটে একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। এটা বিশ্বের সব দেশই প্রয়োজনে করে থাকে।

মহামারি কভিডের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে বিশ্বব্যাপী। বেড়েছে মূল্যস্ফীতি, কমেছে চাহিদা। যার প্রভাব পড়েছে দেশের রপ্তানি আয়ে। ফলে কয়েক মাস ধরে বৈদেশিক মুদ্রার বড় উৎস রপ্তানি থেকে কাক্সিক্ষত আয় আসছে না। ডলারের দরের ব্যবধানে হুন্ডির কবলে কমেছে রেমিট্যান্স। হিসাব বলছে, গত অক্টোবরের রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ কমেছে। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রেমিট্যান্স কমেছে গড়ে ৫ শতাংশ। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স মিলে মাসে আয় হচ্ছে ৪০০ কোটি ডলারের মতো। তবে আমদানিতে ব্যয় করতে হচ্ছে প্রায় ৫৫০ কোটি ডলার। প্রতি মাসে রিজার্ভ থেকে ১০০ কোটি ডলার খরচ করতে হচ্ছে। ফলে ১ নভেম্বরের হিসাবে বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ নেমে এসেছে ২ হাজার ৬৬ কোটি ডলারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালের নভেম্বরেও রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৩৭৮ কোটি ডলার; যা চলতি বছরের নভেম্বরে নেমে এসেছে ২ হাজার ৬৬ কোটিতে। এক বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। এমন অবস্থায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে নতুন ডলার যুক্ত করতে প্রয়োজনে ধার করার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এজন্য ভারত, চীন, সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে ২০০ কোটি ডলার পাওয়ার ইঙ্গিতও মিলেছে। যদিও সংকট কাটাতে ২০২১ সালের মে মাসে বৈদেশিক ঋণের চাপে জর্জরিত শ্রীলঙ্কাকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছিল বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক গতকাল বলেন, ‘মানি মার্কেটের রেগুলোর প্র্যাকটিস আমার টাকা আরেকজনের কাছে রাখব, আরেকজনের টাকা আমার কাছে রাখবে। যে যেভাবে ডিপোজিট নিতে পারে। সেটা একটা ঋণও আছে, বিভিন্ন সোর্স থাকে। এটা ডিপেন্ড করে কখন কোথায় কোনটা সস্তা পড়বে। সেগুলোর ওপর ডিপেন্ড করে সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো সব সময়ই বিশ্বের সব ব্যাংক রেট এক্সপ্লোর করে। এটা হবে কি হবে না সেটা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেটা সস্তা মনে করি সেটাই নিতে পারি। আমাদের রিজার্ভ কোথায় আছে। যেমন আমরাই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রিজার্ভ রিপ্লেসমেন্ট করে রেখেছি।’ ব্যাংকাররা বলছেন, বন্ধুপ্রতিম দেশগুলো থেকে বড় বড় কয়েকটি ঋণ পেলে আমাদের আর্থিক হিসাবে যে ঘাটতিটা আছে তার ওপর চাপটা কমে যাবে। রিজার্ভের পতন ঠেকাতে আমদানিতে বড় ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছিল বাংলাদেশ, তাতে কোনো কাজ হয়নি। উল্টো পণ্যের সরবরাহ কমে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতির চাপ বেড়েছে দেশে। এ বিষয়ে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমাদের কয়েক বিলিয়ন ডলার বুস্ট করা প্রয়োজন। সেটা যদি আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে পাওয়া যায় তাহলে ডলারের সরবরাহটা বেড়ে আগামী দিনে আমদানি শিথিল করতে হবে। না করলে অর্থনীতির আউটপুট বন্ধ হয়ে যাবে।’ গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশই সংকট কাটাতে বন্ধু রাষ্ট্রের শরণাপন্ন হয়।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto