অনাস্থা ভোটের মুখে পড়েছেন ইউরোপীয় কমিশন প্রধান উরসুলা

করোনা মহামারির সময় টিকা চুক্তি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের জেরে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উঠেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টে রোমানিয়ার এমপি গিওর্গি পিপেরা এই অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। পার্লামেন্টের স্পিকার রবের্তা মেতসোলা প্রস্তাবটি গ্রহণ করে জানান, আগামী ৭ জুলাই এ নিয়ে আলোচনা হবে এবং ১০ জুলাই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে।
২০২১ সালে করোনা পরিস্থিতিতে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজারের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ টিকা কেনার চুক্তি করেছিলেন উরসুলা। অভিযোগ রয়েছে, এই চুক্তিতে বড় অঙ্কের গোপন লেনদেন হয়েছে এবং ফাইজারের প্রধান নির্বাহী অ্যালবার্ট বোরুলার সঙ্গে টেক্সটবার্তা আদান-প্রদান করেছিলেন উরসুলা। পরে এই বার্তাগুলো মুছে ফেলার অভিযোগও ওঠে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোর্ট অব জাস্টিস বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেয় এবং কমিশনকে তলব করে। তবে কমিশন জানায়, সেই বার্তাগুলো মুছে ফেলা হয়েছে, যা আদালতের অসন্তোষের কারণ হয়।
এমপি পিপেরা বলেন, আদালতের নির্দেশের আলোকে তিনি এই অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, উরসুলা রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন।
বর্তমানে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মোট আসন ৭২০টি। অনাস্থা প্রস্তাব পাস করাতে হলে অন্তত ৩৬১ এমপির সমর্থন প্রয়োজন হবে।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কট্টর ডানপন্থি সদস্যদের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব আনা হয়েছে। তবে এটি পাস হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এমনকি পিপেরিয়ার নিজ রাজনৈতিক জোট ইউরোপীয় কনজারভেটিভস অ্যান্ড রিফর্মিস্টস (ইসিআর) এই প্রস্তাব থেকে নিজেদের বিরত রেখেছে। ইসিআর-এর একজন মুখপাত্র বলেন, “এটি আমাদের দলের কোনো উদ্যোগ নয়।”
এই প্রস্তাব পাস করাতে হলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৭২০ জন সদস্যের মধ্যে কমপক্ষে ৩৬১ জনের ভোট প্রয়োজন—যা অর্জন কঠিন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।