অনিশ্চয়তার মধ্যেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ঘোষণা দিলেন ম্যাক্রন
ফ্রান্সের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর দ্রুতই মিশেল বার্নিয়ের জায়গায় নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। তিনি বলেছেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ১০ মিনিটের ভাষণে ২০২৭ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদে নতুন কাউকে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ম্যাক্রন। পার্লামেন্টে বিরোধী দলের চাপ সত্ত্বেও মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পদে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। স্বল্পসময়ের জন্য হলেও ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় বার্নিয়েকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। বার্নিয়ের পতনে ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থি এবং কট্টর বাম দলগুলোকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মাত্র তিন মাসের মাথায় গত বুধবার পার্লামেন্ট মেম্বারদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন বার্নিয়ে। দেশটির পার্লামেন্টে এমন ঘটনা বিরল।
গত ৬০ বছরের মধ্যে এবারই কোনো প্রধানমন্ত্রী অনাস্থা ভোটে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। ম্যাক্রন এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন। দেশটিতে প্রেসিডেন্টই সংসদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করেন। তবে এ বিষয়ে প্রেসিডেন্টকে পার্লামেন্টে জবাবদিহিতা করতে হয়। তিন মাস আগে বার্নিয়েকে প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচন করেছিলেন ম্যাক্রন নিজেই। তবে এ বছরের আগাম নির্বাচনে ম্যাক্রনের দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোয় ঝুলন্ত পার্লামেন্ট গঠিত হয়েছে। যার ফলে পার্লামেন্টে কিছুটা চাপে রয়েছে প্রেসিডেন্টের দল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ম্যাক্রনের জন্য এমন কাউকে খুঁজে বের করা কঠিন হবেন যিনি অনাস্থা ভোট এড়িয়ে মেয়াদ শেষ করতে পারবেন। দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি এখন বড় তিনটি ব্লকে বিভক্ত। এদের মধ্যে রয়েছে বাম, কেন্দ্র এবং একেবারে উগ্র ডানপন্থিরা। যদি ম্যাক্রনকে তার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীকে স্থায়ী করতে হয় তাহলে পরবর্তী সরকারের জোটে বাম দলের শরিকানা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় পুনরায় অনাস্থা ভোটের মুখে পরতে পারেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। দেশটির জনগণের ইচ্ছার আলোকে যেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীকে পার্লামেন্টে মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ী করা যায় সে প্রচেষ্টাই চালাচ্ছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ক্ষমতায় আসার পর থেকে এবারই প্রথম তীব্র চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ম্যাক্রনের সরকার।